বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনা, মৃত শিক্ষক

পুলিশ সূত্রের খবর, মেদিনীপুর কলেজিয়েট (বালক) স্কুলের   পদার্থবিদ্যার শিক্ষক মধুসূদনবাবুর বাড়ি শহরের বল্লভপুরে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় শিক্ষক আন্দোলনের পরিচিত মুখ ছিলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোলাঘাট শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:০৫
Share:

বিমানবন্দর থেকে মেয়েকে নিয়ে সপরিবার বা়ড়িতে ফিরছিলেন মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষক মধুসূদন গাঁতাইত(৫৩)। পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল তাঁর। আহত মেয়ে, স্ত্রী এবং গাড়ির চালকও।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, মেদিনীপুর কলেজিয়েট (বালক) স্কুলের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক মধুসূদনবাবুর বাড়ি শহরের বল্লভপুরে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় শিক্ষক আন্দোলনের পরিচিত মুখ ছিলেন তিনি। পাশাপাশি, মধুসূদন মেদিনীপুর বিদ্যাসাগর সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের ডিরেক্টরও ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রের খবর, মধুসূদনের মেয়ে মিত্রতা গাঁতাইত দিল্লিতে ডাক্তারি নিয়ে পড়াশোনা করেন। মেদিনীপুরের বাড়ি আসার জন্য মিত্রতা সোমবারই দিল্লি থেকে বিমানে কলকাতা আসেন। বিমানবন্দর থেকে মেয়েকে আনার জন্য গাড়ি ভাড়া করে স্ত্রী সোমাকে নিয়ে মধুসূদনবাবু কলকাতা বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন। তাঁর পরিবার সূত্রের খবর, ফেরার সময় হাওড়ার নিবেদিতা সেতুতে প্রায় দেড় ঘণ্টা যানজটে আটকে পড়েছিল মিত্রতাদের গাড়ি। রাত্রি সাড়ে ১১টা নাগাদ মধুসূদনবাবুর ভাই তথা চিকিৎসক কৃপাসিন্ধু গাঁতাইতের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়। সে সময় ফোনে মধুসূদনবাবু যানজটে আটকে থাকার কথা ভাইকে জানিয়েছিলেন।

Advertisement

যানজট থেকে বেরিয়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় রাত দেড়টা নাগাদ মধুসূদনবাবুদের গাড়ি কোলাঘাট থানার বড়দাবাড়ে একটি লরির পিছনে ধাক্কা মারে বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রের খবর, গাড়ির সামনে চালকের পাশে বসেছিলেন মধুসূদন। পিছনের আসনে বা’দিকে ছিলেন তাঁর মেয়ে মিত্রতা এবং ডানদিকে ছিলেন স্ত্রী সোমা। দুর্ঘটনায় গাড়িটির বা’দিকের অংশ ব্যাপক ক্ষতি হয়। গাড়ির কাচ মধুসূদনবাবুর শরীরে ঢুকে যায়। রাতে জাতীয় সড়কে টহলরত কোলাঘাট থানার পুলিশ কর্মীরা চার জনকেই উদ্ধার করে প্রথমে তমলুক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক মধুসূদনবাবুকে মৃত ঘোষণা করেন।

মধুসূদনবাবুর মোবাইল ফোনের কললিস্ট দেখে পুলিশ খবর দেয় তাঁর পরিবারকে। পরে পরিবারের লোকজন এসে সোমা এবং মিত্রতাকে কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। আহত গাড়ির চালককেও তমলুক হাসপাতাল থেকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর পরিবারের লোকজন।

কোলাঘাট থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘রাতে বৃষ্টি হচ্ছিল। লরির খালাসি দোকানে জিনিস কিনবে বলে তার চালক লরিটি কম গতিতে চালাচ্ছিলেন। মধুসূদনবাবুদের গাড়ির চালক সম্ভবত বৃষ্টির কারণে লরিটির উপস্থিতি বুঝতে পারেননি। লরিকে ওভারটেক করতে গিয়ে সেটির পিছনে ধাক্কা মারেন।’’

মৃত মধুসূদনবাবুর সহকর্মী দীপঙ্কর সন্নিগ্রাহী বলেন, ‘‘একই সঙ্গে চাকরি করি। ও এই ভাবে চলে যাবে মেনে নিতে পারছি না।’’ কলেজিয়েট স্কুলের এক ছাত্রের কথায়, ‘‘স্যর আর নেই। বিশ্বাসই হচ্ছে না।’’ শিক্ষকতা ছাড়াও মেদিনীপুর সায়েন্স সেন্টারের অন্যতম প্রধান কর্ণধার ছিলেন মধুসূদনবাবু। তাঁর অকাল প্রয়ানে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন