বরাত পাওয়ার পরেও ঝাড়গ্রাম মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে কাজ করতে না পারার অভিযোগে সরব হল এক বেসরকারি ঠিকাদার সংস্থা। কাজ ফিরে পাওয়ার দাবিতে তাঁরা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ মন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতোর দ্বারস্থও হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর জঙ্গলমহল সফরের আগে এমন পরিস্থিতিতে অস্বস্তিতে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।
সম্প্রতি ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল সার্ভিসেস কর্পোরেশন লিমিটেড’ (এমএসসিএল) ঝাড়গ্রাম-সহ ১২টি মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের নিরাপত্তা ও হাউস কিপিং-সহ বেশ কিছু কাজের বরাত দেয় একটি বেসরকারি সংস্থাকে। গত ১৬ অক্টোবর ‘এসডি এন্টারপ্রাইজ’ নামে পুরনো সংস্থার বরাতের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। সেই মতো ১৫ অক্টোবর নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ‘সিকিউরিটি অ্যান্ড ইনটালিজেন্স সার্ভিসেস ইন্ডিয়া লিমিটেড’ (এসআইএস)-এর কর্মীরা ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে সব কিছু বুঝে নেওয়ার জন্য ঢুকতে গেলে পুরনো ঠিকা কর্মীরা বাধা দেন বলে অভিযোগ। ওই সংস্থাটি গত ১৭ অক্টোবর থেকে নয়াগ্রাম ও গোপীবল্লভপুর হাসপাতালে কাজ শুরু করেছে।
এসআইএস সংস্থার কলকাতা রিজিওন অফিসের আধিকারিক মণিরুল ইসলাম বলেন, “নয়াগ্রাম ও গোপীবল্লভপুরে আমরা কাজ শুরু করেছি। ঝাড়গ্রামে কাজ শুরু করতে না পারার দায়টা আমাদের নয়।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘পুরনো সংস্থার কর্মীরা সমস্যা তৈরি করছেন। আশা করছি সমস্যা মিটে যাবে।”
এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছেন শাসক দলের নেতারাও। অভিযোগ, যে সব ঠিকা কর্মী কাজ করছিলেন, শাসক দলের স্থানীয় নেতারা তাঁদের আশ্বাস দিয়েছিলেন, যে নতুন সংস্থাটি তাঁদেরই নিয়োগ করবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, এসআইএস সংস্থাটি পুরনো কর্মীদের বাদ দিয়ে নতুন লোকজনকে নিয়োগ করেছে। কাজ হারানো নয়াগ্রামের দীপ্তি দাস, গোপীবল্লভপুরের রাজু কুণ্ডু, কণিকা রানাদের অভিযোগ, “নতুন যাঁরা কাজে ঢুকেছেন, তাঁরাও তো কেউই প্রশিক্ষিত নন। তাহলে আমরা কী দোষ করলাম!” এসডি এন্টাইপ্রাইজের মালিক সুভাষ দাস বলেন, “১৬ অক্টোবর থেকে তিনটি মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে আমাদের চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। এর ফলে তিনটি হাসপাতালের ১১০ জন ঠিকা কর্মী কাজ হারিয়েছেন। ফলে তাঁদের ক্ষোভ হওয়াটা স্বাভাবিক।”
ঝাড়গ্রাম জেলা ও মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সুপার মলয় আদক বলেন, “এসআইএস সংস্থাটি কাজে যোগ না দেওয়ায় পুরনো সংস্থাটির কর্মীরা ঝাড়গ্রাম মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি ভবনে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।” ঝাড়গ্রামের সিএমওএইচ অশ্বিনী মাঝি বলেন, “এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।” বিষয়টি নিয়ে চূড়ামণিবাবু বলেন, “পুরনো ঠিকা কর্মীরা দীর্ঘদিন কাজ করে এসেছেন। ওদের কথাও ভাবতে হবে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে আলোচনা করব।”