সাফাই: ব্যস্ত পড়ুয়ারা।
সরকারি অনুষ্ঠানের জন্য নেওয়া হয়েছিল স্কুলের মাঠ। কিন্তু অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর সপ্তাহ খানেক কেটে গেলেও মাঠ পরিষ্কার করানো হয়নি। যার মাসুল দিতে হল পড়ুয়াদের। মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অজস্র পেরেক, লোহার তার আর ভাঙা কাচের টুকরোয় জখম ছাত্ররা। প্রশাসনকে বার বার জানানোর পরেও মাঠ পরিষ্কারে তাদের উদ্যোগ নেই দেখে বাধ্য হয়ে নিজেরাই মাঠ পরিষ্কারে নেমেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। গত দু’দিন ধরে চলছে সাফাই অভিযান।
ঝাড়গ্রাম শহরের ঐতিহ্যবাহী স্কুল ‘কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশন’-এর মাঠ নিয়ে প্রশাসনের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা। তাঁদের অভিযোগ, মাঠে সারা বছর বিভিন্ন সময়ে সরকারি উৎসব-অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। কিন্তু সে সব চুকে গেলে মাঠ পরিষ্কার নিয়ে কারও খেয়াল থাকে না। এ বার বেশ কিছু পড়ুয়ার জখম হওয়ার ঘটনায় তাঁদের প্রশ্ন, এর দায় কে নেবে?
স্কুল সূত্রে খবর, গত ২৪-২৬ জুন স্কুলের মাঠে ‘একতাই সু্প্রীতি’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের উদ্যোগে একাধিক স্টল ও সাংস্কৃতিক মঞ্চ তৈরি হয়। ২৪ জুন বিকেলে অনুষ্ঠান হওয়ায় সকালে স্কুল হয়। ২৫ ও ২৬ জুন রথযাত্রা ও ইদের ছুটি ছিল। ২৭ জুন স্কুল খোলার পর দেখা যায় গোটা মাঠ জুড়ে নোংরা-আবর্জনা। কলকাতার একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা অনুষ্ঠানের দায়িত্বে ছিল। তারা মঞ্চ ও স্টলের সরঞ্জাম খুলে নিয়ে গেলেও মাঠ পরিষ্কার করেনি। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানান স্কুল কর্তৃপক্ষ। মাঠে পেরেক ও কাচের টুকরো পড়ে থাকায় খেলাধূলায় সমস্যা হচ্ছে। কয়েকদিন আগে সপ্তম শ্রেণির এক পড়ুয়ার জুতোর তলা ফুঁড়ে পায়ে পেরেক ঢুকে যায়। কাচের টুকরোয় দশম শ্রেণির এক পড়ুয়ার পা কেটে যায়। উপায় না দেখে বুধ ও বৃহস্পতিবার নিজেরাই মাঠ পরিষ্কারে উদ্যোগী হন স্কৃল কর্তৃপক্ষ।
প্রধান শিক্ষক অনুপ দে বলেন, “যাঁরা অনুষ্ঠান করেছেন, তাঁদেরই মাঠ পরিষ্কার করার কথা। এ ব্যাপারে প্রশাসনিক মহলে বার বার আবেদন জানিয়েছি। সাড়া পাইনি। দু’জন পড়ুয়া জখম হওয়ার পর আর ঝুঁকি না নিয়ে ছাত্রদের দিয়ে সাধ্যমতো মাঠ পরিষ্কার করা হয়েছে।”
ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক (সদর) নকুলচন্দ্র মাহাতো বলেন, “মাঠ পরিষ্কার করার জন্য তথ্য-সংস্কৃতি আধিকারিককে বলা হয়েছে।” জেলার ভারপ্রাপ্ত তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক বরুণ মণ্ডল বলেন, “বৃহস্পতিবার আমি মাঠ পরিষ্কারের জন্য লোক পাঠিয়েছি।” যদিও দেখা যায়, তার আগে পড়ুয়ারাই পরিষ্কার করে দিয়েছে।