অঙ্গনওয়াড়িতে বিদ্যুৎ নেই, আঁধারেই পড়া

জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, জেলায় ৮,৭২০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে মাত্র ৩১৩টিতে। অর্থাৎ, ৮,৪০৭টিতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। অভিভাবকদের বক্তব্য, বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় সমস্যা হয়। বিশেষ করে গরমকালে। অন্য সময়ে সূর্যের আলো কম থাকলেও সমস্যা হয়। কেন্দ্রের ঘরগুলো অন্ধকার হয়ে পড়ে। পঠনপাঠন ব্যাহত হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৭ ০২:৩৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

সম্প্রতি জেলা সফরে এসে আচমকা একাধিক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ঘুরে দেখেন রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। পরিদর্শনে গিয়ে অধিকাংশ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকার অভিযোগ শোনেন মন্ত্রী। সমস্যার কথা মেনেও নিয়েছিলেন তিনি। মন্ত্রীর সফরের পরেও অবশ্য অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে বিদ্যুৎ সংযোগ গড়ে তোলার কাজে জেলা প্রশাসন উদাসীন বলে অভিযোগ।

Advertisement

জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, জেলায় ৮,৭২০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে মাত্র ৩১৩টিতে। অর্থাৎ, ৮,৪০৭টিতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। অভিভাবকদের বক্তব্য, বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় সমস্যা হয়। বিশেষ করে গরমকালে। অন্য সময়ে সূর্যের আলো কম থাকলেও সমস্যা হয়। কেন্দ্রের ঘরগুলো অন্ধকার হয়ে পড়ে। পঠনপাঠন ব্যাহত হয়।

কেন এমন পরিস্থিতি? সদুত্তর এড়িয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) মধুসূদন চট্টোপাধ্যায় বলছেন, “এই সমস্যার কথা অজানা নয়। কোন ব্লকের কোন কেন্দ্রে বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে, কোন কেন্দ্রে নেই, তা জানতে চেয়েছি। ব্লক থেকে রিপোর্ট আসবে। এই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।” জেলা প্রশাসনের ওই সূত্রে খবর, সম্প্রতি জেলা থেকে এই রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। জেলার নির্দেশ পেয়ে রিপোর্ট তৈরির কাজ শুরুও করেছে ব্লকগুলো। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, “অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের এই সমস্যা শুধু পশ্চিম মেদিনীপুরে নয়, অন্য জেলাতেও রয়েছে। সংযোগ দেওয়া সহজ। কিন্তু বিদ্যুৎ বিল মেটাবে কে? সমস্যা আটকে এখানেই। তবে এই সমস্যা তো বেশিদিন থাকতে পারে না। সমাধানের পথ খুঁজতে হবেই। আগামী দিনে নিশ্চয়ই সমস্যার সমাধানে উপযুক্ত পদক্ষেপ
করা হবে।”

Advertisement

মেদিনীপুর গ্রামীণের নিখিল শাসমল, তপন বেরা প্রমুখ অভিভাবকের কথায়, “অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সমস্যা কম নেই। বেশির ভাগ কেন্দ্রেরই প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নেই। তবে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকাটা বড় সমস্যা।” তাঁদের বক্তব্য, “যেখানে পঠনপাঠন হয়, সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ থাকবে না, এটা অনুচিত। প্রশাসনের উচিত, সমস্যার সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ করা।”

এমনিতেই জেলার বেশির ভাগ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে জল নেই, শৌচাগার নেই। নেই রান্নাঘরও। অনেক কেন্দ্রের নিজস্ব ভবনও নেই। একটি কেন্দ্রের একটি ভবনের মধ্যেই রান্নাঘর, শৌচাগার চলে! হাজরা বিবি নামে এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর কথায়, “কেন্দ্রে প্রচুর সমস্যা। তবে বিদ্যুৎ সংযোগ না- থাকাটা বড় সমস্যা। সমস্যার কথা কোনটা ছেড়ে কোনটা বলব? অথচ, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকেই শিশুরা আলো পায়। মানুষ হতে শেখে।”

প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, “অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলোর উন্নয়নে সব রকম চেষ্টা চলছে। পরিকল্পনা হচ্ছে। আগে যে সংখ্যক শিশু অপুষ্টিতে ভুগত, এখন সেই সংখ্যক শিশু অপুষ্টিতে ভুগে না। অনেক কমেছে। শিশুবান্ধব পরিবেশ গড়ে উঠছে।” তাঁর কথায়, “অনেক অসুবিধা রয়েছে। তবে এক-এক করে সমস্যার সমাধান হচ্ছে। বিদ্যুৎ সমস্যারও নিশ্চয়ই সমাধান হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন