রেললাইনে পড়ে রক্তাক্ত স্কুল ছাত্রী    

ওই নির্যাতিতার পরিবার সূত্রের খবর, দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীর সঙ্গে কেশাপাট এলাকার এক ব্যক্তির সম্পর্ক ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:১৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

রক্তাক্ত অবস্থায় রেললাইনের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এক স্কুল ছাত্রীকে। ওই ছাত্রী গত ১৮ ডিসেম্বর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিল দাবি তার পরিবারের। পাঁশকুড়া থানায় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগও দায়ের করেছিল তারা। কিন্তু ১৯ ডিসেম্বর ছাত্রীকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যাওয়ার পরে তার মা-বাবার ফের অভিযোগ, তাঁদের মেয়েকে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। যদিও যৌন নির্যাতন সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ থানায় করেননি তাঁরা। ঘটনাটি পাঁশকুড়ার হাউর এলাকার।

Advertisement

ওই নির্যাতিতার পরিবার সূত্রের খবর, দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীর সঙ্গে কেশাপাট এলাকার এক ব্যক্তির সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্ক ছাত্রীর পরিবার মেনে নেয়নি। গত ১৮ ডিসেম্বর ছাত্রীটি বাড়িতে একাই ছিল। তার বাবা-মা পেশায় মৎস্যজীবী। তাঁদের অভিযোগ, দুপুরে বাড়িতে ফিরে মেয়েকে আর দেখতে পাননি। পরের দিন সকালে হাউর স্টেশনের অদূরে এরাপুর এলাকায় রেললাইনের ধারে প্রায় অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ওই ছাত্রীকে। তার দুই হাতের কয়েকটি আঙুল ভাঙা, মাথায় এবং মুখে গভীর চোট ছিল বলে অভিযোগ।

আহত অবস্থায় ওই ছাত্রীকে প্রথমে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ২১ তারিখ তাকে তমলুক জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমানে সে সেখানেই চিকিৎসাধীন। ২০ ডিসেম্বর ওই ছাত্রীর পরিবার উত্তম মুর্মু নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাঁশকুড়া থানায় অপহরণের মামলা দায়ের করেন। তবে নির্যাতিতার বাবার দাবি, তিনি ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় ফের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করবেন। তিনি বলেন, ‘‘ওই সময় আমার মেয়ে ভাল করে কথা বলতে পারেনি। ১৮ ডিসেম্বর ওই ব্যক্তিকে এলাকায় একজন দেখেছিলেন, তাই তখন ওর নামে তখন পাঁশকুড়া থানায় অপহরণের মামলা করি। এখন জ্ঞান ফিরে পেয়ে মেয়ে আমাদের জানায় যে, ওই ব্যক্তি-সহ পাঁচজন যুবক তাকে যৌন নির্যাতন করেছে। ওর মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। ওদের বিরুদ্ধে থানায় নতুন করে অভিযোগ জানাব।’’

Advertisement

ওই ছাত্রীর বাবার আরও অভিযোগ, অভিযুক্ত ব্যক্তির দু’টি বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু কোনও স্ত্রীই তাঁর সঙ্গে ঘর করেনি। স্কুলে টেস্ট পরীক্ষা চলাকালীন ওই ব্যক্তি তাঁদের মেয়েকে কয়েকবার অপহরণের চেষ্টা করেছিল। অপহরণের আশঙ্কায় গত ১৮ ডিসেম্বর তাঁরা ওই ছাত্রীকে বাড়িতে তালা দিয়ে কাজে গিয়েছিলেন। কিন্তু তালা ভেঙে ওই ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।

উল্লেখ্য, গত অগস্টে কোলাঘাটে এক দশম শ্রেণির ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। পরে ওই ছাত্রী আত্মঘাতী হন। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ফের এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠায়, নারী নিরাপত্তার বিষয়টি ফের প্রশ্নের মুখে। হাউরের ঘটনার প্রেক্ষিতে পাঁশকুড়া থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘উত্তম মুর্মু নামে একজনের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন