ফাইল চিত্র।
আসব আসব করি, আসিতে না পারি। খামখেয়ালি আবহাওয়ার জেরে বস্তুত এমন দশা ইলিশের। আবহাওয়ার তুঘলকি আচরণই বাজারে ইলিশের জোগানে হেরফের ঘটাচ্ছে বলে দাবি মৎস্যজীবীদের।
পূর্ব মেদিনীপুরে ইলিশের সবচেয়ে বড় বন্দর দিঘা মোহনা। মৎস্যজীবীদের দাবি, ইলিশ ধরার অনুকূল পরিস্থিতি হলো, পুবালি হাওয়া বাইবে। দিনভর চলবে ঝিরঝিরে বৃষ্টি আর সেই সঙ্গে মেঘলা আবহাওয়া। এমন পরিস্থিতি থাকলে ইলিশের জোগান যে বাড়ে তা গত বর্ষাতেই দেখা গিয়েছে। কিন্তু এ বার প্রথম থেকেই আবহাওয়া প্রতিকূল। যার জেরে ইলিশের জোগানেও টান পড়ছে। তবে কয়েক সপ্তাহ আগে আবহাওয়া ইলিশের অনুকূল হওয়ায় বাজারে ইলিশের জোগান বাড়ে। টানা বৃষ্টি ও মেঘলা আবহাওয়া চলেছিল টানা দিন দশ-বারো। তারই জেরে গত ৩১ জুলাই ট্রলারে ইলিশ এসেছিল ৫ টন। ১ আগস্ট ইলিশ এসেছিল ৬ টন। কিন্তু তার পরেই ফের টান পড়েছে জোগানে। কারণ টানা বৃষ্টি না থাকা এবং মেঘলা দিনের অনুপস্থিতি। যার জেরে গত ২ অগস্ট ইলিশের জোগান কমে ২ টনে দাঁড়ায়।
দিঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের এই হিসেবই বলে দিচ্ছে সমুদ্রের রুপোলি শস্য আসব আসব করেও আসছে না। প্রায় একই ছবি কাঁথির শৌলা, পেটুয়াঘাট, খেজুরিতেও। মৎস্যপ্রিয় বাঙালির পাতে ইলিশের জোগান নিয়ে এ ভাবেই লুকোচুরি খেলছে আবহাওয়া।
দিঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ও ইলিশ ব্যবসায়ী শ্যামসুন্দর দাস বলেন, ‘‘এ বার বর্ষা সে ভাবে হচ্ছে না দিঘা উপকূলে। সবচেয়ে বড় কথা পুবালি হাওয়ার দেখা তেমন নেই। মাঝে কদিন নিম্নচাপের ফলে অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় জালে ইলিশ উঠেছিল। কিন্তু এই মুহূর্তে ফের টান পড়েছে।’’
তবে এখনই হতাশ হওয়ার মতো কিছু নেই বলে জানিয়েছেন দিঘা মোহনার মৎস্যজীবীরা। তাঁরা জানান, আবহাওয়া দফতরের নিষেধাজ্ঞা না থাকায় এখন সমুদ্রে রয়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ ট্রলার। তা ছাড়া মেঘলা আকাশের সঙ্গে সঙ্গে ঝিরঝিরে বৃষ্টিও শুরু হয়েছে। আর এমন আবহাওয়ায় ইলিশের পক্ষে আদর্শ। তাই ওই সব ট্রলার ফিরলে ভাল পরিমাণে এবং ভাল ওজনের ইলিশ মিলবে বলেই তাঁদের ধারণা।