tourism

নয়া পর্যটন কেন্দ্র গড়ার তোড়জোড়

কানাইচট্টায় প্রাথমিক ভাবে পরিকাঠামো গড়ে তুলতে এগিয়ে এসেছে তৃণমূল পরিচালিত দেশপ্রাণ পঞ্চায়েত সমিতি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:১৩
Share:

কানাইচট্টার সৈকত। নিজস্ব চিত্র

মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ আর সুন্দর সৈকতের জন্য মন্দারমণির অদূরে ইতিমধ্যেই পর্যটকদের নজর কেড়েছে কানাইচট্টা। কাঁথি শহর থেকে জুনপুট হয়ে কিছুটা এগোলেই পেটুয়াঘাট মৎস্য বন্দর। আর মৎস্য বন্দর লাগোয়া এই গ্রামের পরিবেশকে কাজে লাগিয়েই সৈকতের পর্যটন মানচিত্রে যুক্ত করার উদ্যোগ শুরু হয়ে‌ছে।

Advertisement

কানাইচট্টায় প্রাথমিক ভাবে পরিকাঠামো গড়ে তুলতে এগিয়ে এসেছে তৃণমূল পরিচালিত দেশপ্রাণ পঞ্চায়েত সমিতি। অখ্যাত গ্রামকে রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে পরিচয় করাতে নতুন রূপে সাজিয়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে জোর কদমে। সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার রাস্তা তৈরি থেকে শুরু করে পানীয় জল পরিষেবা চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি পর্যটকেরা যাতে এখানে এসে থাকতে পারেন তার জন্য সরকারি উদ্যোগে চলছে অতিথি নিবাস তৈরির কাজ। নাম দেওয়া হয়েছে ‘সাগর সঙ্গমে সৈকত ভূমি’। এর জন্য ২৬ লক্ষ টাকা খরচ করছে পঞ্চায়েত সমিতি।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগেও এ সব ভাবা যায়নি। এমনকি কানাইচট্টা নামটুকুও তেমন শোনা যেত না। ম্যানগ্রোভ আর ঝাউয়ের জঙ্গলে ভরা এখানকার সৈকত। প্রাকৃতিক পরিবেশ খুবই মনোরম এবং সুন্দর। প্রকৃতি এখানে যেন উদারহস্ত। দিগন্ত বিস্তৃত ঝাউবন, বিস্তীর্ণ বেলাভূমি আর সেই সঙ্গে লাল কাঁকড়ার লুকোচুরি —অভাবে নেই কোনও কিছুরই। পাশ্ববর্তী কাঁথি শহর কিংবা আশপাশের এলাকার ভ্রমণপিপাসু বহু মানুষ এখানে নিয়মিত বেড়াতে আসেন। তবে গত কয়েক বছর ধরে দি‌ঘা, মন্দারমণি বা তাজপুরে বেড়াতে আসা কৌতূহলী পর্যটকদের অনেকেই এখানে ঘুরতে এসেছেন। নির্জন সৈকতে আুপ্লত তাঁদের অনেকেই। যদিও পর্যটনের পরিকাঠামো বলতে কিছুই ছিল না। এখান থেকে খানিক দূরেই দারিয়াপুরে ইতিহাস বিজড়িত কপালকুণ্ডলা মন্দির। আছে লাইট হাউস, পেটুয়াঘাটের মতো এশিয়ার মহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মৎস্য বন্দর, রসুলপুর নদী এবং বঙ্গোপসাগরের মোহনা। নদীর অপরপ্রান্তে প্রাচীন হিজলি মসনদ ই আলা। এতকি‌ছু নিয়েই তাই এই এলাকায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে নতুন আকর্ষণ হতে চলেছে কানাইচট্টা।

Advertisement

কিছুদিন আগে সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার জন্য পঞ্চায়েতের তরফে মাটির রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। ওই রাস্তা পাকা করার জন্য জেলা পরিষদের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। তারও অনুমতি মিলেছে বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর। একই সঙ্গে সমুদ্র সৈকতের ধারে দুটি সাবমার্সিবল পাম্প বসানো হয়েছে পানীয় জলের জন্য। পর্যটকদের থাকার জন্য অতিথি নিবাস নির্মাণের কাজও চলছে জোর কদমে।

স্থানীয় বাসিন্দা সূর্যনারায়ণ জানা বলেন, ‘‘সরকারি উদ্যোগে অতিথি নিবাস সহ কিছু কিছু পরিকাঠামো গড়ে উঠছে। এতে অখ্যাত এই এলাকার গুরুত্ব অনেকখানি বেড়েছে। এতে স্থানীয় মানুষদের কর্মসংস্থান হবে বলে আমরা আশাবাদী।’’ তৃণমূল নেতা শ্যামল জানা বলেন, ‘‘রাস্তা ছাড়াও শৌচালয়, বসার জায়গা-সহ অন্যান্য পরিকাঠামো তৈরির জন্য আমরা ব্লক প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’’ দেশপ্রাণ ব্লকের বিডিও শুভজিৎ জানা বলেন, ‘‘পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকায় অতিথি নিবাসের কাজ চলছে। বাকি পরিকাঠামো গড়ার কাজও শীঘ্র শুরু হবে। কানাইচট্টাকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে সব রকম উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন