প্রতীকী ছবি।
খড়্গপুরে বাড়তে চলেছে পুরকর। আয় বাড়াতে ‘ভ্যালুয়েশন বোর্ড’-এর নিয়ম মেনেই পুরকর বৃদ্ধি করবে পুরসভা। কর বাড়ানোর আগে এলাকার যুবকদের দিয়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বাড়ি ও অফিসে সমীক্ষা করা হবে। সোমবার খড়্গপুর পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে কর বৃদ্ধির পাশাপাশি অস্থায়ী পুর কর্মীদের বেতন বাড়ানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়।
পুরসভা সূত্রে খবর, প্রথমে ঠিক হয়েছিল পুরকর নির্ধারণের জন্য বাইরে থেকে লোক এনে বিভিন্ন ওয়ার্ডে বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষা করা হবে। যদিও এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় সিদ্ধান্ত হয়, এলাকার যুবকদের দিয়েই বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষা হবে। বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত বাড়ির ক্ষেত্রে পুরসভার কর্মীরাই সমীক্ষা চালাবেন বলে ঠিক হয়েছে।
পুরবোর্ডের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির আগে এ দিনের বৈঠকে পুরসভার অস্থায়ী কর্মীদের বেতনও বাড়ানো হয়। গত পাঁচ বছরে পুরসভার অস্থায়ী কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি হয়নি। পুরসভার এই মুহূর্তে সাফাই কর্মী-সহ প্রায় ৩৫০ জন অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। এ ছাড়াও প্রায় ২০০ জন ‘পাম্প অপারেটর’ রয়েছেন। পাম্প অপারেটরদের মাসে ৬০০ টাকা, সাফাই কর্মীদের মাসে ১ হাজার তিনশো টাকা ও অন্য অস্থায়ী কর্মীসের মাসে ১ হাজার টাকা বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে। পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “বহুদিন এই অস্থায়ী কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি হয়নি। আমাদের বোর্ডের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে সমস্ত অস্থায়ী কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি করলাম।”
শহরের রেল এলাকা-সহ ৩৫টি ওয়ার্ডের উন্নয়নের জন্যও অর্থ বরাদ্দ করা হয় বৈঠকে। এ ক্ষেত্রে ৩৫টি ওয়ার্ডকে তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে ওই অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। ‘এ’ ক্যাটাগরির ২২টি ওয়ার্ডকে ১৬ লক্ষ টাকা, ‘বি’ ক্যাটাগরির ৪টি ওয়ার্ডকে ১৪ লক্ষ টাকা ও ‘সি’ ক্যাটাগরির ৯টি ওয়ার্ডকে ১৩ লক্ষ টাকা করে দিয়েছে পুরসভা। সম্প্রতি কাজের জন্য অতিরিক্ত যে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা পেয়েছিল পুরসভা সেই অর্থও বিলি করা হয় এ দিন। এ ছাড়াও কর্মনিযুক্তি প্রকল্পেও প্রতিটি ওয়ার্ডকে ৩ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
রেল এলাকায় বারবার কাজে বাধার অভিযোগ ওঠে। অথচ সেই ওয়ার্ডগুলির জন্য কেন অর্থ বরাদ্দ করা হল তা নিয়ে সরব বিরোধীরা। সিপিএমের জোনাল সম্পাদক অনিতবরণ মণ্ডল বলেন, “রেল এলাকার ওয়ার্ডগুলি থেকে পুরসভা এক টাকাও কর পায় না। রেল এলাকার ওয়ার্ডে কাজে বাধা রয়েছে। তারপরেও বোর্ড মিটিংয়ে রেল এলাকার ওয়ার্ডের জন্য টাকা বরাদ্দ করল। আসলে এ সব টাকা নয়ছয় হচ্ছে। আমরা আবারও স্মারকলিপি জমা দেব।” যদিও এ বিষয়ে পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “আমরা তো রেল এলাকার ওয়ার্ডের নাগরিকদের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। তাহলে ওদের পরিষেবার জন্য কেন টাকা বরাদ্দ হবে না? রেল কাজ করতে না দিলে জোর করে উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে।”