ঝাড়গ্রামে সুভাষচন্দ্র, স্মরণে অনুষ্ঠান বার লাইব্রেরির

১৯৪০ সালের ১২ মে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছে। পরাধীন ভারতের জাতীয় রাজনীতিতে সে এক অস্থির সময়। কংগ্রেসের সঙ্গে সুভাষচন্দ্রের দূরত্ব ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। তখনও সুভাষচন্দ্র বসু নেতাজি হননি। সেই দিন ঝাড়গ্রামে জনসভা করেছিলেন সুভাষচন্দ্র।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৭ ০১:১১
Share:

স্মৃতি: সেদিন ঝাড়গ্রামে সুভাষচন্দ্র (মাঝখানে)।

১৯৪০ সালের ১২ মে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছে। পরাধীন ভারতের জাতীয় রাজনীতিতে সে এক অস্থির সময়। কংগ্রেসের সঙ্গে সুভাষচন্দ্রের দূরত্ব ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। তখনও সুভাষচন্দ্র বসু নেতাজি হননি। সেই দিন ঝাড়গ্রামে জনসভা করেছিলেন সুভাষচন্দ্র। জনসভার আগে দুপুরে ঝাড়গ্রাম আদালতের বার লাইব্রেরিতে গিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপচারিতাও সারেন।

Advertisement

৭৭ বছর পরে সেই ঐতিহাসিক বার লাইব্রেরি প্রাঙ্গণে সুভাষচন্দ্রের সফর-স্মরণে অনুষ্ঠানের আয়োজন হতে চলেছে। আগামী ১২ মে ‘প্লিডার্স বার অ্যাসোসিয়েশন-ঝাড়গ্রাম’-এর উদ্যোগে নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সাড়ম্বরে ওই দিনটি পালন করা হবে বলে অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে খবর। ওই দিন সকালে বার লাইব্রেরি ভবনের সামনে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন কলকাতা হাইকোর্টের এক বিচারপতি। নেতাজির ঝাড়গ্রাম সফর নিয়ে আলোচনা করবেন প্রবীণ গবেষক তারাপদ কর। যিনি সুভাষচন্দ্রের ঝাড়গ্রাম-সফর নিয়ে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে গবেষণা করছেন। অ্যায়োসিয়েশনের উদ্যোগে একটি স্বাস্থ্যশিবির করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ঝাড়গ্রাম আদালতের বার লাইব্রেরি। নিজস্ব চিত্র।

Advertisement

অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুমন সেন বলেন, “১৯৪০ সালের ১২ মে সুভাষচন্দ্র যে ঝাড়গ্রাম বার লাইব্রেরিতে এসেছিলেন, সেই তথ্য আমাদের জানা ছিল না। বিষয়টি জানার পরে আমরা এ বার থেকে প্রতি বছর দিনটি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” তিনি জানান, বার লাইব্রেরির সামনে সুভাষচন্দ্র বসুর আবক্ষ মূর্তি স্থাপনেরও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

১৯৪০ সালের ১২ মে সকালে মেদিনীপুর থেকে ধেড়ুয়া হয়ে মোটরগাড়িতে নাড়াজোলের কুমার দেবেন্দ্রলাল খানের সঙ্গে ঝাড়গ্রামে এসেছিলেন সুভাষচন্দ্র। ওই সময়ের আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, সে দিন ঝাড়গ্রামে ব্যবসায়ী নলিনবিহারী মল্লিকের বাড়িতে আতিথ্য গ্রহণ করে একটি টালির বাড়িতে বিশ্রাম নেন সুভাষচন্দ্র। বাড়িটি এখন শহরের বাছুরডোবা পেট্রোল পাম্পের অফিস। দুপুরে বার-লাইব্রেরিতে আইজীবীদের সঙ্গে মিলিত হন সুভাষচন্দ্র। পুরনো সেই বার ভবনটি সংস্কার হয়ে এখন ‘প্লিডার্স বার অ্যাসোসিয়েশন, ঝাড়গ্রাম’-এর ভবন। ওই দিন বিকেলে ঝাড়গ্রাম শহরের লালগড় মাঠে জনসভা করেন সুভাষচন্দ্র। তবে সেই মাঠের অবশ্য এখন অস্তিত্ব নেই। এলাকাটি দুর্গা ময়দান নামে পরিচিত। ওই সভায় সুভাষচন্দ্র ঘোষণা করেছিলেন, ‘আপস নয়, সংগ্রাম ও ত্যাগের পথেই স্বরাজ আসবে’। ঝাড়গ্রামে সভা সেরে সে দিন ট্রেনে কলকাতায় ফিরেছিলেন সুভাষচন্দ্র।

তারাপদবাবুর আক্ষেপ, “এই অরণ্যশহরে সুভাষচন্দ্র বসু যে জনসভা করেছিলেন, সেই তথ্য অনেকেরই অজানা। অ্যাসোসিয়েশনের তরফে সেই তথ্যকে সামনে নিয়ে আসার এই প্রয়াস প্রশংসনীয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন