প্রতীকী ছবি।
এলাকায় তাঁর পরিচিতি, তিনি তৃণমূল নেতা। কেউ অঞ্চল কমিটির, কেউ আবার ব্লক কমিটির সদস্য। অথচ তাঁরাই ভোট প্রচারে গিয়ে বলছেন, ‘দল নয়। ভোট দিন নির্দলকে।’
মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার পর থেকেই কে দলের টিকিট পাবে, তা নিয়ে শাসকদলের অন্দরে চলছিল জোর চর্চা। টিকিট পাওয়ার আগেই অনেকে দেওয়ালে জোড়া ঘাসফুল এঁকে প্রচার শুরু করে দিয়েছিলেন। তবে শেষমেশ তাঁদের অনেকেই দলের টিকিট পাননি। তা বলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরেও আসেননি তাঁদের অনেকেই। ঘাসফুলের বদলে এখন তাঁরাই লাঙল বা বটগাছের প্রতীকে লড়াইয়ের ময়দানে। এক সূত্রে খবর, এই সব নির্দলদের জেতাতে মরিয়া দলেরই একাংশ কর্মী-সমর্থক।
সোমবার সকালে নির্দল প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে বেরিয়ে ছিলেন তৃণমূলের দাসপুর-২ ব্লক কমিটির সদস্য অষ্টম দোলই। তৃণমূলকে ঠেকাতে বাম প্রার্থীদের নিয়ে বাম-গণতান্ত্রিক নামে একটি জোটও তৈরি করেছেন দুধকোমরা পঞ্চায়েতের নেতা অষ্টমবাবু। ওই পঞ্চায়েতের ১৮টি আসনের মধ্যে ৭টি নির্দল এবং ১১জন বাম প্রার্থীদের নিয়ে অষ্টমবাবু পঞ্চায়েত দখল করতে সরাসরি লড়াই করছেন তৃণমূলের সঙ্গে।
তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, দাসপুরের বেনাই পঞ্চায়েতের তৃণমূলের ব্লক কমিটির সদস্য তথা তৃণমূল শিক্ষা সেলের সাধারণ সম্পাদক (খুকুড়দহ চক্র) অজিত কুইলাও শাসক দলের প্রার্থীদের হারাতে মরিয়া। অজিতবাবু তাঁর অনুগামীদের জেতাতে দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছেন বলে দাবি। রাস্তা-সেচের বেহাল দশা থেকে পঞ্চায়েতে স্বজনপোষণের মতো বিষয় উঠে আসছে তাঁর প্রচারে। রাখঢাক না করেই অজিতবাবু বলছেন, “দল আমাকে বহিষ্কার করলেও ক্ষতি নেই।” আর অষ্টমবাবুর কথায়, “সাধারণ মানুষ তো আমাদেরই চাইছেন। দল এখনও তা বুঝল না!”
চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি অমিতাভ কুশারীর ‘ঘনিষ্ট’ সঞ্জিত মিদ্যার অনুগামী হিসেবে পরিচিতরা এ বার টিকিট পাননি। সঞ্জিতবাবু দিন কয়েক আগেও দলীয় বৈঠকে হাজির ছিলেন। স্থানীয় কুঁয়াপুর পঞ্চায়েতের এই নেতাও তৃণমূলের ব্লক কমিটির সদস্য। সোমবার সকাল থেকে লাঙল চিহ্নের প্রার্থীদের নিয়ে প্রচার শুরু করেছেন তিনি। এক সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রচারে বেরিয়ে সঞ্জিতবাবু ভোটারদের বলছেন, ‘দল নয়,ভোটটা দিন নির্দলকেই।’
দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলছেন, “আমরা নির্দলদের লিফলেট বিলি করে দলীয় প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করতে নির্দেশ দিয়েছি। যাঁরা দলের নির্দেশ অমান্য করবেন, তাঁদের দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে।”