Subrata Mukherjee

Subrata Mukherjee death: তাঁর উদ্যোগেই ঝুমিতে সেতু, করা হল না উদ্বোধন

ঝুমির সেতু উদ্বোধন করতে আসার কথা শিল্যানাস অনুষ্ঠানে এসে নিজেই জানিয়েছিলেন। কিন্তু তার আগেই তিনি চলে গেলেন চিরতরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২১ ০৬:৩৯
Share:

পঞ্চায়েত মন্ত্রীর শিলান্যাসের পরে শুরু হয়েছে ঝুমি নদীর উপরে সেতুর কাজ ।

মাস খানেক আগেও এসেছিলেন। তখন ঘাটাল জলে ডুবে। ঘুরেছিলেন নৌকায়। ক্ষয়ক্ষতি দেখে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিদের বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠাতে বলে গিয়েছিলেন।

Advertisement

ঘাটালে ঝুমি নদীর উপর সেতু তৈরি নিয়ে টানপড়েন চলেছিল দীর্ঘ তিন দশকের বেশি সময় ধরে। সেখানেও ত্রাতা প্রবীণ রাজনীতিক রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখেপাধ্যায়। ঘাটালের লোক তাঁকে কাজের মানুষ লোক হিসাবেই চিনত। ঝুমির সেতু উদ্বোধন করতে আসার কথা শিল্যানাস অনুষ্ঠানে এসে নিজেই জানিয়েছিলেন। কিন্তু তার আগেই তিনি চলে গেলেন চিরতরে। প্রয়াত মন্ত্রীর কথা উঠতেই স্মৃতিতে ডুব দিচ্ছেন ঘাটালবাসী।

ঘাটালে এ বার চারবার বন্যা হয়েছে। সেপ্টেম্বরের গোড়ায় ঘাটালে বন্যার কথা শুনে সবার প্রথমেই ছুটে এসেছিলেন সুব্রত। পুজোর মুখে ফের বন্যার মুখোমুখি হয় ঘাটাল। সে বারও স্থানীয় প্রশাসনিক আধিকারিক, জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে ঘাটালের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ত্রাণ তুলে দিয়েছিলেন তিনি। তৃণমূল নেতা তথা ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দিলীপ মাঝি বলছিলেন, ‘‘ঘাটাল ঘুরে নৌকা থেকে নামার পরই দাদা বলেন, ঘাটালটা অনেকটা পিছিয়ে গেল। জল কমলে ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত রিপোর্ট নিয়ে আমার সাথে দেখা করবি। পঞ্চায়েত দফতর-সহ বিভিন্ন ভাবে কতটা কী সাহায্য করতে পারি দেখব।’’

Advertisement

ঝুমি নদীর উপর একটি সেতু তৈরির দাবি বহু দিনের। বিধানসভা ভোটের আগে সুব্রতই উদ্যোগী হয়ে সেতুর শিলান্যাস করেন। আইএনটিটিইউসি-র ঘাটাল জেলা সভাপতি বিকাশ কর মনে করালেন, “শুধু মনসুকার সেতু নয়। ঘাটালে পরিস্রুত পানীয় জল পরিষেবাতেও জড়িয়ে রয়েছেন উনি।”

ঘাটালের প্রবীণ তৃণমূল নেতাদের অনেকে জানালেন, ২০১৯ সালে বীরসিংহে বিদ্যাসাগর মেলার উদ্বোধন করতে এসে বাইকে করে মনসুকা ঘুরেছিলেন সুব্রত। সঙ্গে ছিলেন ঘাটালের প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দোলই, ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দিলীপ মাজিরা। মনসুকায় ঝুমির কাঠের সাঁকো পেরিয়ে নদীর দু’পাড়ের পরিস্থিতি দেখেছিলেন। স্থানীয়দের সাথে কথা বলেছিলেন। বুঝেছিলেন সেতু তৈরি হলে ঘাটালের সঙ্গে হুগলির যোগাযোগ অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। পাল্টে যাবে এলাকার আর্থ সামাজিক পরিস্থিতি। সেই দিনই মনসুকা থেকে ফিরে বীরসিংহে বিদ্যাসাগর মেলার উদ্বোধন মঞ্চেই ঝুমি নদীর উপর পাকা সেতুর ঘোষণা করেছিলেন। তার কয়েক মাসের মধ্যেই পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে সেতুর জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছিলেন।

ওই সেতুর শিলান্যাসের মুহূর্তে। ফাইল চিত্র।

ঘাটালের প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দোলই বলছিলেন, ‘‘যখনই দেখা হয়েছে, তখনই ঝুমি নদী নিয়ে খোঁজ খবর নিতেন। ঘাটাল নিয়ে বরাবরই একটা আবেগ ছিল। করোনার জন্য সেতুর কাজ আটকে গিয়েছে শুনেই তৎপর হয়েছিলেন তিনি।’’

তৃণমূলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আশিস হুতাইত, ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দিলীপ মাঝি, শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ বিকাশ কর-সহ অন্য কর্মাধ্যক্ষরা কলকাতায় গিয়ে নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে এসেছেন। তৃণমূলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আশিস হুতাইত সুব্রতর স্মরণে একটি কবিতাও লিখেছেন। সমাজমাধ্যমে তা ছড়িয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন