ডাম্পারে পিষ্ট ছাত্রী, আগুন-অবরোধ

ডাম্পারের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। বুধবার সকালে কোলাঘাটের সাগরবাড়ে ওই দুর্ঘটনায় মৃতের নাম মিতা মান্না (১৮)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোলাঘাট শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:২৬
Share:

মিতা মান্না। নিজস্ব চিত্র

ডাম্পারের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। বুধবার সকালে কোলাঘাটের সাগরবাড়ে ওই দুর্ঘটনায় মৃতের নাম মিতা মান্না (১৮)। দুর্ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা ডাম্পারটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। রাস্তার ধারে বালি, স্টোনচিপের মতো নির্মাণ সামগ্রী মজুত রাখার কারণেই এই দুর্ঘটনা বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, সাগরবাড় পঞ্চায়েত এলাকার দক্ষিণ সাগরবাড় গ্রামের বাসিন্দা সৌরভ মান্নার সঙ্গে কিছুদিন আগে বিবাহ হয় খুকুড়দহ আইসিএমএম হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী মিতার। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ি থেকেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মিতা। এদিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ সাগরবাড় থেকে কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গে সাইকেলে শ্বশুরবাড়ির দিকে ফিরছিলেন মিতা। পঞ্চায়েত অফিসের অদূরে বড়দাবাড়ের দিক থেকে দ্রুতগতিতে একটি ডাম্পারকে আসতে দেখে তিনি সাইকেল থেকে নেমে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে পড়েন বলে জানান এক প্রত্যক্ষদর্শী। মিতা যেখানে দাঁড়িয়েছিলেন তার উল্টোদিকে রাস্তার অনেকটা অংশ দখল করে মজুত করা ছিল বালি। ফলে ডাম্পারের চালক রাস্তার ডান দিক দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। রাস্তার ডান দিক চেপে যাওয়ার সময় ডাম্পারের ধাক্কায় মিতা পড়ে যান। ডাম্পারের চাকায় মিতার মাথা ও কোমর থেকে নীচের অংশ আলাদা হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গেই মারা যান তিনি। দুর্ঘটনার পর স্থানীয় জনতা ডাম্পারটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। অবরোধ করা হয় বড়দাবাড়-ভোগপুর গ্রামীণ সড়ক। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে অবরোধ চলে। স্থানীয় বাসিন্দা শেখ সাদেক আলি বলেন, ‘‘এই গ্রামীণ সড়কের দু’ধারে অবৈধভাবে বালি, স্টোনচিপ, ইট মজুত করে রাখে ইমারতি ব্যবসায়ীরা। ফলে সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছে রাস্তা। সেই সরু রাস্তা দিয়েই দ্রুতগতিতে যান চলাচলের জন্য প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এদিনও ওই কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় প্রশাসনকে বার বার জানালেও কোনও লাভ হয়নি।’’

দমকলের একটি ইঞ্জিন ডাম্পারের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে কোলাঘাট থানার পুলিশ পৌঁছলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার মানুষ। রাস্তার দু’পাশে নির্মাণ সামগ্রী বেআইনি মজুত বন্ধ করার দাবি তোলা হয়। শেষ পর্যন্ত কোলাঘাট থানার পুলিশ জেসিবি নিয়ে এসে রাস্তার ধারে মজুত বালি, স্টোনচিপ সরানোর কাজ শুরু করলে অবরোধ ওঠে। ডাম্পারটি পুলিশ আটক করছে।

Advertisement

পঞ্চায়েতের প্রধান চম্পারানি ভৌমিক বলেন, ‘‘স্থানীয় কিছু মানুষ পঞ্চায়েতের নিষেধের তোয়াক্কা না করে রাস্তার ধারে অবৈধভাবে ব্যবসা করছেন। স্থানীয় মানুষ প্রতিবাদ করলে পঞ্চায়েত অবশ্যই তাঁদের পাশে দাঁড়াবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন