ভোট মিটতেই পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগ উঠছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিরোধী কর্মী-সমর্থকদের মারধর, হুমকি, বাড়ি ভাঙচুর— সবই চলছে পাল্লা দিয়ে। ভোটের ফলপ্রকাশের পর ‘দেখে নেব’ গোছের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ।
রাজ্যে বেশ কয়েক দফা ভোট বাকি। তার উপর নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ ফের শহরে। এই পরিস্থিতিতে যাতে পরবর্তী দফার ভোটগুলিতে শাসক দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ না হয়, সে জন্য তৎপর হচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। পশ্চিম মেদিনীপুরে ভোট মিটে গেলেও তাই দলের নেতা-কর্মীদের উপর রাশ টানা হচ্ছে। এলাকায় এলাকায় শান্তি বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের কথায়, ‘‘দলীয় কর্মীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে হবে। কেউ কেউ প্ররোচনা দিয়ে এলাকা অশান্ত করার চেষ্টা করতে পারে, তাতে যেন কর্মী-সমর্থকেরা পা না দেন।’’ এক ধাপ এগিয়ে তৃণমুলের জেলা কার্যকরী সভাপতি তথা নারায়ণগড় বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী প্রদ্যোত ঘোষ বলেন, “ভোট শেষেও আমি এলাকায় ঘুরছি। লক্ষ্য, শান্তি বজায়।’’
ভোটের পরে কেশপুর, গড়বেতা, সবং, নারায়ণগড়, দাঁতন-সহ জেলার নানা প্রান্তে অশান্তি চলছে। সব জায়গাতেই আক্রান্ত মূলত বিরোধীরা। তবে প্রতিরোধও হচ্ছে। গড়বেতার ময়রাকাটা, আমলাশুলি, খয়রাবনি-সহ বিভিন্ন এলাকায় সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের ধমক-চমক চলছে বলেই অভিযোগ। সিপিএমের গড়বেতা জোনাল কমিটির সম্পাদক দিবাকর ভুঁইয়া বলেন, ‘‘আমাদের এক দলীয় কর্মীকে শুধু চড়-থাপ্পড় মেরেই ক্ষান্ত হয়নি, পকেট থেকে টাকাও বের করে নিয়েছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা।’’ ডেবরা, সবং, পিংলা এলাকায় আবার বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা আক্রান্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিজেপি জেলা যুব মোর্চার সভাপতি অরূপ দাসের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি কর্মীদের দেখলেই বলছে, আর ক’টা তো দিন। যাক, তারপর দেখে নেব। এর থেকেই পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর শাসক দল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে হাঁটবে না। এই ঘটনায় চিন্তিত।’’
১৯ মে, ভোট গণনা পর্যন্ত প্রতিটি এলাকায় নির্বাচন কমিশনের নজরদারি থাকবে। প্রশাসনিক কর্তাদের দাবি, নির্বাচন উত্তর সন্ত্রাস মোকাবিলায় তারা তৈরি। কোথাও কোনও ঘটনা ঘটলেই দ্রুত পুলিশ সেখানে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছে। জেলা পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলিকে অশান্তিতে না জড়াতে বলা হয়েছে। আশা করি দু’-এক দিনের মধ্যে পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে।”