অপহরণের পাঁচ দিন পরে রেলশহর খড়্গপুর থেকে এক রেলকর্মীকে উদ্ধার করল পুলিশ। দেবাশিস মুখোপাধ্যায় নামে ওই রেলকর্মীর বাড়ি হাওড়ার সাঁকরাইলে। অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মঙ্গলবার দু’জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। ধৃত দু’জনের বাড়ি খড়্গপুরে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “ধৃতদের সঙ্গে কোনও দুষ্টচক্রের যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
হাওড়ার সাঁকরাইল থানার আন্দুল পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা দেবাশিসবাবু খড়্গপুর রেল ওয়ার্কশপে কাজ করতেন। সেই সূত্রে খড়্গপুরেই থাকতেন। তবে না জানিয়ে দীর্ঘদিন কাজে অনুপস্থিত থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয় রেল। তবে তার পরেও দেবাশিসবাবুর রেলশহরে যাতায়াত ছিল। গত বৃহস্পতিবার তিনি খড়্গপুরে আসেন এবং সে দিনই তাঁকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, রেলে চাকরি করে দেওয়ার নাম করে ওই ব্যক্তি কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন। টাকা নেওয়ার কথা জানত অপহরণকারীরা। তাই তারা ভেবেছিল, দেবাশিসবাবুর স্ত্রী দাবিমতো টাকা দিয়ে দেবেন। সেই মতো দেবাশিসবাবুকে অপহরণের পর তাঁর স্ত্রীর কাছে ৮ লক্ষ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা।
গত বৃহস্পতিবার থেকে দেবাশিসের স্ত্রী শিবানী মুখোপাধ্যায়কে বারবার ফোন করে অপহরণকারীরা জানায়, প্রথমে এক লক্ষ টাকা দিতে হবে। পরে যখন স্বামীকে তাঁর কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে, তখন দিতে হবে সাত লক্ষ টাকা। অপহরণকারীদের কথা মতো মঙ্গলবার খড়্গপুরে আসেন শিবানীদেবী। অপহরণকারীরা তাঁকে গিরি ময়দান এলাকায় অপেক্ষা করতে বলেছিল। তবে সেখানে যাওয়ার আগে তিনি থানায় যান। পুরো বিষয়টি পুলিশকে জানান। এরপরই অপহরণকারীদের ধরতে ফাঁদ পাতে পুলিশ।
দুপুরে অবশ্য অপহরণকারীরা ফের শিবানীদেবীকে ফোন করে জানায়, তিনি যেন খড়্গপুর বাসস্ট্যান্ডে আসেন। এ দিন বিকেলে বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকেই বিনোদ শুক্ল এবং সুজয় বাকলি নামে দুই অপহরণকারীকে পাকড়াও করে পুলিশ। দেবাশিসবাবুকে শহরের দেবলপুরে এক ভাড়া বাড়িতে রেখেছিল অপহরণকারীরা। পরে সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়।