খড়্গপুর পুরসভার সামনে রাস্তা জুড়ে এভাবেই পড়ে থাকে ইমারতি দ্রব্য। —নিজস্ব চিত্র।
দাদা তৃণমূল কাউন্সিলর। ভাই ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসা করেন। আরও অনেক ব্যবসায়ীর মতো শহরের রাস্তার একাংশ দখল করে বালি, স্টোনচিপস ফেলে রাখেন তিনিও।
কেন এ ভাবে ব্যবসা করছেন? খড়্গপুর পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা তৃণমূলের শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডের সম্পর্কিত ভাই শশীর জবাব, ‘‘আমি তো একা নই বহু বছর ধরে অনেকেই সারা শহর জুড়ে এ ভাবেই রাস্তার ধারে সামগ্রী রেখে ব্যবসা করছেন। আগে সেগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক তারপর বলবেন।” ভাইয়ের এমন কর্মকাণ্ডে সায় নেই বলে দাবি রবিশঙ্করের। তাঁর কথায়, ‘‘আমার ভাই বলে কী সে অপরাধী হতে পারে না!’’ যদিও এরপরই তিনি বলেন, ‘‘এটা (রাস্তা জুড়ে ইমারতি দ্রব্য) তো শহর জুড়েই চলছে। তাই কাউন্সিলরের একার পক্ষে তো এটা দেখা সম্ভব নয়। তবে এই বিষয়ে নিশ্চয়ই পদক্ষেপ করা উচিত। শুধু পুরসভা কেন, এই সড়ক তো পূর্ত দফতরের মালিকানাধীন তাই তারা বিষয়টি দেখুক।”
তৃণমূলের শহর সভাপতি অবশ্য ভুল বলেননি। শুধু ঝাপেটাপুরে পুরসভার সামনে নয়, মালঞ্চ, কৌশল্যা, পুরাতনবাজারের মতো শহরের একাধিক রাস্তার ধারে ইমারতি সামগ্রী পড়ে রয়েছে। কী করছে পুরসভা? পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “এই তো পুজোর ছুটি কাটল। এ বার আমরা ধীরে ধীরে অভিযান চালিয়ে কড়া পদক্ষেপ করব।” প্রসঙ্গত, একবছর আগে অভিযান চালিয়ে শহরের রাস্তায় পড়ে থাকা ইমারতি সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করে কড়া পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছিল পুরসভা। এমনকী, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বোর্ড মিটিংয়ে সেই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু এখনও সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি। ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবর। কেটে গিয়েছে ন’মাস। এখনও অভিযান হল না? প্রদীপের সাফাই, ‘‘নানা কাজের মাঝে সময়ের অভাবে এই অভিযান চালানো যায়নি। এ বার নিশ্চয় হবে।” বিরোধীদের কটাক্ষ, কাজের মধ্যে কি অভিযান পড়ে না? নাকি শাসকদলের ছত্রছায়ায় থাকা ইমারতি ব্যবসায়ীদের বাঁচাতেই অভিযানে বিলম্ব করা হচ্ছে! কাউন্সিলর পূর্ত দফতরকে হস্তক্ষেপের অনুরোধ করেছেন। পূর্ত দফতরের জেলা এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি জেলাশাসককে জানিয়েছি। স্থানীয় প্রশাসনকেই পদক্ষেপ করতে হবে। পুজোর পরে অভিযান হবে।’’