যার নিজভূমে ফেরার কথা ছিল, সে ফিরল না। আর যাদের বাঘের পেটে যাওয়ার কথা ছিল, তারা এ বার ফেরার পথে।
জঙ্গলমহল থেকে নিজের দেশে ফেরার আগেই খুন হয়ে গিয়েছে ছিল রয়্যাল বেঙ্গল। তবে তাকে ধরার জন্য টোপ হিসেবে যে সব ছাগল, শুয়োরকে আনা হয়েছিল, সেগুলি ফেরত পাঠানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে বন দফতর ঠিক করেছে, শুয়োরগুলোকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে। আর ছাগলগুলোকে আপাতত কোথাও রেখে দেওয়া হবে। ঠিক কতগুলো ছাগল, শুয়োর আনা হয়েছিল? জেলার এক বনকর্তার কথায়, ‘‘১০-১২টি ছাগল কেনা হয়েছিল। আর শুয়োর আনা হয়েছিল ৫-৬টি।’’ কয়েকটি ছাগল অবশ্য খাঁচা থেকে চুরি গিয়েছে। ওই বনকর্তার কথায়, “৩-৪টি ছাগল চুরি গিয়েছে। জঙ্গলে থাকা খাঁচার মধ্যে থেকেই কে বা কারা নিয়ে পালিয়েছে।’’ জেলার এই বনকর্তা মানছেন, “এই ছাগল, শুয়োরগুলোর দেশে ফেরার কথা ছিল না! বাঘের খাবার হিসেবেই এদের আনা হয়েছিল। অথচ, এরাই দেশে ফিরছে।” গত জানুয়ারির শেষে লালগড়ের জঙ্গলে প্রথম বাঘের পায়ের ছাপ মেলে। ছাপের ছবি তোলা হয়। পরে লালগড়ের জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় বসানো হয় ট্র্যাপ ক্যামেরা। মার্চের গোড়ায় লালগড়ের মেলখেরিয়ার জঙ্গলে বসানো ট্র্যাপ ক্যামেরায় বাঘের ছবি ধরা পড়ে। বাঘ ধরতে সুন্দরবন থেকে বিশেষ দল আসে। এরপরই খাঁচা পাতা শুরু হয়। শুরুতে ছাগলের টোপ দেওয়া খাঁচা পাতা হয়। পরে বনকর্তারা বুঝতে পারেন, জঙ্গলমহলে এসে রয়্যাল বেঙ্গল ছাগল খাচ্ছে না, শুয়োর খাচ্ছে। সব দেখে ছাগলের বদলে খাঁচায় শুয়োর রাখা হয়। কিন্তু বাঘ আর ধরা পড়েনি। বরং সে খুন হয়ে যায়।
বাঘের দেশ জানার আগেই এ ভাবে তার মৃত্যু মানতে পারছে না কেউ। জেলার এক বনকর্তা মানছেন, “বাঘের এই পরিণতিটা ঠিক হল না। ওকে দেশে ফেরাতে পারলে আমরা সবথেকে বেশি খুশি হতাম। তবে চেষ্টার
ত্রুটি ছিল না।”