খুনের মামলা প্রত্যাহারের সরকারি আবেদন খারিজ করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আদালত। বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (তৃতীয়) মৌ চট্টোপাধ্যায় এই নির্দেশ দেন।
জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে পাঁশকুড়ার কনকপুরে জামিয়া ইসলামিয়া মাজাহিরুল উলুম নামে একটি মাদ্রাসায় অর্থিক তছরুপের অভিযোগ ঘিরে পরিচালন সমিতির ভিতরেই গোলমাল শুরু হয়। একাংশ কর্মকর্তাদের কাছে হিসেব চাওয়ায় সমিতির অন্য সদস্যদের সঙ্গে বিরোধ বাধে। ওই বছর ৩০ মার্চ ভোরে মাদ্রাসার চত্বরে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন বেশ কয়েকজন। পরে আব্দুল করিম ও আব্দুল রহিম নামে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়। তাঁদের দাদা শেখ আব্দুর রেজ্জাকের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই মাদ্রাসার কর্মকর্তা মৌলানা হাবিবুর রহমান-সহ মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করে। চার্জশিটও জমা হয়। অভিযুক্ত সাত জন এখন জেল হেফাজতে রয়েছেন। বাকি চারজন জামিনে মুক্ত।
মামলা চলাকালীন অভিযুক্তরা রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানায় ওই মামলা প্রত্যাহারের জন্য। তার প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের লিগাল রিমেমব্রান্সার চলতি বছরের গত ২ মার্চ জেলায় সরকার পক্ষের আইনজীবীকে আব্দুল মোহিতকে জানা, শান্তি রক্ষার্থে ও সামাজিক সৌহার্দ্য, পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখার স্বার্থে ওই মামলাটি প্রত্যহারের জন্য সরকারের কোন আপত্তি নেই। তারপরই মামলা প্রত্যাহারের জন্য অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারকের কাছে আবেদন জানান সরকারি আইনজীবী। কিন্তু আব্দুর রেজ্জাক এই আবেদনের বিরোধিতা করে মামলা করেন। বৃহস্পতিবার সেই মামলার প্রেক্ষিতেই সরকার ওই পক্ষের আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক।
সরকারি আইনজীবী আব্দুল মোহিত বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে পাঁশকুড়ার ওই মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল। তা খারিজ হয়েছে।’’ আব্দুর রেজ্জাকের আইনজীবী সমীর ঘোড়ই বলেন, ‘‘সুবিচারের আশায় রয়েছে নিহতদের পরিবার। এ ধরনের গুরুতর অপরাধের মামলা প্রত্যাহার করা হলে সমাজের কাছে বিরূপ বার্তা যাবে।’’