খড়্গপুর কলেজ

ফর্মে কারচুপি, নাম জড়াল ছাত্রনেতার

ছাত্র ভর্তির নামে টাকা নেওয়ার নালিশের পরে এ বার ফর্মে কারচুপি। ফের খড়্গপুর কলেজে অনিয়মে নাম জড়াল তৃণমূলের ছাত্র নেতার। পাসকোর্সে ভর্তির জন্য কারচুপি করা ওই আবেদনপত্র সোমবার সন্ধ্যায় কলেজে জমা দেন শুভম রঘুবন্তী নামে নিউ সেটলমেন্ট হরিজন বস্তির এক ছাত্র। কর্তৃপক্ষের নজরে বিষয়টি আসতেই ওই ছাত্রকে ডেকে পাঠানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৬ ০৩:০৯
Share:

ছাত্র ভর্তির নামে টাকা নেওয়ার নালিশের পরে এ বার ফর্মে কারচুপি। ফের খড়্গপুর কলেজে অনিয়মে নাম জড়াল তৃণমূলের ছাত্র নেতার।

Advertisement

পাসকোর্সে ভর্তির জন্য কারচুপি করা ওই আবেদনপত্র সোমবার সন্ধ্যায় কলেজে জমা দেন শুভম রঘুবন্তী নামে নিউ সেটলমেন্ট হরিজন বস্তির এক ছাত্র। কর্তৃপক্ষের নজরে বিষয়টি আসতেই ওই ছাত্রকে ডেকে পাঠানো হয়। পরে কলেজের টিচার ইন-চার্জের কাছে শুভম লিখিতভাবে জানান, হায়দার আলি খান-সহ তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর দু’জন নেতার পরামর্শে তিনি ওই ফর্ম জমা দিয়েছেন। এ জন্য হায়দার ৬ হাজার টাকা চেয়েছেন বলেও তাঁর দাবি। পুলিশ এসে ওই ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। ঘটনার তদন্তও শুরু হয়েছে। যদিও হায়দারের দাবি, তাঁকে ফাঁসাতে টিএমসিপির প্রাক্তন শহর সভাপতি রাজা সরকার এই ষড়যন্ত্র করেছেন।

অনলাইন চালু হলেও ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নামে ক’দিন আগেই টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল এই হায়দারের বিরুদ্ধে। তাঁকে কলেজে ঢুকতে নিষেধও করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। তাতেও অবস্থা পাল্টায়নি। খড়্গপুর কলেজের টিচার ইন-চার্জ কৌশিক ঘোষ বলেন, “ভর্তি প্রক্রিয়া চলায় অনেক অভিভাবকরাও কলেজে আসছেন। ফলে নিরাপত্তারক্ষীরা সবসময় গেট আটকে রাখতে পারছে না। সেই সুযোগে হয়তো নিষেধ সত্ত্বেও কেউ কলেজ চত্বরে ঢুকে পড়ছে।’’ তবে স্বচ্ছ ভাবে ভর্তি প্রক্রিয়া চালাতে সব পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

Advertisement

এ ক্ষেত্রে ঘটনাটি কী?

জানা গিয়েছে, অনার্সে ভর্তির জন্য অনলাইনে ফর্ম পূরণ করেছিলেন শুভম। তবে মেধাতালিকায় নাম ওঠেনি। তিনি পাসকোর্সের ফর্মও পূরণ করেননি। ফলে ভর্তির সুযোগ হাতছাড়া হয়। এখন কলেজে পাসকোর্সে ভর্তি হওয়া ছাত্রদের শিফট্‌ বদলের প্রক্রিয়া চলছে। এ জন্য অনলাইনে করা আবেদনের পিডিএফ জমা দিতে বলা হয়েছে। শুভম সেই পিডিএফ ফর্মে কারচুপি করে ‘অনার্সে’র জায়গায় ‘জেনারেল’ লিখে জমা দেন। ফর্ম খতিয়ে দেখার সময়ে তা কলেজ কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। বিকেলে বাবা রাজকুমার রঘুবন্তীকে নিয়ে কলেজে আসেন শুভম।

তাঁর দাবি, ছাত্রনেতা হায়দার আলি খান ও জুয়েল আহমেদ ওই নকল পিডিএফ ফর্ম জমা দিয়ে ভর্তির কথা জানিয়েছিলেন। রাজকুমার বলেন, “আমার ছেলে এ সবের কিছুই জানেনা। ও যে দুই ছাত্রের নাম করেছে তারা ওঁকে ওই ফর্ম জমা দিতে বলেছিল। টাকার দাবিও করেছিল। পুলিশকে আমার ছেলে সব জানিয়েছে।’’

এই ঘটনায় ফের প্রকাশ্যে এসেছে টিএমসিপি-র গোষ্ঠী কোন্দল। অভিযুক্ত হায়দার বলছেন, “আমার কাছে ওই ছাত্রটি ফর্ম নিয়ে এসেছিল। আমি ফর্ম না দেখেই জমা দিতে বলেছিলাম। ও এখন মিথ্যা অভিযোগ করছে। আমার ধারণা, রাজা সরকাররা এই চক্রান্ত করছে।’’

অন্য দিকে, হায়দারের বিরোধী বলে পরিচিত রাজার বক্তব্য, “হায়দার সংগঠনের কোনও পদে নেই। কলেজে ঢোকা নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও তিনি কলেজে ঢুকছেন। সবাই ওঁর নামে অভিযোগ করছে। উপযুক্ত তদন্ত হওয়া উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন