হাসপাতাল ফেরাল, পথে প্রসব ঘাটালে

রাজ্যের একাধিক হাসপাতালের সঙ্গে সুপার স্পেশ্যালিটিতে উন্নীত হয়েছে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালও। শুধু মহকুমা নয়, আশপাশের একটা বড় অংশের মানুষ, এমনকী হাওড়ার অনেক বাসিন্দা এর উপর নির্ভরশীল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৭ ০৭:৪০
Share:

প্রতীকী ছবি।

সুচিকিৎসার আশায় ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এসেছিলেন হাওড়ার পদ্মা পাত্র। বছর চব্বিশের পদ্মাকে পরীক্ষা করে সরকারি চিকিৎসক পরামর্শ দিলেন, ‘বাড়ি ফিরে যান। প্রসবের অনেক দেরি আছে।’

Advertisement

হাসপাতাল চত্বর ছেড়ে বেরোতেই পারেননি পদ্মাদেবী। মূল ফটকের মুখেই জন্ম দিয়েছেন এক কন্যার। বুধবার সকালের এই ঘটনায় হাসপাতাল চত্বরে শুরু হয় বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ অলোক সামন্তর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এই প্রথম নয়, এর আগেও এমন হয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে কর্তব্যরত নার্সরা হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন দু’জনকে। হাসপাতালের সুপার কুণাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “এখন মা ও মেয়ে দু’জনই সুস্থ।”

চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ জানিয়ে ঘাটাল থানা এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছেন পদ্মার স্বামী বাপন। তিনি বলেন, ‘‘ওই ডাক্তারের শাস্তি চাই।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “কেন এমন ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” পুলিশও তদন্ত শুরু করেছে। এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ অলোকবাবুকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি হাসপাতালের বাইরে একটি অস্ত্রোপচার করছি। এখন কথা
বলতে পারব না।’’

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটিতে ভর্তি হন হাওড়ার জয়পুরের বাসিন্দা পদ্মা। তাঁর অভিযোগ, “ভর্তির অনেক পরে ডাক্তার এসে সরাসরি জানিয়ে দেন, স্বাভাবিকভাবেই প্রসব হবে।’’

বুধবার সকালেও যন্ত্রণা হচ্ছিল পদ্মাদেবীর। অভিযোগ, সে সময়ও অলোকবাবু এসে বলেন, ‘‘এখনই প্রসব হবে না। বাড়ি ফিরে যান।’’ সকাল ৯টা নাগাদ বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য হাসপাতালের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন পদ্মা। কিন্তু সেখানেই প্রসব হয়ে যায়। এর পরেই নার্সরা এসে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

রাজ্যের একাধিক হাসপাতালের সঙ্গে সুপার স্পেশ্যালিটিতে উন্নীত হয়েছে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালও। শুধু মহকুমা নয়, আশপাশের একটা বড় অংশের মানুষ, এমনকী হাওড়ার অনেক বাসিন্দা এর উপর নির্ভরশীল।

অথচ, স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই চিকিৎসকদের একাংশ রোগীদের ভুল বুঝিয়ে হাসপাতাল থেকে ছুটি করিয়ে দিচ্ছেন। তাঁদের উদ্দেশ্য ওই সব রোগীদের নিয়ে গিয়ে নার্সিংহোমে তোলা। এ দিনের ঘটনায় সেই অভিযোগের প্রমাণ বলে দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা। চিকিৎসক অলোক সামন্তকে বদলির দাবিও জানাতে থাকেন তাঁরা। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে বিভাগীয় তদন্তের আশ্বাস মিললে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন