বাঘের মৃত্যুতেও ঠেকানো গেল না শিকারের নামে জঙ্গলে তাণ্ডব। সোমবার শালবনির কালীবাসার জঙ্গলে শিকার উত্সব হয়েছে। দলে দলে লোক জঙ্গলে ঢুকে শিকার করেছেন। শিকার যে হয়েছে তা মানছে বন দফতরও। মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “অনেককে বোঝানো গিয়েছে। আবার অনেকে বোঝেননি। জনসচেতনতা গড়ে তোলার সব রকম চেষ্টা হচ্ছে।” জঙ্গলে তাণ্ডব ঠেকাতে এ দিন সকালেই ওই এলাকায় পৌঁছন বনকর্তারা। পুলিশ আসে। তাও শিকার আটকানো যায়নি।
দিন কয়েক আগে একদল শিকারির হাতেই চাঁদড়ার বাগঘোরার জঙ্গলে খুন হয়েছে রয়্যাল বেঙ্গল। সেই দিনও শিকার উত্সব ছিল ওই জঙ্গলে। বস্তুত, এই সময়ে আদিবাসীরা শিকার করেন জঙ্গলে। এই ‘শিকার উৎসব’ শুরু হয়েছে গত ২৭ মার্চ থেকে। চলবে আগামী ৫ মে পর্যন্ত। বিশেষ বিশেষ দিনে এক- এক জঙ্গলে শিকার করা হয়। সোমবার যেমন কালীবাসার জঙ্গলে শিকার উৎসব হয়েছে। এক আদিবাসী যুবকের কথায়, “এটা প্রথা। কিছু পাই না- পাই, উত্সবের দিনগুলোয় আমরা জঙ্গলে যাবো। তবে খালি হাতে খুব কম দিনই ফিরে এসেছি। অন্য কিছু না- হলেও বনশুয়োর মারি। বনশুয়োর শিকার করাটা খুব কঠিন নয়।” এ ভাবে শিকার ঠেকাতে আদিবাসী সমাজের প্রবীণদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জেলার বনকর্তারা। দফতর সূত্রে খবর, ফের বৈঠক হবে। জেলার এক বনকর্তা বলেন, “পশুপাখি মারাটা প্রথা হতে পারে না। এতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রশ্নের মুখে পড়ে। পরিবেশ রক্ষার উদ্যোগও মার খায়।”
এ দিন সকাল থেকে কেউ কাঁদে তির-ধনুক, কেউ টাঙ্গি, বল্লম নিয়ে জঙ্গলে আসতে শুরু করেন। বন দফতরের দাবি, শিকার ঠেকাতে চেষ্টার কম করা হচ্ছে না। লালগড়ে গাঁধীগিরির পথেও হেঁটেছিল দফতর। মেদিনীপুরের এডিএফও পূরবী মাহাতো আদিবাসী সমাজের প্রবীণ নেতাদের হাতে-পায়ে ধরে অনুরোধ করেছিলেন। এ দিনও আদিবাসী যুবকদের জঙ্গলে না যাওয়ার অনুরোধ করেন বনকর্তারা। অবশ্য তেমন সাড়া মেলেনি।