গড়বেতা কলেজে গোষ্ঠী সংঘর্ষের মতো ঘটনা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়ে দিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। রবিবার গড়বেতায় তৃণমূলের এক বৈঠক হয়। ছিলেন দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি তথা বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী। ছাত্র- যুব নেতৃত্বের সঙ্গেও কথা বলেন আশিসবাবু। দলের এক সূত্রে খবর, বৈঠকে বিধায়ক স্পষ্ট জানিয়ে দেন, নিজেদের মধ্যে ঝগড়া, মারামারির ঘটনা আর কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। কেউ এমন ঘটনায় জড়ালে দল তাঁর পাশেও থাকবে না।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) গড়বেতা কলেজ ইউনিট সভাপতি কমলাকান্ত ঘোষের অনুগামীদের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক দেবরাজ রায়ের ঘনিষ্ঠদের। শনিবার পাস কোর্সে ভর্তি চলাকালীনই গড়বেতা কলেজ চত্বরে মারামারিতে জড়ায় দু’টি গোষ্ঠী। সাত জন জখম হন। এর মধ্যে আশিস চালক নামে একজনের আঘাত গুরুতর। শনিবারই তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল থেকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রবিবার আশিসের মাথায় অস্ত্রোপচার হয়েছে। শনিবারের ঘটনার পরই টিএমসিপি-র রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত জানিয়েছিলেন, গড়বেতা কলেজের ঘটনা জেনেই দু’পক্ষকে শো-কজ করা হয়েছে। সাত দিন পরে দু’পক্ষকে নিয়ে তৃণমূল ভবনে বৈঠকও ডেকেছেন তিনি। সেই সঙ্গে জয়া বার্তা দিয়েছেন, এই ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। এ দিন বৈঠক শেষে বিধায়ক আশিসবাবুও বলেন, ‘‘গড়বেতা কলেজের ঘটনা সমর্থনযোগ্য নয়। বৈঠকে যা বলার বলে দিয়েছি।’’ পাশাপাশি তাঁর সংযোজন, ‘‘সাংগঠনিক কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’ তৃণমূল সূত্রে খবর, দু’টি অঞ্চল সভাপতি পদে পরিবর্তন হতে পারে।
এ দিন গড়বেতায় কয়েক দফায় তৃণমূলের বৈঠক হয়। ছিলেন অঞ্চল সভাপতি, অঞ্চল প্রধান, জেলা পরিষদ সদস্যরা। নেতৃত্ব জানিয়ে দেন, গোষ্ঠী কোন্দল চলতে পারে না। এতে দলেরই ক্ষতি হয়। মানুষের কাছে দল সম্পর্কে খারাপ বার্তা যায়।
দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে কলেজে ছাত্রছাত্রীদের ‘বাড়াবাড়ি’ বরদাস্ত করা হবে না। দিন কয়েক আগে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও একই বার্তা দিয়েছেন। তারপরেও কেন ক্যাম্পাসে অশান্তিতে নাম জড়াচ্ছে টিএমসিপির সেই প্রশ্ন উঠছে। টিএমসিপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভানেত্রী দেবলীনা নন্দীর অবশ্য দাবি, ‘‘সামান্য গোলমাল হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
তাতে কোন্দলে রাশ টানা যায় কি না, সেটাই দেখার।