কম্প্যাক্টর উদ্বোধন। নিজস্ব চিত্র
পরিবর্তনে নেই ট্র্যাডিশনে। তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের প্রথম বর্ষপূর্তিতে সেই ‘আমরা-ওরা’র ছবিই ফুটে উঠল অনুষ্ঠান মঞ্চে।
শনিবার খড়্গপুর পুরসভার তৃণমূল পরিচালিত বোর্ডের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে পুরসভা অদূরে ঝাপেটাপুর মোড়ে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। তার আগে পুরভবনের সামনে দু’টি কম্প্যাক্টরের উদ্বোধন করেন পুরপ্রধান। উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সাংসদ সন্ধ্যা রায়-সহ তৃণমূলের নেতারা। কিন্তু ডাক পাননি বিরোধী কাউন্সিলরেরা। বিরোধীদের দাবি, ওই অনুষ্ঠানে তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। অনুষ্ঠান সম্পর্কে তাঁরা জানতেনও না।
পুরসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “কম্প্যাক্টর এসেছে শুনেছি। কিন্তু সে বিষয়ে আমাদের সঙ্গে একদিনও আলোচনা করা হয়নি। তৃণমূল নিজেদের বর্ষপূর্তি কেন, প্রতি সপ্তাহ পূর্তির অনুষ্ঠান করতে পারে। কিন্তু পুরসভার সম্পত্তি, এই কম্প্যাক্টর উদ্বোধনে আমাদের ডাকা উচিত ছিল।” এই নিয়ে আগামী বোর্ড মিটিংয়ে প্রতিবাদ জানানো হবে বলে রবিশঙ্করবাবু জানান। ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সুখরাজ কৌরও বলেন, “আমরা কোনও আমন্ত্রণ পাইনি। যন্ত্র দু’টির উদ্বোধন অনুষ্ঠান কোনও দলের ব্যক্তিগত বিষয় নয়। তাই সেখানে কাউন্সিলরদের ডাকা উচিত ছিল।”
পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের অবশ্য ব্যাখ্যা, “আমরা খুব অল্প সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। তাই সবাইকে ডাকতে পারিনি। তা ছাড়া, পুরসভা যখন কংগ্রেসের ছিল, তখনও এমনই হত।’’ তবে সময় কতটা কম ছিল, তা সদুত্তর কিন্তু দিতে পারেননি পুর-কর্তৃপক্ষ।
বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে অবশ্য, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের কোনও ছায়া পড়েনি। একই মঞ্চে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী, পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার, জেলা নেতা জহরলাল পাল ও জেলা কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষকে। তবে আসেননি বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া কাউন্সিলর বেলারানি অধিকারী। তিনি বলেন, “তৃণমূলে যোগ দিলেও ওদের দলীয় কোনও সভা-অনুষ্ঠানে যাব না বলেই আমি জানিয়েছিলাম।”
মেদিনীপুরের সাংসদ সন্ধ্যা রায় এ দিন বলেন, “এক বছরের শিশুকে দ্রুত বড় করে তুলেছে আমাদের পুরবোর্ড। এই বোর্ড অনেক দূর এগিয়ে যাবে এই স্বপ্ন দেখি।”
খড়্গপুর বিধানসভায় নিজেদের পরাজয়ের পরে এ দিন পুরসভার মাধ্যমে আরও বেশি কাজের কথা বলছে তৃণমূল। দলের শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনে আমরা এই শহরে তৃতীয় হয়েছি। তা থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও বেশি করে কাজ করতে হবে।”