২০২৫ সালের সেরা ৫ গান! গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
এ বছরেও মুক্তি পেয়েছে বহু ধারার বাংলা গান। অনেক ক্ষেত্রেই নতুনত্ব দেখা গিয়েছে। সেই সুর দুই বাংলার মাঝের সীমানা পেরিয়ে, ছড়িয়ে পড়েছে সঙ্গীতপ্রেমীদের মধ্যে। শুধুই ছবির গান নয়, এ বছর শ্রোতাদের ‘প্লেলিস্ট’ জুড়ে থেকেছে বেশ কয়েকটি স্বাধীন গানও। কখনও ‘রক্তবীজ ২’ ছবির ‘অর্ডার ছাড়া বর্ডার’-এর ছন্দে পা মেলাতে দেখা গিয়েছে বাঙালিকে, কখনও ‘গৃহপ্রবেশ’ ছবির ‘সইয়াঁ বিনা’ শ্রোতার মন জুড়ে থেকেছে। এ পার বাংলার দুই শিল্পী অঙ্কন কুমার ও প্রগতা নাওহার গাওয়া ‘লং ডিসট্যান্স লভ’-ও কম জমিয়ে রাখেনি সুরপ্রেমীদের। তবে নানা সৃষ্টির মধ্যে কয়েকটি সারা বছর থেকে গিয়েছে দুই বাংলার শ্রোতাদের সঙ্গী হয়ে। ২০২৫ সালে তৈরি তেমন পাঁচটি বাংলা গানকে সেরা বলে বেছে নিয়েছে আনন্দবাজার ডট কম।
‘গুলবাহার’ গানের দৃশ্যায়ন! ছবি: সংগৃহীত।
১) গুলবাহার: নানা বাধাবিপত্তির মাঝে দুই বাংলাকে মিলিয়ে দিয়েছে একটি গান। ঢাকার অলিগলির কথা বলা গানের আনন্দে এ পার বাংলার শ্রোতারাও ভেসে গিয়েছেন। কারও কারও মনে হয়েছে, গানটি কলকাতার লালবাজারের কথাও দিব্যি বলছে। গানটি বানিয়েছেন বাংলাদেশের ঈশান মজুমদার ও শুভেন্দু দাস শুভ। শুভেন্দুর বাজানো ব্যানজো ও গিটারের বড় ভূমিকা রয়েছে এই গানে। ঈশান বাজিয়েছেন হারমোনিয়াম, ডুবকি ও খমক। বছরের একটি বড় সময় জুড়ে ইউটিউব থেকে ইনস্টাগ্রাম, প্রায় সব রিলের সঙ্গী থেকেছে গুলবাহার। যাঁরা রিলে নেই, তাঁরাও গুলবাহারের ছন্দে মেতে থেকেছেন।
কবীর সুমনের গান সৃজিতের ছবিতে। ছবি: সংগৃহীত।
২) সে চলে গেলেও: বহু বছর আগে এই গান বেঁধেছিলেন কবীর সুমন। তবে তাঁর কোনও অ্যালবামে গানটি নেই। বহু অনুষ্ঠানে এই গান গেয়েছেন তিনি। সেখান থেকেই গানটি ছড়িয়ে পড়ে দিকে দিকে। এই গান এ বার সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’ ছবিতে নতুন করে প্রকাশিত হয়েছে। পুরনো গানের রেশ অক্ষত রেখেই নতুন ভাবে আয়োজন করা হয়েছে সুমনের এই গানের। সেই কাজ করেছেন প্রবুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২২ সালে ‘বেলাশুরু’ ছবির পরে এই আবার ফের বাংলা ছবিতে গান গাইলেন কবীর সুমন। বাংলা গানের জগতে পুরনোর রেশের গুরুত্ব আবার ফিরে এসেছে তার মাধ্যমে।
‘মেলার গান’-এ হুলিগানইজ়ম। ছবি: সংগৃহীত।
৩) মেলার গান: বছর জুড়ে নানা গান বেজেছে। কিন্তু বার বার ফিরে এসেছে অনির্বাণ ভট্টাচার্যের ‘হুলিগানইজ়ম’-এর ‘মেলার গান’। বিভিন্ন মেলায় তো এই গান বেজেছে বটেই, সঙ্গে বিয়েবাড়ি থেকে পুজোবাড়ি, মাতিয়ে রেখেছে সব। গানটি লিখেছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য। সুর বেঁধেছেন অনির্বাণ, শুভদীপ গুহ ও দেবরাজ ভট্টাচার্য। গেয়েছেন অনির্বাণ। ও পারের গুলবাহারের সঙ্গে যদি জনপ্রিয়তায় কেউ পাল্লা দিতে পেরেছে, তা হল এই গানটিই। বাংলার সুর-ছন্দে উঠে এসেছে এ বাংলার সাধারণের ইচ্ছা-ভাল লাগার কথা।
সোমলতার ‘চেনা ঘুড়ি’। ছবি: সংগৃহীত।
৪) চেনা ঘুড়ি: সোমলতা আচার্যের গাওয়া এই গান লিখেছেন ঋতম সেন ও দেবায়ন তরফদার। সুর করেছেন অম্লান চক্রবর্তী। একসময় বাংলা গানের সম্ভারে ছিল সুরেলা গানেরই বসত। তবে বর্তমানে ছবি ছাড়া সেই ভাবে সুরেলা গান তৈরি হয় না। শুধুই ভিউ-সংখ্যা বা জনপ্রিয়তার নিরিখে এই গানকে বিচার করা হবে কি না, তা তর্কসাপেক্ষ। তবে এই গান ফের বুঝিয়েছে, গানের ক্ষেত্রে ‘মেলোডি’-র জায়গা এখনও হারিয়ে যায়নি।
দেব-ইধিকার রসায়ন। ছবি: সংগৃহীত।
৫) ঝিলমিল লাগে রে: এই গান জুড়ে রয়েছেন দেব। সম্পূর্ণ আলাদা রূপে টলিতারকাকে এই গানের দৃশ্যায়নে পেয়েছেন অনুরাগীরা। ‘সিক্স প্যাক অ্যাবস্’-এ দেব ও তাঁর সঙ্গে নায়িকা ইধিকা পালের উষ্ণ রসায়নের জন্যই এই গান উঠে এসেছে সেরার তালিকায়। গানটি লিখেছেন প্রসেন, সুর ও পরিচালনা নীলায়ন চট্টোপাধ্যায়ের। গানটি গেয়েছেন ঈশান মিত্র ও শুচিস্মিতা চক্রবর্তী।