এক লাফে আক্রান্ত বেড়ে ৪৭৮

মশা মারতে জেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান শুরু হয়েছে। শুক্রবারের মতো শনিবারও মেদিনীপুর শহরে মশা দমনে অভিযান হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৭ ০০:৪৭
Share:

নজর-নেই: রাস্তার ধারে পড়ে রয়েছে ডাবের খোলা। তাতেই জমছে বৃষ্টির জল। আর সেখানেই মশার লার্ভা বাড়ছে বলে অভিযোগ। নজর নেই পুরসভার। মেদিনীপুর শহরের ডিএফও ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের আবাসন সংলগ্ন রাস্তায়। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

ন’দিনে জেলায় একধাক্কায় ডেঙ্গি আক্রান্ত বাড়ল ৫৫ জন। গত ৬ নভেম্বরও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪২৩ জন। গত বৃহস্পতিবার এক লাফে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৭৮। অসময়ের বৃষ্টিতেই ডেঙ্গি ফের চোখ রাঙাচ্ছে বলে দাবি প্রশাসনের একাংশের।

Advertisement

মশা মারতে জেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান শুরু হয়েছে। শুক্রবারের মতো শনিবারও মেদিনীপুর শহরে মশা দমনে অভিযান হয়েছে। ছিলেন জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে স্থানীয় মানুষজনের সঙ্গে কথাও বলেছেন তিনি। তারপরেও যে আক্রান্তের সংখ্যায় রাশ টানা যাচ্ছে না, তা মানছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তবে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরার দাবি, “এই সময়ের মধ্যে নতুন করে কয়েকজন মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। সকলেই চিকিত্সাধীন। উদ্বেগের কিছু নেই। পরিস্থিতি আয়ত্তের মধ্যেই রয়েছে।” একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “মশাবাহিত রোগ ঠেকাতে ও মানুষজনকে সচেতন করতে নানা কর্মসূচি চলছে। কোথাও যাতে জল না জমে সে বিষয়েও মানুষজনকে সতর্ক করা হচ্ছে।”

জেলা প্রশাসনের এক কর্তাও বলছিলেন, “তাপমাত্রার পারদ কমলে মশার দাপট কমে। জেলায় তাপমাত্রা কমতেও শুরু করেছিল। নিম্নচাপের বৃষ্টি ফের অশনি সঙ্কেত দিচ্ছে। এই বৃষ্টিতে মশার উত্পাত আরও বাড়ার একটা আশঙ্কা থাকছেই।”

Advertisement

পুজোর আগে থেকেই জেলায় ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। প্রথম থেকেই খড়্গপুরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। এখনও জেলার মধ্যে খড়্গপুরেই সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গি আক্রান্ত ১৯৩ জন। ঘাটালে ৩৫ জন ও মেদিনীপুরে ২২ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। অভিযানে জেলার বিভিন্ন এলাকায় এডিস মশার লার্ভাও মিলেছে। জমা জলে কিলবিল করতেও দেখা গিয়েছে লার্ভা। নিম্নচাপের বৃষ্টিতে মশার দাপট আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা।

কেন মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে জেলায়? জেলা প্রশাসনের একাংশ মানছে, মশার বংশবৃদ্ধি সেই ভাবে ঠেকানো যাচ্ছে না। ওই সূত্রের বক্তব্য, জঞ্জাল এবং জমা জল থেকে ডেঙ্গি মশার উপদ্রব বাড়ার সম্ভাবনা প্রবল। সাফাইয়ের কাজ সর্বত্র ঠিক ভাবে হচ্ছে না। হলে এই পরিস্থিতি হত না ডেঙ্গি রোধে আরও প্রচারেই জোর দিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। শনিবার মেদিনীপুর শহরে অভিযানে বেরিয়ে সকলকে রবীন্দ্রনাথবাবু বোঝান, কোনও ভাবেই জল জমতে দেওয়া যাবে না। আবর্জনা তো নয়ই। স্থানীয়দের তিনি জানান, মশাবাহিত রোগ ঠেকাতে বিভিন্ন এলাকায় মশা মারার কাজ চলছে। মশানাশক রাসায়নিক স্প্রে করা হচ্ছে।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্রবাবুও বলেন, “চিন্তার কিছু নেই। আক্রান্তদের চিকিত্সার দিকে নজর রাখা হয়েছে। এলাকায় এলাকায় সচেতনতা প্রচারও চলছে। মশাবাহিত রোগ মোকাবিলার সব রকম চেষ্টা চলছে। এ ক্ষেত্রে আমরা সকলের সহযোগিতাও চাইছি।” সমস্ত পঞ্চায়েত ও পুরসভাকে জমা জল এবং জঞ্জাল সাফাইয়ে আরও তত্পর হওয়ার কথা জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন