BJP

পথে কি আজ যুযুধান দু’পক্ষ! রামবন্দনায় সুর চড়াল তৃণমূলও

মঙ্গলবার তৃণমূলও সুর চড়িয়ে জানাল, বিজেপি মন্দিরে গেলে, তারাও যাবে। রামবন্দনা করবে। কারণ, রামচন্দ্র তো কারও একার নন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২০ ০৭:২১
Share:

খড়্গপুরের রামমন্দিরের সামনে জমায়েতে গেরুয়া পতাকাও। নিজস্ব চিত্র

সংঘাতের প্রেক্ষিত তৈরি হচ্ছিল সোমবার থেকেই। অয্যোধ্যায় রামমন্দিরের ভূমিপুজোর ২৪ ঘণ্টা আগে রেলশহর খড়্গপুরে রাজনীতির পারদ আরও চড়ল।

Advertisement

আজ, বুধবার লকডাউন ভেঙেই মন্দিরে মন্দিরে গিয়ে যজ্ঞ-পুজোপাঠে অনড় বিজেপি। মঙ্গলবার তৃণমূলও সুর চড়িয়ে জানাল, বিজেপি মন্দিরে গেলে, তারাও যাবে। রামবন্দনা করবে। কারণ, রামচন্দ্র তো কারও একার নন।

বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের খাসতালুক বলা চলে খড়্গপুরকে। রাম মন্দিরের ভূমি পুজোর অনুসারী পুজোপাঠ আজ লকডাউনের মধ্যেই করতে মরিয়া শহরের বিজেপি নেতৃত্ব। তা নিয়েই চলছে চাপানউতোর। সোমবার সন্ধ্যায় শহরের মালঞ্চ অতুলমণি স্কুল সংলগ্ন এলাকায় রামমন্দিরের ভূমি পুজো উপলক্ষে দেওয়া একটি হোর্ডিং ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ ও শহরের তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলে রাতেই টাউন থানার সামনে জমায়েত করে করে বিজেপি। দলের খড়্গপুর সদর বিধানসভার পর্যবেক্ষক অভিষেক অগ্রবালের দাবি, “আমরা পুরসভার বিজ্ঞাপন এজেন্সির সঙ্গে কথা বলেই হোর্ডিং দিয়েছিলাম। কিন্তু বিধায়কের নির্দেশে পুলিশ আলোচনা ছাড়াই ধর্মীয় ওই হোর্ডিং ছিঁড়েছে।”

Advertisement

শহরের বিধায়ক তথা পুর-প্রশাসক প্রদীপ সরকার অবশ্য বলেন, “বিজেপি পুরসভা ও বিজ্ঞাপন এজেন্সির কোনও অনুমতি না নিয়ে ওই হোর্ডিং দিয়েছিল। বিজ্ঞাপন এজেন্সি আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।” খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদও বলছেন, “অনুমতি ছাড়া পুরসভার হোর্ডিং পোস্ট ব্যবহার হয়েছে বলে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছিল। তাই পদক্ষেপ করেছি। মামলাও হচ্ছে।”

বিজেপি অবশ্য নিজেদের অবস্থানে অনড়। মঙ্গলবার দফায়-দফায় বৈঠক করে লকডাউন সত্ত্বেও কীভাবে কোন মন্দিরে গিয়ে পুজো দেওয়ার কর্মসূচি হবে তা ঠিক করা হয়েছে। বিজেপির শহর নেতা গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, “রামমন্দিরের ভূমি পুজো উপলক্ষে আমরা শহরকে ফ্লেক্স ও গেরুয়া পতাকায় মুড়ে দিচ্ছি। ঐতিহাসিক দিনের সাক্ষী থাকবে খড়্গপুর।” চুপ করে বসে নেই প্রশাসনও। গোলবাজার রামমন্দিরের পুরোহিত পরমহংস শ্রীহরি বলেন, “লকডাউনের দিনে বাইরের কেউ যাতে মন্দিরে এসে পুজো না দেয় সে বিষয়ে পুলিশ সতর্ক করেছে। আমরা তাই বুধবার রামমন্দির খুলছি না। মন্দিরের ভিতরে পুজো হবে।”

এই আবহে কৌশলী হচ্ছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশ তো তৃণমূলের হয়ে সব মন্দিরে গিয়ে ভয় দেখাচ্ছে। তবে আমরা বিভিন্ন মন্দিরে যেতে পিছপা হব না। আবার পুলিশের সঙ্গে সংঘাতেও যাব না। পুজো-যজ্ঞ সব হবে।” খড়্গপুরের বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা নেতা প্রদীপ সরকার পাল্টা বলেন, “বিজেপি যদি মন্দিরে গিয়ে পুজো দেয় তবে আমরাও মন্দিরে গিয়ে রামের বন্দনা করব বলে প্রশাসনকে জানিয়ে দিয়েছি।”

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্পষ্টই বলছেন, “কেউ বাড়িতে বসে পুজোপাঠ করতেই পারেন। কিন্তু লকডাউন অমান্য করে অকারণ কেউ রাস্তায় বেরলে আমরা ব্যবস্থা নেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন