প্রতীকী ছবি।
নির্দেশ জারি করে তিনদিনের মাথায় তা ‘শিথিল’ করলেন ঝাড়গ্রামের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রকাশ মৃধা।
গত শুক্রবার, ১০ এপ্রিল সিএমওএইচ নির্দেশ জারি করে জানিয়েছিলেন, জেলার সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসক-সহ সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা লকডাউনের মধ্যে জেলার বাইরে যেতে পারবেন না। জেলার বাইরে থেকে কোনও সরকারি বা বেসরকারি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ঝাড়গ্রাম জেলায় আসতেও পারবেন না। পরের দিন জেলা পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়ে সেই নির্দেশ জানিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার অনুরোধ করেন জেলার ওই স্বাস্থ্যকর্তা। সোমবার, ১৩ এপ্রিল ফের পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়ে সিএমওএইচ জানিয়েছেন, তাঁর দেওয়া তালিকা অনুযায়ী স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী সরকারি ও বেসরকারি কর্মীরা আন্ত জেলার মধ্যে যাতায়াত করতে পারবেন।
জেলার সরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের বেশির ভাগ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা জেলার বাইরে থাকেন। পরিচয়পত্র দেখিয়ে জেলার সীমানা পেরিয়েই এতদিন যাতায়াত করছিলেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। সরকারি হাসপাতালে গড়ে ৫ থেকে ৬ দিন পরিষেবা দেন চিকিৎসকরা। ঝাড়গ্রামে তাঁদের থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে। অফ ডে গুলিতে তাঁরা বাড়িতে ফিরে যান। হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মীদের অনেকেই আসেন পশ্চিম মেদিনীপুর ও বাঁকুড়া জেলা থেকে। তাঁরাও কাজের দিনগুলিতে ঝাড়গ্রামে থাকেন। একদিন বাড়িতে ফিরে যান।
শুক্রবার ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটির সুপারের কাছে গিয়ে চিকিৎসকদের একাংশ জানিয়ে দেন, এমন নির্দেশে তাঁদের পক্ষে কাজ করা সম্ভব নয়। সরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, অনেকেরই বাড়িতে বৃদ্ধ অসুস্থ বাবা-মা রয়েছেন। তাঁদের দেখাশোনা ও ওষুধপত্র দেওয়ার জন্য বাড়িতে যেতে হয়। আবার কারও বাড়িতে শিশুসন্তান রয়েছে। বহু ক্ষেত্রে এমন উদাহরণও রয়েছে, স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই চিকিৎসক। দু’জনে ভিন্ন জায়গায় কর্মরত। শিশুসন্তানদের দেখাশোনা ও সাপ্তাহিক সাংসারিক প্রয়োজনেও ভাগাভাগি করে বাড়ি যেতে হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ক্ষোভের আঁচ পেয়ে শিথিল হয় নির্দেশিকা। সিএমওএইচ প্রকাশ মৃধা বলেন, ‘‘বিভাগীয় বিষয় নিয়ে মন্তব্য করব না।’’ জেলা পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর বলেন, ‘‘চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের তালিকা স্বাস্থ্য দফতর থেকে দেওয়া হবে।’’ ‘সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম’ সিএমওএইচের এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তার কাছে প্রতিবাদপত্র পাঠিয়েছে।
মেদিনীপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত এক নার্সের বাড়ি ফেরা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। গত শুক্রবার জামাইবাবুর সঙ্গে বাইকে করে ঝাড়গ্রামের বাড়িতে ফেরেন ওই নার্স। তারপর তিনি বাড়িতেই ছিলেন। গ্রামবাসীরা পুলিশে খবর দেন। রবিবার রাতেই ওই নার্স ও তাঁর দিদি-জামাইবাবুকে প্রশাসনের উদ্যোগে একটি নিভৃতবাসে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার সকালে পরিবারের আরও সাত সদস্যকে নিভৃতবাসে পাঠানো হয়। সবাই কোয়রান্টিনে রয়েছেন।