পরীক্ষার সময়ে মাইকের দৌরাত্ম্য। প্রতীকী ছবি।
পরীক্ষার সময়ে স্কুলের মাঠে সঙ্গীত সন্ধ্যা। মাইকের দৌরাত্ম্যের আশঙ্কা। প্রতিবাদে সরব হল পড়ুয়ারাই। ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির।
আগামী শনিবার শালবনি থানার উদ্যোগে ‘শালবনি হাইস্কুলে’র মাঠে এক সঙ্গীত সন্ধ্যা আয়োজনের কথা রয়েছে। কয়েকজন পড়ুয়া সোমবার লিখিত ভাবে স্কুলের কাছে ওই আসর বন্ধের দাবি করেছে। কারণ ওই সময় মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের টেস্ট পরীক্ষা চলবে। শালবনির বিডিও সঞ্জয় মালাকারের দফতরেও দাবিপত্র দিয়েছে পড়ুয়ারা। বিডিও মানছেন, ‘‘কয়েকজন ছাত্র এসেছিল। ওদের কথা বলেছে। বিষয়টি দেখছি।’’ স্কুলের সহ-প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ মেইকাপ বলেন, ‘‘কয়েকজন ছাত্র এসে তাদের কথা বলেছে। শনিবার সন্ধ্যায় স্কুলের মাঠে এক অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে। অনুষ্ঠান বন্ধের অনুরোধ করেছে ওই ছাত্রেরা। বিষয়টি দেখছি।’’
ইতিমধ্যে অনুষ্ঠান করার প্রয়োজনীয় অনুমতি দিয়েছে স্কুল। কেন সবদিক না দেখেই অনুমতি দেওয়া হল? ওই সময় যে টেস্ট চলবে তা কি স্কুলের জানা ছিল না? সদুত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন সহ- প্রধান শিক্ষক। স্কুলের এক সহ- শিক্ষকের মন্তব্য, ‘‘পুলিশ অনুমতি চাইলে স্কুলের কীই বা করার থাকতে পারে! স্কুল তো পুলিশকে ফেরাতে পারে না!’’ শালবনি থানা সূত্রের খবর, স্কুলের কাছ থেকে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। সেই অনুমতি মেলার পরই অনুষ্ঠানের তোড়জোড় শুরু হয়েছিল।
ঘেরা হলঘরে নয়, চারদিক ফাঁকা মাঠে সঙ্গীত সন্ধ্যা। মাইকের আওয়াজে পরীক্ষার্থীদের তো সমস্যা হয়ই! জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ার জবাব, ‘‘শালবনির বিষয়টি দেখছি।’’ জেলা পুলিশের এক কর্তার আশ্বাস, ‘‘এ ক্ষেত্রে কী করণীয় তা দেখা হচ্ছে। পরীক্ষার্থীদের সমস্যায় ফেলে কিছু হবে না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সব থানা এলাকাতেই এমন অনুষ্ঠান হয়। তেমন হলে অনুষ্ঠান কোনও হলঘরে হবে। কিংবা চারপাশ ঘেরা এলাকায় হবে। অনেক রাত পর্যন্ত যাতে অনুষ্ঠান না হয় তাও দেখা হবে।’’
সামনেই মাধ্যমিক- উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট। অধিকাংশ স্কুলে বৃহস্পতিবার থেকে টেস্ট শুরু। টেস্ট শেষ হলে শুরু হবে পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা। পুজোর ছুটি শেষে সোমবার স্কুল খুলেছে। আর এ দিনই শালবনি থানার উদ্যোগে আয়োজিত হতে চলা সঙ্গীত সন্ধ্যা বন্ধের দাবিতে সরব হয়েছে একদল পড়ুয়া। বুবাই ঘোষ, রাজদীপ মোদক প্রমুখ পড়ুয়ার কথায়, ‘‘পরীক্ষার সময়ে অনুষ্ঠান হলে পরীক্ষার্থীদের সমস্যা হয়। পরীক্ষার্থীদের কথা আগে ভাবা উচিত পুলিশের।’’