চুরি গিয়েছে সব, বেঁচে ফিরেও সঙ্কটে নাবিকেরা

বুধবার সকালে বাদুড়িয়ায় গিয়ে দেখা গেল, একটি ক্লাব বাড়িতে রয়েছেন বাংলাদেশের ওই ১০ জন বাসিন্দা। মহম্মদ জামাল মোল্লা নামে এক নাবিক বলেন, ‘‘মঙ্গলবার সারা রাত মুড়ি খেয়ে কাটিয়েছি। এক বস্ত্রে কাল থেকে রয়েছি। কেউ সাহায্য করেনি।’’ একই বক্তব্য অন্যদেরও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মহিষাদল শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:১৭
Share:

ডুবে যাওয়া সেই বার্জ। —ফাইল চিত্র

এক দিন আগেই ফিরছেন সাক্ষাৎ যমের দুয়ার থেকে। ডুবন্ত বার্জ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল তাঁদের। কিন্তু এখন সেই নাবিকেরা পড়েছেন অন্য ফ্যাসাদে!

Advertisement

মঙ্গলবার ভোরে সুতাহাটা ব্লকের হরিবল্লভপুরের কাছে ডুবন্ত বার্জ থেকে বাংলাদেশের ওই ১০ জন নাবিককে উদ্ধার করা হয়েছে। তারপর থেকে তাঁদের ঠাঁই হয়েছে মহিষাদলের বাদুড়িয়ার একটি ক্লাবে। কিন্তু অভিযোগ, ওই নাবিকদের না জুটেছে পর্যাপ্ত খাবার, না রয়েছে ‘নিরাপদ’ আশ্রয়। কারণ, ইতিমধ্যেই ওই ক্লাব ঘর থেকে নাবিকদের বেশ কিছু জিনিস চুরি গিয়েছে বলে অভিযোগ।

বুধবার সকালে বাদুড়িয়ায় গিয়ে দেখা গেল, একটি ক্লাব বাড়িতে রয়েছেন বাংলাদেশের ওই ১০ জন বাসিন্দা। মহম্মদ জামাল মোল্লা নামে এক নাবিক বলেন, ‘‘মঙ্গলবার সারা রাত মুড়ি খেয়ে কাটিয়েছি। এক বস্ত্রে কাল থেকে রয়েছি। কেউ সাহায্য করেনি।’’ একই বক্তব্য অন্যদেরও।

Advertisement

আবার উদ্ধার হওয়া নাবিকদের একাংশ অভিযোগ করছেন, যে জায়গায় তাঁরা রয়েছেন, সেখান থেকে তাঁদের মোবাইল ফোনের সিম-সহ নানা জিনিস উধাও হয়ে গিয়েছে। এক নাবিকের কথায়, ‘‘আমরা যে বিপদে রয়েছি, সেই খবরটুকুও বাড়ির লোকেদের জানাতে পারছি না।’’ এছাড়া, তাঁদের অভিযোগ, ওই ক্লাব ঘরটি অপেক্ষাকৃত ছোট। ফলে একসঙ্গে এত জন থাকতে অসুবিধেও হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়া ওই ১০ জন নাবিকেরা যেখানে রয়েছেন, তাঁর আশেপাশে কোনও পুলিশ ছিল না। বরং কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়ারকে এ দিন এলাকায় ঘুরতে দেখা গিয়েছে। এতে ভিন্‌ দেশ থেকে আসা মানুষগুলির নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

শুধু তাই নয়, মঙ্গলবার সকালে দুর্ঘটনার পর থেকে স্থানীয় পুলিশ বা প্রশাসনের কেউ উদ্ধার হওয়া ওই নাবিকদের সঙ্গে দেখা করেননি। কোনও খোঁজও নেননি বলে অভিযোগ। বুধবার স্থানীয় লোকজন তাঁদের কিছু আর্থিক সাহায্য করেছেন বলে জানা গিয়েছে। প্রশাসনিক উদ্যোগে কেন ওই ভিন্দেশিদের কোনও সরকারি আবাসনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না, সে প্রশ্নও তুলেছেন বাসিন্দাদের একাংশ।

এ সব অভিযোগ অবশ্য মানতে রাজি নয় স্থানীয় প্রশাসন। মহিষাদলের বিডিও জয়ন্তকুমার দে বলেন, ‘‘উদ্ধার হওয়া নাবিকেরা এমন কষ্টে রয়েছেন, তা জানা ছিল না। খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন