শাসক-মদতেই ধুম চোলাইয়ের, সরব শমীক

গণধর্ষণের পরে এক স্কুলছাত্রীকে খুন করে দেহ গাছে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগের জেরে জনরোষ আছড়ে পড়েছিল এলাকার চোলাই ঠেকগুলির উপরে। নন্দকুমারের সেই রাজনগর গ্রামে নিহত ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পরে এলাকার চোলাই কারবার নিয়ে সরব হলেন বিজেপি-র রাজ্য সম্পাদক শমীক ভট্টাচার্যও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৪ ০১:৪৩
Share:

চোলাইয়ের ঠেক নিয়ে শমীক ভট্টাচার্যকে অভিযোগ জানাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। রাজনগর গ্রামে পার্থপ্রতিম দাসের তোলা ছবি।

গণধর্ষণের পরে এক স্কুলছাত্রীকে খুন করে দেহ গাছে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগের জেরে জনরোষ আছড়ে পড়েছিল এলাকার চোলাই ঠেকগুলির উপরে। নন্দকুমারের সেই রাজনগর গ্রামে নিহত ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পরে এলাকার চোলাই কারবার নিয়ে সরব হলেন বিজেপি-র রাজ্য সম্পাদক শমীক ভট্টাচার্যও।

Advertisement

রবিবার ওই গ্রামে যান শমীকবাবু। সঙ্গে দলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নেতারা। সেখানেই শমীকবাবু অভিযোগ করেন, “অতীতে বাম বা বর্তমানে তৃণমূল সরকারের আমলে শাসক দলের মদত ছাড়া এ ভাবে দিনের পর দিন মদের কারবার চলতে পারে না। এ ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত ও পুলিশের যে দায়িত্ব পালন করা উচিত ছিল, তারা সেটা করেনি। করলে এমন নৃশংস ঘটনা দেখতে হত না।” এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও কটাক্ষ করেন শমীকবাবু। তাঁর কথায়, “সব ঘটনাই তো ছোট ঘটনা বা আরশোলার মৃত্যু বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে!”

দ্বিতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ গ্রামেরই একটি গাছে উদ্ধার হয় গত বৃহস্পতিবার। গণধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে মেয়েটিকে, এই অভিযোগে গ্রামেরই প্রৌঢ় রতন দাসকে পিটিয়ে মারে ক্রুদ্ধ জনতা। গণপিটুনিতে জখম রতনের দুই সঙ্গী ভীম সিংহ ও ভজহরি দাস তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি। দু’জনেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক।

Advertisement

ওই ঘটনায় গ্রামবাসীর সমস্ত রাগ স্থানীয় কালীরহাট বাজার এলাকায় চলা গোটা কুড়ি চোলাই ঠেকের উপরে। রতন ও তার সঙ্গীদের ওই ঠেকে দেখা যেত বলে তাঁদের দাবি। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ ও শাসক দলের নেতাদের যোগসাজসেই রমরম করে চলে চোলাইয়ের ঠেকগুলি। ক্ষোভের এই আবহেই গত শুক্রবার স্থানীয় সাওড়াবেড়িয়া জালপাই-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান মানস হাজরার উপস্থিতিতে কয়েকটি চোলাইয়ের ঠেকে ভাঙচুর করে আগুন লাগানো হয়। ওই দিনই তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী গ্রামে গেলে তাঁর সামনেও ক্ষোভ চেপে রাখেননি রাজনগরবাসী। এর পর শনিবার চোলাইয়ের ঠেক ভেঙে দেয় পুলিশ। যদিও অতীত অভিজ্ঞতা থেকে গ্রামবাসীর আশঙ্কা, যে কোনও দিন ফের গজিয়ে উঠবে ঠেক। শুরু হবে চোলাইয়ের রমরমা ব্যবসা।

এ দিন প্রথমেই নিহত ছাত্রীর বাড়িতে যান বিজেপি নেতারা। তার বাবা-মার সঙ্গে কথা বলেন, পাশে থাকার আশ্বাস দেন। ফেরার পথে শমীকবাবুরা যান কালীরহাট বাজারে। সেখানে সদ্য ভাঙা চোলাই ঠেকগুলি দেখে শমীকবাবু জানতে চান, ব্যস্ত বাজারের মধ্যে প্রকাশ্যে এতগুলি চোলাই ঠেক চলছে কী করে? জবাবে স্থানীয় কিছু যুবক বলেন, “পুলিশ ও শাসক দলের কিছু লোকের মদত থাকায় এই কারবার চলছে। গ্রামের মানুষ বেশ কয়েক বার ঠেক ভেঙে দিয়েছেন। কিন্তু, কিছু দিন পরেই ফের তা গজিয়ে উঠেছে।” পুলিশ অবশ্য এ দিনও দাবি করেছে, চোলাই ঠেকের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যেই অভিযান হয়। চলে ধরপাকড়। গ্রামবাসীরা সেই দাবি মানতে নারাজ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement