হেঁসেল সামলে ভোটের মাঠে টক্কর দুই জায়ের

লড়াইটা এ বার মুখোমুখি। হেঁসেল থেকে সোজা পুরযুদ্ধের ময়দানে নেমে সহজে জমি ছাড়তে রাজি নন কেউই। তবে ব্যক্তিগত সম্পর্কে রাজনীতির আঁচ পড়ুক, তাও চান না দুই জা। শাসক-বিরোধী লড়াইয়ের আগে তাল ঠুকছেন তাঁদের স্বামীরাও। কোমর বেঁধে প্রচারে নেমেছেন তাঁরাও।

Advertisement

অভিজিত্‌ চক্রবর্তী

ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৫ ০০:২৯
Share:

তৃণমূল প্রার্থী দীপা এবং সিপিএম প্রার্থী সোমা।

লড়াইটা এ বার মুখোমুখি।

Advertisement

হেঁসেল থেকে সোজা পুরযুদ্ধের ময়দানে নেমে সহজে জমি ছাড়তে রাজি নন কেউই। তবে ব্যক্তিগত সম্পর্কে রাজনীতির আঁচ পড়ুক, তাও চান না দুই জা। শাসক-বিরোধী লড়াইয়ের আগে তাল ঠুকছেন তাঁদের স্বামীরাও। কোমর বেঁধে প্রচারে নেমেছেন তাঁরাও।

আসন্ন পুরভোটে ঘাটাল পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন দীপা মণ্ডল। ওই ওয়ার্ডেই সিপিএম প্রার্থী হয়েছেন সম্পর্কে দীপাদেবীর জা সোমা মণ্ডল। ঘাটাল শহরের আড়গোড়ার বাসিন্দা দীপাদেবীর স্বামী অমরবাবু তৃণমূলের সমর্থক। তাঁর একটি হোটেল ছিল। কিন্তু এখন সেটি বন্ধ। সোমাদেবীর স্বামী দুলাল মণ্ডল দীর্ঘদিন বাম রাজনীতি করেন। তিনি
পেশায় ব্যবসায়ী।

Advertisement

একই রান্নাঘরে মুখোমুখি বসে রান্না করেন দীপাদেবী ও সোমাদেবী। লড়াইটা অবশ্য বাড়ির বাইরেই রাখতে চান তাঁরা। তাঁদের কথায়, “বাড়িতে আমরা যেমন দুই জা, তেমনি থাকব। ভোটে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করলেও সংসারে তার কোনও প্রভাব পড়বে না।”

গত বছর ঘাটালের উপ-পুরপ্রধান তৃণমূলের উদয়শঙ্কর সিংহরায় ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হয়েছিলেন। এ বার ওই ওয়ার্ডটি মহিলা সংরক্ষিত। তাই উদয়শঙ্করবাবু এ বার এক নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তৃণমূলের দুর্গ বলে পরিচিত ২ নম্বর ওয়ার্ডে শাসক দলকে হারাতে জোর কদমে প্রচার শুরু করেছে সিপিএম। দুর্নীতিমুক্ত পুরসভা গড়া ও শহরের উন্নয়নের জোয়ার আনার বার্তা নিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচারেও যাচ্ছেন
সিপিএম প্রার্থী। নিজেদের জয় নিয়ে অবশ্য আশাবাদী দু’জনেই। সোমাদেবীর কথায়, “আমিই জিতব। কারণ, তৃণমূলের শাসন এখন আর মানুষ সহ্য করতে পারছে না।” জয় নিয়ে প্রত্যয়ী দীপাদেবীরও বক্তব্য, “দলনেত্রীকে ভালবেসেই দলে আসা। তৃণমূল ছাড়া অন্য কোনও দলকেই সাধারণ মানুষ পছন্দ করেন না।”

যদিও প্রার্থী তালিকা নিয়ে কোন্দলের জেরে এখনও প্রচার শুরু করতে পারেনি তৃণমূল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক কর্মীর কথায়, “দলীয় কর্মীদের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে দীপাদেবীকে প্রার্থী করায় ক্ষোভ একটা রয়েছেই। এ নিয়ে স্থানীয় কর্মীদের সঙ্গে দলীয় নেতৃত্বকে আলোচনায় বসতেই হবে। না হলে সমস্যা আরও বাড়বে।” উল্লেখ্য, প্রার্থী পদ না মেলায় এই ওয়ার্ড থেকেই নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন উদয়শঙ্করবাবুর খুড়তুতো দাদা গৌতম সিংহরায়ের স্ত্রী শর্মিষ্ঠা সিংহরায়। এ বিষয়ে তৃণমূল প্রার্থী দীপাদেবী বলেন, “দল আমাকে টিকিট দিয়েছে। তাই প্রচার -সহ সব বিষয়েই দলীয় নেতৃত্ব চিন্তাভাবনা করবেন।” এ ব্যাপারে তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের বক্তব্য, “দলীয় প্রার্থীকে জেতাতে জোর কদমে প্রচারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশের বিরোধিতা করলে ব্যবস্থা
নেওয়া হবে।”

শেষ হাসি কে হাসেন, তা জানতে আপাতত অপেক্ষা ছাড়া গতি নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন