প্রচারে এমন তোরণই তৈরি করেছে পুরসভা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
তৃণমূলের জেলা সম্মেলনের প্রচারে মেদিনীপুর শহরে তৈরি করা হয়েছে তোরণ। আর সেই প্রচার তোরণে জ্বলজ্বল করছে মেদিনীপুর পুরসভার নাম। আজ, শনিবার শাসকদলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ সুব্রত বক্সী। এই সম্মলনেরই প্রচার তোরণ তৈরি করে দিয়েছে পুরসভা। একটি রাজনৈতিক দলের সম্মেলনের প্রচারে লাগানো তোরণে পুরসভার নাম থাকা নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষ, তবে কি দল আর প্রশাসন মিশে গেল!
রাজনৈতিক দলের সম্মেলনের প্রচারে অর্থ ব্যয় করার নজির দেড়শো বছরের পুরনো মেদিনীপুর পুরসভার ইতিহাসে সে ভাবে নেই বলে দাবি শহরের প্রবীণ কাউন্সিলরদের। বিরোধীরাও প্রশ্ন তুলছেন, রাজনৈতিক দলের সম্মেলনের প্রচার তোরণ তৈরিতে এ ভাবে পুরসভা অর্থ ব্যয় করতে পারে কি? মেদিনীপুরের পুরপ্রধান তৃণমূলের প্রণব বসু বলছেন, “পুরসভা থেকে তৃণমূলকে কিছু তোরণ ‘ডোনেট’ করা হয়েছে। এটা পুরসভা করতেই পারে। এতে অন্যায়ের কিছু নেই!” এরপরেই প্রণববাবুর সংযোজন, “পুরসভা স্বশাসিত সংস্থা। স্বশাসিত সংস্থা নিজেদের সিদ্ধান্তে কিছু করতেই পারে। আমরা তো তৃণমূলেরই! দলের জন্য এ টুকু ‘ডোনেট’ করতে পারি না!” এ বিষয়ে মেদিনীপুরের মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষ বলছেন, “ঠিক কী হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
এ বিষয়ে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভাকে বিঁধতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। সিপিএমের মেদিনীপুর শহর জোনাল কমিটির সম্পাদক সারদা চক্রবর্তীর কথায়, “এটাই তো পরিবর্তন! এখন দল-প্রশাসন সব এক হয়ে গিয়েছে! ” মেদিনীপুর শহর কংগ্রেস সভাপতি তথা কাউন্সিলর সৌমেন খানের কথায়, “দল এক। প্রশাসন এক। দু’টোকে মিলিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। পুরসভা বোধহয় এটা ভুলে গিয়েছে!”
এই ঘটনায় অস্বস্তিতে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলছেন, “সম্মেলনের জন্য জেলার বিভিন্ন এলাকাতেই তোরণ তৈরি হয়েছে। দলের ব্লক নেতৃত্ব, শহর নেতৃত্বকে তোরণ তৈরি করার কথা বলা হয়েছিল। মেদিনীপুরে কী হয়েছে দেখছি। পুরসভা কী করেছে ঠিক জানি না!”
মেদিনীপুর শহরের কলেজ মাঠে আজ, শনিবার শাসকদলের সম্মেলনে বিভিন্ন ব্লকের প্রায় ৩০ হাজার কর্মী আসার কথা। গোষ্ঠীকোন্দল রোধে কড়া বার্তা দিতেই এই সম্মেলনের আয়োজন বলে দলের এক সূত্রে খবর। সম্মেলনের শুরুতে একাধিক তথ্যচিত্র দেখানো হবে। জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূলের উত্থান, দলনেত্রীর সংগ্রামের নানা টুকরো ছবি দেখানো হবে কর্মীদের। বাম আমলে সিপিএমের সন্ত্রাসের নানা ছবিও দেখানো হবে তথ্যচিত্রে। তুলে ধরা হবে রাজ্য সরকারের সাফল্যের খতিয়ানও। দলের কর্মীদের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে।