জগন্নাথ কে? খোঁজ শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে!
শাসক দলের অন্দরে হঠাৎ জগন্নাথের খোঁজ কেন? তা-ও আবার এই চৈত্রে! দলীয় সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরের পুলিশ লাইনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠক থেকেই। ওই বৈঠকে তৃণমূলনেত্রী মমতা অন্যদের সঙ্গে জগন্নাথকে মেদিনীপুরে দলের দায়িত্ব সামলানোর দায়িত্ব দেন। তারপর থেকে শুরু হয়েছে খোঁজ। কারণ, বহু খুঁজেও ওই নামের কোনও নেতার সন্ধান মিলছে না।
চলতি বছরই মেদিনীপুর পুরসভা নির্বাচন রয়েছে। তাই ভোটের আগে দলের সংগঠন আরও গোছাতে চান মমতা। মেদিনীপুরের প্রবীণ বিধায়ক মৃগেন মাইতি অসুস্থ। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে সে কথা জানিয়ে মমতা বলেন, “দীনেন, তুমি একটু মেদিনীপুরটাও নজর দাও। মৃগেনদা যেহেতু অসুস্থ। তুমি, নান্টি, পাপাই, জগন্নাথ মিলে একটা টিম করো। ভাল করে দেখে নাও।” দীনেন রায় খড়্গপুর গ্রামীণের বিধায়ক। নান্টি অর্থাৎ আশিস চক্রবর্তী গড়বেতার বিধায়ক। দলের মেদিনীপুর শহর সভাপতি। পাপাই অর্থাৎ স্নেহাশিস ভৌমিক দলের জেলা সম্পাদক। বছর কয়েক আগেও শহরে যুব সংগঠন করেছেন। কিন্তু জগন্নাথ কে? অনেক খুঁজেও জগন্নাথ নামের কোনও নেতাকে পাননি মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতারা! দলের এক সূত্রের দাবি, শুধু শহর কেন, পুরো জেলায় এই নামে তৃণমূলের কোনও নেতা নেই!
জগন্নাথ নামে যে দলের কোনও নেতা নেই, তা মানছেন জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বও। জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতির কথায়, “ওই নামে মেদিনীপুরে দলের কেউ নেই।” শাসক দলের শহর সভাপতি আশিসবাবুর স্বীকারোক্তি, “ওই নামের কাউকে চিনি না।” কিন্তু দলনেত্রী যে বলে গেলেন? টিম কাকে নিয়ে হবে? দলের এক সূত্র জানাচ্ছে, শীঘ্রই এ বিষয়ে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর সঙ্গে কথা বলতে পারেন জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কারও নাম বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ‘ভুল’ করে জগন্নাথ বলে ফেলেছেন কি না, তা জানতে চাওয়া হবে। সুব্রতবাবু যেমন নির্দেশ দেবেন, সেই মতোই মেদিনীপুরে পদক্ষেপ করা হবে। শুক্রবার মেদিনীপুরের এক তৃণমূল নেতার মন্তব্য, “কোথাও বোধহয় নেত্রী একটা ভুল করে ফেলেছেন!”
নানা মুনির নানা মত। তবে আপাতত তৃণমূলের অন্দরে জোর কদমে চলছে জগন্নাথের সন্ধান। এক তৃণমূল নেতার মন্তব্য, “আমার পাড়ায় জগন্নাথ নামে এক কর্মী রয়েছে বলে শুনেছি! কিন্তু সে তো বুথের কর্মী। তার নাম তো নেত্রীর জানার কথা নয়! কোনও দিন নেতাও হয়নি! নেত্রী কোথাও একটা ভুল করে ফেলেছেন!”
দলনেত্রীর কী ‘ভুল’ হয়েছে প্রাথমিক ভাবে তা খুঁজে বার করারও চেষ্টা করেছেন শাসক দলের জেলার শীর্ষ নেতৃত্ব। নেতৃত্বের মতে, মেদিনীপুরে বিশ্বনাথ পাণ্ডব বলে দলের এক নেতা রয়েছেন। বিশ্বনাথবাবু পুরনো নেতা। এক সময় শহরের উপপুরপ্রধানও ছিলেন। বিশ্বনাথ বলতে গিয়েই কি ‘ভুল’ করে জগন্নাথ বলে ফেলেছেন নেত্রী! শুরু হয়েছে জল্পনা। মেদিনীপুরের এক তৃণমূল নেতার কথায়, “ওঁর (জগন্নাথ) খোঁজ না- পাওয়া গেলে তো টিমটাই হবে না! বৈঠক তো দূরের কথা!”
আপাতত, ভরসা দলের রাজ্য সভাপতির নির্দেশ। সব শোনার পরে সুব্রতবাবু যদি কোনও পথ বাতলে দেন!