আনিসুর রহমান। —ফাইল চিত্র।
পুর-নির্বাচন ঘিরে গত সেপ্টেম্বরে তৃণমূলের মধ্যে তীব্র গোষ্ঠীবিবাদ তৈরি হয় পাঁশকুড়ায়। বিদ্রোহী কাউন্সিলর আনিসুর রহমান পরে পুরপ্রধান পদ থেকে ইস্তফা দিলেও জট পুরোপুরি কাটেনি। আর তার প্রভাব পড়ছিল পুরসভার প্রশাসনিক কাজ পরিচালনাতেও। পাঁশকুড়া পুরসভায় দুই গোষ্ঠীর বিবাদ মেটাতে তাই তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব উদ্যোগী হয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে খবর।
সূত্রের খবর, পাঁশকুড়ায় বিবদমান দুই কাউন্সিলরকেই পদ দিয়ে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফে দেওয়া হয়েছে। সেই মতো নন্দকুমার মিশ্রকে পুরপ্রধান ও আনিসুর রহমানকে উপপুরপ্রধানের পদে বসানোর প্রস্তাব রয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। বিবদমান দুই নেতার অবস্থানে সেই সমঝোতার ইঙ্গিতও মিলেছে সোমবার। এ দিন আনিসুর বলেন, “দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে পুরপ্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়াব আমি। মহকুমাশাসকের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। দলের নির্দেশে নন্দকুমারবাবুর বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথাও বলেছি। এর পর তিনি যাতে পুরপ্রধান পদে বসতে পারেন, সে জন্য দল যা বলবে, তা মেনে চলব।” আনিসুরের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি নন্দকুমার মিশ্র।
গত ৬ সেপ্টেম্বর পুরপ্রধান নির্বাচনে দলের প্রস্তাবিত প্রার্থী নন্দকুমারবাবুকে হারিয়ে পুরপ্রধান হয়েছিলেন দলের কাউন্সিলর আনিসুর। এর পরেই দলবিরোধী কাজের অভিযোগে আনিসুরকে ছ’বছরের জন্য ‘সাসপেন্ড’ করে তৃণমূল।
এ দিকে, পুরপ্রধানের হাতে প্রশাসনিক ভাবে আর্থিক ক্ষমতাও হস্তান্তরিত হয়নি। ফলে পুরসভায় নিজস্ব তহবিলের আয় কমে যাওয়ায় আর্থিক সঙ্কটের জেরে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পুরসভার অস্থায়ী কর্মীরা অক্টোবর মাসের বেতনও পাননি বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যে অবশ্য আনিসুর পদত্যাগপত্র জমা দিলেও সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পুরবোর্ডের বৈঠক ডেকে সেই পদত্যাগ গৃহীত না-হওয়ায় পদেই রয়েছেন আনিসুর।
গোষ্ঠীবিবাদ মিটিয়ে কত দিনে এই জট কাটাতে পারেন তৃণমূল নেতৃত্ব, সে দিকেই তাকিয়ে পাঁশকুড়া।