হেমন্ত প্রামাণিক। —নিজস্ব চিত্র।
মদ্যপ এক যুবককে খুনের অভিযোগ উঠল তাঁর বন্ধুদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা নাগাদ তমলুক থানার রামতারক বাজারের কাছে হলদিয়া– মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে হেমন্ত প্রামাণিক (৩৬) নামে ওই যুবকের রক্তাত্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনায় অভিযুক্ত সন্দেহে ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। মৃতের বাড়ি রামতারক বাজার থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে হরশঙ্কর গ্রামে। গ্রামেরই চার জনের বিরুদ্ধে পুলিশে ছেলেকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন মৃতের বাবা নন্দলাল প্রামাণিক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তমলুক থানার নীলকন্ঠা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার হরশঙ্কর গ্রামের বাসিন্দা হেমন্ত আগে একটি হোসিয়ারি কারখানায় কাজ করত। বছর পাঁচেক আগে গ্রামেই নিজের হোসিয়ারি কারখানা চালু করে। ব্যবসার প্রয়োজনে হেমন্ত গ্রামেরই কয়েকজনের থেকে সুদে টাকা ধার নিয়েছিল। এদের মধ্যে স্থানীয় দীপক দাসের থেকে ১৭ হাজার টাকা ধার নিয়েছিল সে। বৃহস্পতিবার রাতে কারখানা বন্ধ করার পরে গ্রামেরই বাসিন্দা প্রভাত বেরার বাড়ির টিভিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের খেলা দেখতে যায় হেমন্ত। তাঁর সঙ্গে দীপক পাত্র, ভোলানাথ পাত্র, অমিত পাত্র-সহ আরও কয়েকজন ছিল। খেলা শেষে প্রভাত-সহ ছ’জন মিলে গ্রামেরই রবি ঘোড়ইয়ের গাড়ি করে রামতারক বাজারের কাছে একটি ধাবায় যায়। অভিযোগ, সেখানে তাঁরা মদ্যপানও করে। তারপরই ধারে নেওয়া টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে হেমন্তের সঙ্গে দীপক-সহ অন্যদের বচসা বাধে বলে অভিযোগ। ধাবার মধ্যে গোলমাল বাধলে কর্মীরা তাদের সরিয়ে দেয়। এরপর ধাবা থেকে বেরিয়ে এসে কিছুটা দূরেই জাতীয় সড়কের উপরে বাকিরা হেমন্তকে পিটিয়ে খুন করে বলে অভিযোগ। রাতে জাতীয় সড়কে টহলরত পুলিশ রাস্তায় হেমন্তর দেহ পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাস্থলের কাছেই ভোলানাথ, দীপক ও প্রভাত লুকিয়ে ছিল। পুলিশ রাতেই তাঁদের আটক করে। পুলিশের কাছে ধৃতেরা দাবি করে, পথ দুর্ঘটনায় হেমন্তর মৃত্যু হয়েছে। পরে আরও তিন জনকে আটক করা হয়। হেমন্তর দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। হেমন্তর একটি ১১ বছরের ছেলে ও সাত বছর বয়সের মেয়ে রয়েছে। হেমন্তর বাবা নন্দলালবাবুর অভিযোগ, ‘‘আমার ছেলে ব্যবসার জন্য দীপকের কাছ টাকা ধার নিয়েছিল। ওই টাকা নিয়ে গোলামালের সময় ওঁরা ছেলেকে মেরে দিয়েছে। আমি দোষীদের শাস্তি চাইছি।’’