প্রতীকী ছবি।
এসেছিলেন বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে। সেই কর্মসূচি সমাজমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারও হচ্ছিল। সে সময় স্থানীয়দের কালভার্ট তৈরির আর্জির জবাব দিতে গিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করলেন এগরার তৃণমূল বিধায়ক তরুণকুমার মাইতি। তিনি বলে বসেন, সরকার সেতু দেবে, না কি লক্ষ্মীর ভান্ডার দেবে! যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
কেলেঘাই নদী এবং বাগুই খালের বাঁধ ভেঙে পটাশপুর, ভগবানপুর এবং এগরার কিছু অংশে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এগরার দেশবন্ধু, মঞ্জুশ্রী, বিবেকানন্দ, বাসুদেবপুর ও পাণিপারুল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা এখনও জলবন্দি। পাণিপারুলের কুলটিকরি থেকে খাগদা গ্রামীণ সড়ক ডুবে গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। শনিবার কুলটিকরি থেকে খাগদা গ্রামীণ সড়ক ধরে বন্যা পরিদর্শনে এসেছিলেন বিধায়ক।
বিধায়ককে সামনে পেয়ে এলাকাবাসী খাল সংস্কার-সহ রাস্তায় কালভার্ট ও ছোট সেতু তৈরির আর্জি জানান। ওই সময় বিধায়ক তথা কাঁথি সাংগঠনিক তৃণমূলের জেলা সভাপতি তরুণকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আর পোল হবে না। হাজার হাজার পোল রয়েছে। আর কত পোল করবে। সরকারের পয়সা নেই। লক্ষ্মীর ভান্ডার দেবে, না ব্রিজ করবে!’’
জনপ্রতিনিধির মুখে এমন কথা শুনে ক্ষুন্ন স্থানীয়দের অনেকেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছক এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘লক্ষ্মী ভান্ডার আমাদের দরকার নেই। আগে বন্যা নিয়ন্ত্রণে কালভার্ট বানাক সরকার।’’ কটাক্ষ করছে বিজেপিও। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বন্যা থেকে বাঁচার জন্য মানুষ কালভার্ট চাইছেন। আর তৃণমূলের বিধায়ক তাঁদের লক্ষ্মীর ভান্ডারের গল্প শুনিয়ে চুপ করিয়া দিচ্ছেন।’’
তাঁর মন্তব্য প্রসঙ্গে বিধায়ক অবশ্য বলছেন, ‘‘কর্মীদের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় মজার ছলে ওই কথা বলেছিলাম। কেউ ভিডিয়ো তুলে সমাজমাধ্যমে দিয়েছেন। এই মন্তব্য কখনও সরকারের বক্তব্য নয়।’’
বিধায়ক এমন বলছেন কেন? সত্যি কি প্লাবিত এলাকায় কালভার্ট-সেতু বানানোয় গুরুত্ব দেওয়া হবে না? সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের জবাব, ‘‘কোথায় কালভার্ট লাগবে, তার মূল্যায়ন আমরা যাঁরা দফতরে রয়েছি, তাঁরা করব। উনি পরিস্থিতি বুঝে হয়তো ওই মন্তব্য করেছেন। লক্ষ্মীর ভান্ডার এবং কালভার্ট— দুটোই থাকবে।’’