অসম থেকে ফিরল কফিনবন্দি দেহ, শোকাচ্ছন্ন দুই পরিবার

পাঁশকুড়া থানায় বেলা আড়াইটা নাগাদ দেহগুলি পৌঁছয়। আগে থেকেই সেখানে ছিলেন সিআই স্বরূপ বসাক। পাঁশকুড়া থানা থেকে দুটি আলাদা গাড়িতে দুই নিহতের বাড়িতে দেহ নিয়ে পৌঁছন স্থানীয় তৃণমল নেতৃত্ব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৫৫
Share:

ইদ্রিসের দেহ পৌঁছলো গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

অসমে খুন হওয়া দু’ই বাঙালির দেহ পৌঁছল পাঁশকুড়ায়। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার সময় কলকাতা বিমান বন্দরে এসে পৌঁছয় দুই নির্মাণ শ্রমিক শেখ ইদ্রিস (৫৪) ও শেখ মহম্মদের (৫১) কফিন বন্দি দেহ। দেহ দু’টি পাঁশকুড়ায় নিয়ে আসার জন্য আগে থেকেই বিমানবন্দরে হাজির ছিলেন পাঁশকুড়া -১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি কুরবান শা, কোলাঘাট পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি রাজকুমার কুণ্ডু ও মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকর জানা ও পাঁশকুড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সাইদুল ইসলাম খান। পাঁশকুড়া থানার পুলিশের একটি দলও ছিল।

Advertisement

পাঁশকুড়া থানায় বেলা আড়াইটা নাগাদ দেহগুলি পৌঁছয়। আগে থেকেই সেখানে ছিলেন সিআই স্বরূপ বসাক। পাঁশকুড়া থানা থেকে দুটি আলাদা গাড়িতে দুই নিহতের বাড়িতে দেহ নিয়ে পৌঁছন স্থানীয় তৃণমল নেতৃত্ব। মৃতদেহে পুষ্পস্তবক দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান তাঁরা। গোপালনগর গ্রামে ইদ্রিসের বাড়িতে দেহ পৌঁছলে কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবার। ইদ্রিসের স্ত্রী মুর্শিদা বিবি বলেন, ‘‘আমার ছেলে আলাদা থাকে। পাঁচ মেয়ের চার জনের বিয়ে হয়ে গেলেও এক মেয়ে এখনও ক্লাস নাইনে পড়ে। মেয়েকে নিয়ে ছোট্ট টালির বাড়িতে থাকি। স্বামীর রোজগারেই সংসার চলত। এখন কী হবে? রাজ্য সরকার যদি একটা বাড়ি বানিয়ে দেয় তা হলে উপকার হয়।’’

একই ছবি শেখ মহম্মদের পরিবারেও। মহম্মদের খুড়তুতো ভাই শেখ রফিক আলি বলেন, ‘‘দাদা চলে গেল। এখন পরিবারে একজনও রোজগেরে নেই। দাদার বড় ছেলে মাধ্যমিক পাশ করে বসে আছে। সরকার যদি ওর জন্য কাজের ব্যবস্থা করে তা হলে পরিবারটা বেঁচে যায়।’’ দুই জায়গাতেই উপস্থিত ছিলেন পাঁশকুড়ার বিডিও ধেনদুপ ভুটিয়া, তমলুকের মহকুমা শাসক কৌশিকব্রত দে। মহকুমা শাসক বলেন, ‘‘দু’টি পরিবারকেই সরকারি সাহায্য দেওয়ার বিষযে ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে।’’ এদিন এলাকায় দেহ পৌঁছনোর আগেই শোকার্ত মানুষের ভিড় জমে যায়। ভিড়ে এক মহিলা-সহ দু’জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ দিন পাঁশকুড়ায় আসার কথা থাকলেও ব্যস্ততার দরুন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী আসতে পারেননি। স্থানীয় তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়েছে, শীঘ্রই তিনি নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন। পুরসভার চেয়ারম্যান নন্দকুমার মিশ্র বলেন, ‘‘এই হামলার ঘটনার নিন্দার কোনও ভাষা নেই। আমরা ওই অসহায় দুই পরিবারের পাশে আছি।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন