এ বার জেলায় আসছেন শাকিল, রাহুল গাঁধীও

একটাও বড় কোনও সভা করেননি। পদযাত্রা, পথসভা ও গ্রামেগঞ্জের মানুষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে ভোট দেওয়ার আবেদন জানানোতেই আটকে ছিলেন ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী মানস ভুঁইয়া। ইতিমধ্যেই প্রায় সব এলাকায় চষে বেরিয়েছেন। এ বার হাতে সময় কম। দরজায় কড়া নাড়ছে নির্বাচন। তার আগে নিজের পক্ষে সমর্থনের ঝড় বইয়ে দিতে এ বার রাজনৈতিক তারকাদের দিয়ে সভা করার পরিকল্পনা নিল কংগ্রেস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৪ ০০:২৩
Share:

একটাও বড় কোনও সভা করেননি। পদযাত্রা, পথসভা ও গ্রামেগঞ্জের মানুষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে ভোট দেওয়ার আবেদন জানানোতেই আটকে ছিলেন ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী মানস ভুঁইয়া। ইতিমধ্যেই প্রায় সব এলাকায় চষে বেরিয়েছেন। এ বার হাতে সময় কম। দরজায় কড়া নাড়ছে নির্বাচন। তার আগে নিজের পক্ষে সমর্থনের ঝড় বইয়ে দিতে এ বার রাজনৈতিক তারকাদের দিয়ে সভা করার পরিকল্পনা নিল কংগ্রেস।

Advertisement

সোমবার কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতা শাকিল আহমেদের আসার কথা। ওই দিন তিনি ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে তিনটি সভা করবেন বলে কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে। আসতে পারেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীও। প্রাথমিক ভাবে তাতে সবুজ সঙ্কেতও মিলেছে। ডেবরাতে সভা করার কথা তাঁর। মানস ভুঁইয়া বলেন, “চার দিকে তৃণমূল যে ভাবে সন্ত্রাস চালাচ্ছে তা মোকাবিলা করে নির্বিঘ্নে নির্বাচন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবু আমরা গ্রামেগঞ্জে দৌড়ে বেড়াচ্ছি। মানুষের কাছে যাচ্ছি। এত দিন একটাও বড় সভা বা সমাবেশ করিনি। এ বার শাকিল আহমেদ আসবেন বলে জানিয়েছেন। রাহুলজীরও আসার কথা।”

এমনিতেই কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে বেশ কিছুটা সময় লেগেছিল। তবে প্রার্থী ঘোষণা করার পর থেকেই মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছে রাজনীতির এই তারকা। এ ছাড়া উপায়ই বা কী? তাঁর বিরুদ্ধে যে জনপ্রিয় চিত্রতারকা দেব। এমনিতেই ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে একমাত্র সবং বাদ দিলে বাকি সর্বত্রই কংগ্রেসের বেহাল দশা। সংগঠন বলে কিছুই নেই। অন্য ব্লকে হাতে গোনা গুটিক’য় নেতা। তাঁদেরও আবার অনেকেই বসে গিয়েছিলেন। মানসবাবু প্রার্থী হওয়ার পর আবার সকলে উৎসাহে নেমেছেন এটা ঠিক। কিন্তু হঠাৎ করে নির্বাচনের সময় নেমে কতটা ঘর গোছাতে পারবেন তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়। তবু রাজনীতিতে পোড়খাওয়া মানসবাবু হাল ছাড়তে নারাজ। নিজের এলাকা সবংয়ে এখন থাকছেন না বললেই চলে। সেখানে রয়েছেন তাঁর ব্লক সভাপতি তথা একনিষ্ঠ সৈনিক অমল পান্ডা, ভাই তথা দলের জেলা সভাপতি বিকাশ ভুঁইয়া ও স্ত্রী গীতা ভুঁইয়া। স্ত্রী রাজনীতিতে ততটা পোক্ত নন এটা ঠিক। কিন্তু তাতে কী? গ্রামগঞ্জের বহু মানুষের সঙ্গেই যে নিবিড় সম্পর্ক। কার চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিতে হবে, কেউ মেয়ের বিয়ে দিতে পারছেন না, সাহায্য করতে হবে- এ সব ক্ষেত্রে বহু মানুষ ফোন করেন গীতাদেবীকে। আর তারই জেরে বহু মানুষের সঙ্গেই আত্মিক যোগ গড়ে উঠেছে। তিনিও যাচ্ছেন প্রচারে। তবু মানুস ভুঁইয়া না গেলে কী চলে? যাঁর ওখানে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী গিয়ে সভা করেছেন তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে। মানস ভুঁইয়ার জামানত জব্দ করার ডাক দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে কিছুটা তো রক্তচাপ বাড়েই। তাই নিজেও মাঝে মধ্যে সবংয়ে যাচ্ছেন। তবে বেশি জোর দিচ্ছেন কেশপুর, ঘাটাল, দাসপুর, ডেবরা, পিংলা ও পাঁশকুড়াতে। প্রত্যন্ত গ্রামে ঢুকে যাচ্ছেন। দোকানে থাকা কর্মী ও মালিকের হাত ধরে ভোট দেওয়ার আবেদন জানাচ্ছেন, মাঠ থেকে মাথায় ধান নিয়ে বাড়ি ফেরা কৃষকের কাছে গিয়ে বলছেন, “আমি মানস ভুঁইয়া। কংগ্রেসের সৈনিক। ভোট দিন। জিতলে সবংয়ের মতো উন্নয়ন করব। যাতে আর বন্যা হবে না। ঝাঁ চকচকে রাস্তা দিয়ে দ্রুত যাতায়াত করবেন। আপনাদের পাশেই থাকব সব সময়।”

Advertisement

কিন্তু তা দিয়ে কী ঝড় তোলা যায়? যদিও মানসবাবুর দাবি, “মানুষের কাছে যাওয়াটাই আসল। ভোটের ফল কী হবে, এখুনি বলছি না। তবে এটা বলতে পারি, অবাধ নির্বাচন হলে কী হবে কেউ জানে না। ১৬ মে-র পর দেখা হলে বলব।” তবে ঝড় তোলাও যে জরুরি তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই এত দিন কোনও নেতা-মন্ত্রী বা তারকাকে নিয়ে সভা সমাবেশ হয়নি। এ বার শাকিল আহমেদকে দিয়েই একাধিক সভা করানোর পরিকল্পনা রয়েছে মানসবাবুর। আর প্রাথমিক ভাবে রাহুল গাঁধীও আসতে পারেন বলে ইঙ্গিত মিলেছে। যদি তা হয়, তা হলে সে ঝড়ে লড়াইয়ের ময়দানে মানসবাবু অনেকটাই এগিয়ে যাবেন বলে দলীয় কর্মী সমর্থকদের অভিমত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন