West Bengal Panchayat Election 2023

ভোট দিতে পারল না বাজি কারবারির পরিবার

গত বছর ১১ অক্টোবর পাঁশকুড়ার সাধুয়াপোতা গ্রামে শ্রীকান্ত ভক্তা নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে বাজি বিস্ফোরণে প্রদীপ সামন্ত নামে এক নাবালক শ্রমিক এবং শ্রীকান্তর স্ত্রীর স্বর্ণময়ী ভক্তার মৃত্যু হয়।

Advertisement

দিগন্ত মান্না

এগরা, পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৩ ০৮:০৪
Share:

ভোটের লাইনে অতনু ভক্তা। নিজস্ব চিত্র

বিস্ফোরণের পরে কেটেছে ন’মাস। তবে গ্রামের বাড়িতে ঢুকতে পারেনি পাঁশকুড়ার সাধুয়াপোতার বাজি কারবারির পরিবার। পঞ্চায়েত ভোটেও তাই ব্রাত্য থাকল ওই পরিবার প্রায় সকল সদস্য। অন্যদিকে, কয়েক মাস আগে এগরার খাদিকুলের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় কাররারির পরিবারের কাউকে এ দিন ভোট কেন্দ্রে দেখা গেল না।

Advertisement

গত বছর ১১ অক্টোবর পাঁশকুড়ার সাধুয়াপোতা গ্রামে শ্রীকান্ত ভক্তা নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে বাজি বিস্ফোরণে প্রদীপ সামন্ত নামে এক নাবালক শ্রমিক এবং শ্রীকান্তর স্ত্রীর স্বর্ণময়ী ভক্তার মৃত্যু হয়। শ্রীকান্ত এবং তাঁর দুই ছেল শান্তনু ও অতনুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত বছর ডিসেম্বরে জামিনে মুক্তি পান তিনজন। অভিযোগ, জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর বাড়ি ফিরতে চাইলেও শ্রীকান্ত ও তাঁর ছেলেদের বাড়িতে ঢুকতে দেননি কয়েকজন প্রতিবেশী।পুলিশে অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা হয়নি। বর্তমানে শ্রীকান্ত, তাঁর বড় ছেলে শান্তনু বাঁকুড়ায় মেয়ে তনুশ্রী ভক্তার কাছে থাকেন। তনুশ্রী বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নার্সের চাকরি করেন। অভিযোগ, গ্রামের একাংশের হুমকির জেরে তাঁরা বাড়িতে ঢুকতে পারেননি। তাই এবার তাঁরা ভোট দিতে আসেননি।

ভক্তা পরিবারের ছোট ছেলে অতনু এ দিন কেবল ভোট দিতে পেরেছেন। পূর্ব চিল্কা বাজারে বাবার পুরনো বাজি বিক্রির দোকানে ছ'মাস ধরে রয়েছেন শ্রীকান্তর ছোট ছেলে অতনু। কখনও নির্মাণ শ্রমিক, কখনও আবার স্থানীয় হোসিয়ারি কারখানায় কাজ করেন। দোকানে রান্না করে খাওয়ার মতো পরস্থিতি নেই। পাশের গ্রাম পশ্চিম চিল্কায় অতনুর মামাবাড়িতে খেয়ে নেন। সাধুয়াপোতা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্রে এ দিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ ভোটের লাইনে দাঁড়ান তিনি। পরে কান্না ভেজা চোখে অতনু এ দিন বলেন, ‘‘ভোট দেওয়ার জন্য ছ'মাস পর গ্রামে পা দিলাম। বাজির পেশায় আর ফিরব না। দিনমজুরি করে কোনওক্রমে দিন কাটছে। কিন্তু আমাদের বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। বাড়িতে ঢুকলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে আবেদন করছি আমার বাড়ি ফেরার অধিকারটুকু ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’’

Advertisement

অন্যদিকে, এগরার খাদিকুলে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে ১১ জনের মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়ে উঠেছিল। সেই খাদিকুলে গ্রামে ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে করা কড়া পুলিশি বন্দোবস্ত করা হয়।খাদিকুল উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮৮ এবং ৮৮-এ বুথে দু'জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান ও দু’জন রাজ্য পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, বিস্ফোরণে মৃতের পরিবারের সদস্যদেরা এদিন ভোট দিয়েছেন।যদিও বেআইনি বাজি কারখানার মালিক তথা নিহত কৃষ্ণপদ বাগের পরিবারের কাউকে এদিন ভোট দিতে দেখায় যায়নি বলেজানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন