প্রতিবাদের অচেনা ছবি শালবনিতে তোলাবাজি, পুলিশের গাড়িতে ইট

রাস্তায় লরি থামিয়ে হাত পেতে টাকা নিচ্ছে পুলিশ— এ দৃশ্য এখন চোখ সওয়া হয়ে গিয়েছে। পুলিশের এই তোলাবাজির প্রতিবাদ সচরাচর কেউ করে না। মঙ্গলবার অবশ্য প্রতিবাদের সেই বিপরীত দৃশ্যই দেখল শালবনি। পুলিশের গাড়ি ঘিরে হল বিক্ষোভ, ইটের ঘায়ে ভাঙল গাড়ির কাচও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৬ ০১:৩৪
Share:

জাতীয় সড়কে পুলিশের গাড়ি ঘিরে চলছে বিক্ষোভ ।

রাস্তায় লরি থামিয়ে হাত পেতে টাকা নিচ্ছে পুলিশ— এ দৃশ্য এখন চোখ সওয়া হয়ে গিয়েছে। পুলিশের এই তোলাবাজির প্রতিবাদ সচরাচর কেউ করে না। মঙ্গলবার অবশ্য প্রতিবাদের সেই বিপরীত দৃশ্যই দেখল শালবনি। পুলিশের গাড়ি ঘিরে হল বিক্ষোভ, ইটের ঘায়ে ভাঙল গাড়ির কাচও।

Advertisement

এ দিন দুপুরে শালবনির সুন্দ্রার কাছে হাতমারিতে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে এই ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, একটি বড় লরি চন্দ্রকোনা রোডের দিক থেকে মেদিনীপুরের দিকে আসছিল। হরিয়ানার ওই লরিটি হায়দরাবাদ থেকে রওনা হয়েছিল। গন্তব্য ছিল গুয়াহাটি। হাতমারিতে গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশকর্মীরা লরিটিকে আটকান। এক পুলিশকর্মী হাত বাড়িয়ে চালকের কাছ থেকে ৫০০ টাকা চান বলে অভিযোগ। লরি
চালক সুনীল কুমার তা দিতে না চাওয়ায় পুলিশকর্মীরা তাঁকে মারধর করে বলে অভিযোগ। বড় লরিটি রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে থাকায় ততক্ষণে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে জাতীয় সড়ক। একের পর এক বাস-লরি দাঁড়িয়ে পড়ায় দীর্ঘ যানজট হয়।

গোটা ঘটনা জানতে পেরে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ্যে আসে। প্রথমে অন্য লরি চালকদের একাংশ প্রতিবাদে এগিয়ে আসেন। পরে স্থানীয় বাসিন্দারাও তাতে সামিল হন। প্রহৃত লরি চালক তাঁদের সামনেই বলেন, “পুলিশকে টাকা দিইনি বলেই মারধর করেছে।” এতে আগুনে ঘি পড়ে। ক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখা শুরু করে। তাদেরই কেউ কেউ পুলিশের গাড়ি লক্ষ করে ইটও ছোড়ে। ভেঙে যায় গাড়ির কাচ। স্থানীয় বাসিন্দা অভীক ঘোষ,
চন্দন প্রামাণিকরা বলেন, “পুলিশের তোলাবাজির জন্য তো দুর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারত!”

Advertisement


পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের পরে । নিজস্ব চিত্র।

দুর্ঘটনার নজিরও কম নেই। ফেব্রুয়ারি মাসেই বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে গতি বাড়ানো লরি পিষে দিয়েছিল চার শিশুকে। সে দিনও জনরোষে পুড়েছিল পুলিশের গাড়ি। পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন সড়কেও পুলিশের তোলাবাজির হাত থেকে রেহাই পেতে দ্রুত গতিতে চলা লরি বা ট্রাক দুর্ঘটনায় পড়েছে একাধিক বার। কখনও নিরীহ পথচারীর মৃত্যু হয়েছে, কখনও দুর্ঘটনার বলি হয়েছেন পুলিশকর্মীর। মাস কয়েক আগে ঘাটালে প্রাণ গিয়েছিল কর্মরত পুলিশকর্মীর।

এ দিনের ঘটনার পরে শালবনি থানা থেকে বাড়তি পুলিশ বাহিনী পৌঁছে অবস্থা আয়ত্তে আনে।
ফের জাতীয় সড়কে স্বাভাবিক যান চলাচল শুরু হয়।

পুলিশ অবশ্য লরি আটকে তোলা চাওয়ার অভিযোগ মানতে চায়নি। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর বলেন, “লরি দ্রুত গতিতে যাচ্ছিল বলেই পুলিশ দাঁড় করায়। তখন সামান্য একটা গোলমাল হয়। বড় কিছু হয়নি।” রাস্তায় লরি আটকে কি পুলিশ টাকা চেয়েছিল? জেলা পুলিশ সুপারের জবাব, “মিথ্যা অভিযোগ।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন