TMC

প্রবীণ বাম নেতার সঙ্গে ‘অভব্য আচরণ’, নেত্রীকে শো কজ় করল তৃণমূল, দায়ের এফআইআর-ও!

খড়্গপুরের খরিদা এলাকায় প্রবীণ বাম নেতা অনিল দাসকে রাস্তায় ফেলে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বেবির বিরুদ্ধে। নিজেকে বাঁচাতে একটি রঙের দোকানে ঢুকে গিয়েছিলেন ওই প্রবীণ ব্যক্তি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৫ ১৯:৫০
Share:

(বাঁ দিকে) অভিযুক্ত তৃণমূলনেত্রী বেবি কোলের সেই মারধরের দৃশ্য। (ডান দিকে) প্রহৃত বাম নেতা। —নিজস্ব চিত্র।

রাস্তার ফেলে প্রবীণ বাম নেতাকে মারধর এবং চোখেমুখে কালি ছোড়ায় অভিযুক্ত তৃণমূলনেত্রী বেবি কোলেকে শো কজ় করল তাঁর দল। সেই সঙ্গে দলের তরফে এফআইআর-ও দায়ের করা হয়েছে ওই নেত্রীর বিরুদ্ধে।

Advertisement

সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুজয় হাজরা শো কজ়ের চিঠিতে বেবিকে লিখেছেন, তিনি যে কাজ করেছেন তা দলবিরোধী। ওই কাজের কারণ দর্শাতে হবে। তৃণমূল সূত্রে খবর, এ বিষয়ে কলকাতা থেকে নির্দেশ শীর্ষ নেতৃত্ব সুজয়কে ওই পদক্ষেপ করতে বলেছেন।

পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরের খরিদা এলাকায় প্রবীণ বাম নেতা অনিল দাসকে রাস্তায় ফেলে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বেবির বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে খবর, নিজেকে বাঁচাতে একটি রঙের দোকানে ঢুকে গিয়েছিলেন ওই প্রবীণ ব্যক্তি। সেখান থেকে তাঁকে টেনে বার করে এনে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন), বৃদ্ধের গায়ে রং ঢেলে তাঁকে জুতোপেটা করছেন এক মহিলা। ওই ব্যক্তি কোনও রকম উঠে সেখান থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁকে আবার রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। পরে স্থানীয়দের সাহায্য নিয়ে খড়্গপুর টাউন থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন অনিল নামে ওই ব্যক্তি। ‘আমরা বামপন্থী’ নামে একটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত অনিল বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে স্থানীয় এক মহিলার শৌচাগারের দেওয়াল ভেঙে দিয়েছিল তৃণমূলের লোকেরা। আমি প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। ওই মহিলাকে নিয়ে থানায় গিয়েছিলাম অভিযোগ জানাতে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছি বলেই আমার উপর হামলা হল।’’

Advertisement

অন্য দিকে, ওই ‘হামলা’র খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শোরগোল শুরু হয় রাজনৈতিক মহলে। বিষয়টি নজরে আসার পর পদক্ষেপ করেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয়ের মারফত কলকাতার নেতৃত্ব জানান, প্রবীণ বাম নেতাকে নেত্রীর এই মারধরের ঘটনাকে কোনও ভাবেই অনুমোদন করে না দল। রাজ‍্য তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে জেলা সভাপতিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিষয়টি দেখভাল করার। শো কজ়ের পাশাপাশি ওই নেত্রীকে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে হুঁশিয়ারি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এর পর সুজয় বেবিকে উদ্দেশ্য করে যে চিঠি দেন, তাতে লেখা হয়েছে, খড়্গপুরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ওই নেত্রীর কাজ কোনও ভাবেই সমর্থন করে না তৃণমূল। চিঠিতে লেখা, ‘‘৩০ জুন (সোমবার) আপনি প্রকাশ্যে রাস্তায় যে অশালীন এবং অশোভনীয় কাজ করেছেন এবং নিজের হাতে আইন তুলে নিয়ে এক জন বয়স্ক মানুষকে হেনস্থা করেছেন, তাতে দলের ভাবমূর্তি যথেষ্ট আঘাত পেয়েছে। দল কোনও মতে এই কাজ সমর্থন করে না। এবং ইতিমধ্যেই আপনার বিরুদ্ধে খড়্গপুর টাউন থানায় দলীয় ভাবে এফআইআর রুজু হয়েছে।’’ এফআইআর নম্বর দিয়ে পরিশেষে লেখা হয়, ‘‘দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধের জন্য আপনাকে আগামী তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।’’ এ নিয়ে বেবির প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement