অপেক্ষা সার, সন্ধ্যার দেখা পেল না কুনারপুর

তারকা প্রার্থীর আসার খবর আগেই নানা ভাবে প্রচার করা হয়েছিল। এলাকায় প্রার্থী আসছেন, সেই ভেবে যাবতীয় প্রস্তুতি সেরেছিলেন স্থানীয় নেতৃত্ব। বর্ষীয়ান অভিনেত্রীকে দেখতে হাজির হয়েছিলেন কর্মী-সমর্থক-গুণগ্রাহীরা। কিন্তু, অপেক্ষাই সার!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর ও মোহনপুর শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:১৪
Share:

মোহনপুরের সভায় সন্ধ্যা রায়। ছবি: কৌশিক মিশ্র।

তারকা প্রার্থীর আসার খবর আগেই নানা ভাবে প্রচার করা হয়েছিল। এলাকায় প্রার্থী আসছেন, সেই ভেবে যাবতীয় প্রস্তুতি সেরেছিলেন স্থানীয় নেতৃত্ব। বর্ষীয়ান অভিনেত্রীকে দেখতে হাজির হয়েছিলেন কর্মী-সমর্থক-গুণগ্রাহীরা। কিন্তু, অপেক্ষাই সার! মেদিনীপুর থেকে দাঁতনের মোহনপুরে গেলেও নারায়ণগড়ের কুনারপুরে এলেন না মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রার্থী সন্ধ্যা রায়। এর জেরে প্রকাশ্যে কেউ ক্ষোভ না দেখালেও, কর্মী সমর্থকদের মধ্যে চলল গুঞ্জন। কারও মন খারাপ, কেউ দাবি জানালেন এ বার না হোক পরের বার প্রার্থীকে কিন্তু আসতেই হবে।

Advertisement

রবিবার মেদিনীপুর থেকে দাঁতনের মোহনপুরে প্রচারে যান তৃণমূল প্রার্থী সন্ধ্যা রায়। মেদিনীপুর থেকে মোহনপুর পথেই পড়ে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্য মিশ্রের ‘গড়’ নারায়ণগড়। স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূল নেতৃত্ব চেয়েছিলেন তাঁদের এলাকায় এসে সভা করুন প্রার্থী। গত ৪ এপ্রিল নারায়ণগড়ের বেলদায় কর্মি সম্মেলন করেছিলেন সন্ধ্যা রায়। তখনও এই এাকায় সন্ধ্যাদেবী না আসায় নেতৃত্ব চাইছিলেন প্রার্থীকে এলাকায় হাজির করাতে। এ দিন মোহনপুরে সন্ধ্যাদেবীর সভা রয়েছে জেনে ব্লক নেতৃত্বের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিল কুনারপুরের নেতাকর্মীরা। চলছিল চূড়ান্ত প্রস্তুতি।

কিন্তু, মোহনপুরে সভার পরে আর সময় করে উঠতে পারেননি প্রার্থী। ফিরে যান মেদিনীপুরে। এতে চূড়ান্ত হতাশ কর্মী-সমর্থকরা। পারুলদার শঙ্কর ভৌমিক, সন্তোষী বাজারের চন্দনা বেরা, কুশদার সঙ্গীতা দত্তরা বলেন, “আমরা মাইকে প্রচার শুনে, কাছ থেকে অভিনেত্রীকে দেখব বলে এসেছিলাম। কিন্তু, উনি এলেন না। খারাপ লাগছে।” তাঁদের দাবি, “আগামী দিনে অন্তত একবার এলাকায় এলে খুশি হব।”

Advertisement

প্রার্থী না এলেও, এ দিন স্বাভাবিক ভাবেই জনসভা হয় নারায়ণগড়ের কুনারপুর হাইস্কুল ময়দানে। মোহনপুরের সভা সেরে এখানে এসেছিলেন জেলা সভাপতি দীনেন রায়। এ ছাড়াও ছিলেন জেলা সাধারণ সম্পাদক শশাঙ্ক পাত্র, ব্লক তৃণমূল সভাপতি মিহির চন্দ প্রমুখ। তাঁরা কুনারপুরে সন্ধ্যাদেবীর সভার বিষয়টি চূড়ান্ত ছিল না বলেই দাবি করেছেন। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মিহির চন্দ বলেন, “মোহনপুরের সভার পর কুনারপুরে আসার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন অঞ্চল নেতৃত্ব। কিন্তু, তা চূড়ান্ত ছিল না।” একই বক্তব্য দীনেনবাবুর। তিনিও বলেন, “দুটি সভার মাঝে মাঝে দীর্ঘক্ষণ ব্যবধান থাকায় সন্ধ্যাদেবী মেদিনীপুর চলে যান।” তাঁর কথায়, “হয়ত এখানে কেউ ছেলেমানুষি করে প্রার্থী আসবেন বলে প্রচার করেছেন।” তবে আগামী দিনে প্রার্থীকে এখানে এনে প্রচার করানো হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। তবে নির্দিষ্ট খবরের ভিত্তিতেই প্রচার চালানো হয় বলে জানিয়েছেন কুনারপুর অঞ্চলের কার্যকরী সভাপতি কিঙ্কর গায়েন।

এ দিন দু’টি সভাতেই বাম সরকারের সমালোচনায় সরব ছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সাম্প্রতিক কাপ্টার কাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে দাঁতনের মোহনপুরে সন্ধ্যাদেবী বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কপ্টারকে কে বা কারা বিকল করে রেখেছে। তাঁকে অন্য ব্যবস্থা করতে হচ্ছে।” এরপরই তিনি বলেন, “কিন্তু, কেন? কেন এই শত্রুতা, এই অবিচার? এর যোগ্য জবাব দিতে জোড়াফুল চিহ্নে ভোট দিন।” তবে, কারা চক্রান্তকারী সে বিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “আমরা ৫০ বছর পিছিয়ে গিয়েছিলাম। এখন নানা প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন করে বাংলা গড়ার কাজ শুরু হয়েছে।”

খড়্গপুরের তালবাগিচা হাইস্কুলেও কর্মিসভা হয়। উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষ, জেলা কোর কমিটির সদস্য জহরলাল পাল প্রমুখ। এখানেও সরকারের উন্নয়নমূলক কাজকে সামনে রেখে মানুষকে ভোটমুখী করার নির্দেশ দেওয়া হয় কর্মীদের। খুরশি গ্রাম পঞ্চায়েতের চকমুকুন্দ হাইস্কুলেও তৃণমূলের একটি কর্মিসভা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন