অ্যাসিডে পোড়া দাগ নিয়ে ফিরলেন তরুণী

অপহরণের পরে প্রায় ষোলো দিন তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল সুতাহাটার এক ঠিকানায়। সোমবার রাতে সেখান থেকেই পালিয়ে বছর কুড়ির ওই তরুণী হাজির হন তমলুক আদালতে। পুলিশ তাঁর অত্যাচারিত হওয়ার জবানবন্দি নেওয়ার পরে, আপাতত তাঁর ঠিকানা তমলুক জেলা হাসপাতাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:১৬
Share:

অপহরণের পরে প্রায় ষোলো দিন তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল সুতাহাটার এক ঠিকানায়। সোমবার রাতে সেখান থেকেই পালিয়ে বছর কুড়ির ওই তরুণী হাজির হন তমলুক আদালতে। পুলিশ তাঁর অত্যাচারিত হওয়ার জবানবন্দি নেওয়ার পরে, আপাতত তাঁর ঠিকানা তমলুক জেলা হাসপাতাল।

Advertisement

পেট-পায়ে অ্যাসিড দহনের দাগ। পিঠ ফালা ফালা হয়ে গিয়েছে ‘চাবুকের’ ঘায়ে। তরুণীর অভিযোগ, ১১ অক্টোবর তমলুক হাসপাতাল থেকে অপহরণের পরে সুতাহাটার ওই গোপন ঠিকানায় ক্রমান্বয়ে তার উপরে ‘অত্যাচার’ চালানো হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন জানান, ওই তরুণীর বাড়ি দুর্গাচকের মঞ্জুশ্রী এলাকায়। তাঁর অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খোঁজ চলেছে, অভিযুক্তদেরও।

ধর্ষণ এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগে বছর কুড়ির ওই সদ্য তরুণীর সৎ বাবা এবং তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল বছর দুয়েক আগেই। পুলিশ তাঁর বাবাকে গ্রেফতার করলেও হদিস মেলেনি স্বামীর। তবে সেই থেকে বাড়ি নয়, ওই তরুণীর ঠিকানা বদলে গিয়েছিল নিমতৌড়ির এক হোমে।

Advertisement

দিন কয়েক আগে চোখে সংক্রমণ নিয়ে হোম থেকে তাঁকে ভর্তি করা হয় তমলুক জেলা হাসপাতালে। তরুণীর অভিযোগ, ১১ অক্টোবর সেখান থেকেই তাঁকে ‘তুলে’ নিয়ে যায় অপরহরণকারীরা। ভরা হাসপাতাল থেকে অপহরণ করা কি সম্ভব?

তরুণী পুলিশকে জানান, এক ‘অচেনা’ মহিলার কথা শুনে ওই দিন হাসপাতালের শয্যা থেকে বাইরে পা দিতেই একটি গাড়িতে টেনে হিঁচড়ে তুলে নেওয়া হয় তাঁকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি পুলিশকে জানায়। তবে সতেরো দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ যে গা করেনি তা বলাই বাহুল্য। ওই তরুণী জানান, অপহরণের পরে তাঁকে ‘স্বামীর এক আত্মীয়ের’ বাড়িতে আটকে রাখা হয়। তরুণী বলেন, “বাবা ও স্বামীর বিরুদ্ধে যে মামলা করেছি তা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছিল অপরহরণকারীরা। আমার গায়ে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়া হয়। চাবুকও মারা হত। দিন কয়েক আগে একটা সাদা কাগজে জোর করে সই-ও করিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা হয়।”

সেখান থেকেই পালিয়ে তমলুক আদালতে পৌঁছন তিনি। যোগাযোগ করেন তাঁর পূর্ব পরিচিত আইনজীবী মনোরঞ্জন মাইতির সঙ্গে। ওই আইনজীবী বলেন, “মেয়েকে বিক্রির জন্যেই ওর সৎ বাবা এক জনের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিল। তার আসল পরিচয় নারী পাচারকারী।” পরে মনোরঞ্জনবাবু ওই তরুণীকে নিয়ে যান জেলা দায়রা বিচারকের কাছে। বিচারকের নির্দেশেই তাঁকে ফের ভর্তি করা হয়েছে তমলুক হাসপাতালে। তবে এ বার ওই তরুণীর সঙ্গে রয়েছে পুলিশ প্রহরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন