রাতের শহর সুরক্ষিত তো!

সেই সময়ই জেলা শহরের বুকে এক যুবতীকে গণধর্ষণের অভিযোগের পরে অবশ্য প্রশ্ন উঠছে— রাত আটটাও তাহলে মেয়েদের কাছে নিরাপদ নয়!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৯ ০০:৩৬
Share:

নবীনাবাগের আলো-আঁধারি পথ। এই এলাকার এক রাস্তাতেই পড়েছিলেন নির্যাতিতা যুবতী। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

রাত আটটা। একুশ শতকে কোনও শহরে এই সময়টা নিতান্তই কর্মচঞ্চল। রাস্তাঘাট ব্যস্ত, দোকানপাট খোলা। সেই সময়ই জেলা শহরের বুকে এক যুবতীকে গণধর্ষণের অভিযোগের পরে অবশ্য প্রশ্ন উঠছে— রাত আটটাও তাহলে মেয়েদের কাছে নিরাপদ নয়!

Advertisement

রবিবার রাতে মেদিনীপুরের বুকে যে ঘটনা ঘটে গিয়েছে, তাতে নারী দিবসের আগে প্রশ্নের মুখে শহরের নারী সুরক্ষা। পেশায় পরিচারিকা বছর একুশের এক যুবতী গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, রাত আটটা থেকে দু’টোর মধ্যে অন্তত তিন বার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ওই আদিবাসী যুবতী।

মেদিনীপুরে চুরি, ছিনতাই, শ্লীলতাহানির অভিযোগ মাঝেমধ্যে উঠলেও গণধর্ষণের ঘটনা সাম্প্রতিক অতীতে হয়। শহরবাসীর অভিযোগ, অপরাধমূলক কাজকর্ম বাড়ছে, বাড়ছে দুষ্কৃতীদের আনাগোনা। অথচ, পুলিশি নজরদারি বাড়েনি। এ দিন মেদিনীপুর শহরে এক অনুষ্ঠানে এসেছিলেন নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা যাঁরা সমাজে থাকি, নারী নিরাপত্তায় তাঁদের প্রত্যেকের ভূমিকা রয়েছে। এই সামাজিক ব্যাধির মোকাবিলা আমাদের করতে হবে।’’ নির্যাতিতা পুলিশ-প্রশাসনের দ্বারস্থ হলে ন্যায় পাবেন বলেও জানান মন্ত্রী।

Advertisement

সন্ধ্যা ও রাতে মফস্সলেও এখন বেরোন বহু মেয়ে। কারও কাজ থেকে ফিরতে রাত হয়, কেউ টিউশন সেরে ফেরেন দশটা নাগাদ। কিশোরী মেয়েকে টিউশন থেকে আনতে যান মাঝবয়সী মহিলারাও। মেদিনীপুরের এমন সব স্তরের মহিলাই কিন্তু আতঙ্কিত। কারণ, শহরের বহু রাস্তায় আলো জ্বলে না। অন্ধকার নামলেই আনাগোনা বাড়ে বহিরাগতদের। প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা সুজাতা কয়াল বলছিলেন, ‘‘প্রয়োজনে কখনও কখনও রাতে বাড়ির বাইরে বেরোতে হয়। বেশ কিছু জায়গায় অচেনা যুবকদের আড্ডা চলে। তখন ভয় লাগে বই কি!’’ তাঁর মতে, মেদিনীপুরে পুলিশি নজরদারি বাড়ানো উচিত। বিশেষ করে রাতে। শহরের সমাজকর্মী রোশেনারা খানের মতে, ‘‘পুলিশি নজরদারি আরও বাড়ানো উচিত। পাশাপাশি, শহরের ক্লাবগুলোকে আরও সতর্ক হতে হবে। ক্লাবগুলো এগিয়ে এলে পুলিশের কাজটা সহজ হয়। শহরের নিরাপত্তাও বাড়ে।’’ অনেকের মতে, পুলিশ-প্রশাসনের ‘দেখছি-দেখবো’ গোছের মনোভাবে সমাজবিরোধীরা উৎসাহিত হয়। ঘটে যায় এই ধরনের দুষ্কর্ম।

মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন্দ্রনাথ মাইতি অবশ্য বলছেন, ‘‘পুলিশ তৎপরই রয়েছে। আশা করি পুলিশের তৎপরতা আরও বাড়বে।’’ আর জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ার আশ্বাস, ‘‘মেদিনীপুরে নজরদারি থাকেই। নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন