Coronavirus

পরিযায়ীদের বিরক্ত করলে বয়কটের হুঁশিয়ারি সুব্রতর

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ আমপান পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেই এ দিন পশ্চিম মেদিনীপুরে আসেন সুব্রত।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২০ ০৪:৪২
Share:

ঘাটালে পঞ্চায়েত মন্ত্রী। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

পরিযায়ী শ্রমিকদের যত দ্রুত সম্ভব একশো দিনের কাজে শামিল করতে হবে। ফলে পঞ্চায়েতগুলিকে আরও সক্রিয় হতে হবে। মঙ্গলবার দিনভর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় একাধিক বৈঠক করে এই বার্তা দিলেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। দাঁতনের বৈঠকে বললেন, ‘‘পরিযায়ীদের বিরক্ত করলে রং না দেখে সামাজিক বয়কট করতে হবে।’’

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ আমপান পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেই এ দিন পশ্চিম মেদিনীপুরে আসেন সুব্রত। একাধিক বৈঠকে যোগ দেন তিনি। প্রতিটি বৈঠকে জোর দেন কী ভাবে একশো দিনের কাজের মাধ্যমে পরিযায়ী শ্রমিকদের রোজগারের ব্যবস্থা করে দেওয়া যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধীদের অনুরোধ করেছেন, এই বিপর্যয়ের সময়ে ক্ষুদ্র স্বার্থে যেন রাজনীতি না করা হয়। তবে সুব্রতের এ দিনের তৎপরতাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশ। তিনি বলেন, ‘‘নিজেদের দলের কাটমানি খাওয়া নেতাদের কথা ভেবেই বয়কটের কথা। এতে দ্বিমত নেই। কিন্তু কতটা হবে সে নিয়ে সন্দেহ থেকে যাচ্ছে।’’

এ দিন সকালে প্রথম বৈঠক শুরু হয় ঘাটালের টাউন হলে। কোথায়,কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার খোঁজখবর নেন সুব্রত। দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়। ভেঙে যাওয়া বাড়ি দ্রুত সংস্কারের পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী। এরপরই একশো দিনের কাজের প্রকল্প নিয়ে জনপ্রতিনিধি এবং আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। সেখানে লকডাউনে কাজ হারা পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রকল্পের আওতায় এনে কাজ দেওয়ার কথা বলা হয়। একশো দিনে রাজ্যের সেরা কাজের জন্য চন্দ্রকোনা ১ এবং ২ দুই বিডিওর কাজে প্রশংসা করে মন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, “এখন সাধারণ মানুষের নগদ টাকা সবচেয়ে জরুরি। সেটা সম্ভব এই প্রকল্পের মাধ্যমেই। তাই পরিযায়ী সহ সমস্ত স্তরের মানুষকে বেশি কাজ পান, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।”

Advertisement

ঘাটালের পর মেদিনীপুরের কালেক্টরেটে এসে জেলাস্তরের এক প্রশাসনিক বৈঠক করেন সুব্রত। এই বৈঠকেও পঞ্চায়েতমন্ত্রী নির্দেশ দেন, ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের কারখানায় কাজ দেওয়া সম্ভব নয়। তাঁদের একশো দিনের কাজ দিতে হবে। পঞ্চায়েতমন্ত্রী বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের সবক’টা কাজ এখন খুব সক্রিয়তার সঙ্গে করতে হবে। মানুষকে বাঁচাবার সবথেকে বড় হাতিয়ার এখন পঞ্চায়েত।’’ তিনি বলেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকদের দেখাশোনা করা, কোয়রান্টিনে রাখা এ সব ব্যাপারগুলি তো রয়েছেই, পাশাপাশি তাঁদের একশো দিনের কাজ দিতে হবে।’’ কেন্দ্রের থেকে কী সহযোগিতা মিলছে? পঞ্চায়েতমন্ত্রীর জবাব, ‘‘ওটা না বলাই ভাল!’’ পরক্ষণে তাঁর সংযোজন, ‘‘যে পরিমাণ সহযোগিতা পাওয়ার কথা, সেই পরিমাণ সহযোগিতা পাচ্ছি না।’’

বিকেলে দাঁতন ভট্টর কলেজের প্রশাসনিক বৈঠকে আসেন মন্ত্রী। সূত্রের খবর, মোহনপুর, দাঁতন ২ ব্লকে পান ও বাদাম চাষের ব্যাপক ক্ষতির কথা তুলে ধরেছেন বিডিওরা। এই বৈঠকেও এলাকায় ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের একশোদিনের কাজে অন্তর্ভুক্ত করার কথা মন্ত্রীকে জানিয়েছেন প্রত্যেকটি ব্লকের বিডিও।

সুব্রতের কথায়, ‘‘এই পরিযায়ী শ্রমিকদের আমরা যদি স্বীকৃতি দিতে পারি তাহলে তাদের আশীর্বাদ নিয়ে আমাদের সবার জীবন ধন্য হয়ে যেতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন