প্রায় দু’মাস ধরে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যাল (এইচপিএল) বন্ধ থাকার পর, তা নিয়ে এই প্রথম প্রকাশ্যে মুখ খুললেন শুভেন্দু অধিকারী। ওই শিল্প সংস্থার এই পরিস্থিতির জন্য সিপিএম ও বাম সরকারকেই দায়ী করেন তিনি। শুক্রবার শুভেন্দু বলেন, “সিপিএমের পাপের বোঝা আমাদের ঘাড়ে পড়েছে। রাজ্য সরকার ব্যবসা করতে গিয়ে এই কুফল ডেকে এনেছে।” একই সঙ্গে তাঁর দাবি, এইচপিএল খুলতে রাজ্য সরকার সচেতন ও দায়বদ্ধ। গোটা বিষয়টি দেখছে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন দফতর ও সরকার। মূলধন সংগ্রহের চেষ্টাও চলছে। এ বিষয়ে শ্রমিকদের তিনি আশ্বস্তও করেছেন।
শুক্রবার বিকালে হলদিয়ার ভুঁইয়ারায়চকে অবস্থিত বিভিন্ন ধাতব পণ্য উৎপাদনকারী শিল্প সংস্থা মানাক্সিয়া লিমিটেডের শ্রমিকদের দাবি সনদে ত্রি-পাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরের পরে আয়োজিত সভায় শ্রমিকদের সামনে এই মন্তব্য করেন তিনি। এ দিনও তিনি শিল্পসংস্থায় শ্রমিকদের আন্দোলন করা নিয়ে হুঁশিয়ারি দেন। তিনি জানান, শ্রমিক ও বিনিয়োগকারী উভয়পক্ষের স্বার্থ বজায় রেখে শ্রমিকদের পারিশ্রমিক ৩৯-৪১ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। কারণ, বিশ্বায়নের কুফলে বিভিন্ন কারখানায় অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। তাঁর দাবি, চলতি বছরে হলদিয়ার আটটি শিল্প সংস্থায় দাবি সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে।
২০১০ সালে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বেশ কয়েক’টি শিল্প সংস্থায় নতুন কাজ ও সম্প্রসারিত প্রকল্পের উপরে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, তা ধীরে ধীরে উঠে যাচ্ছে দাবি করে শুভেন্দু জানান, এন্নোর কোক, আইপিসিএল, টাটা স্টিল সংস্থাগুলি গত এক সপ্তাহের মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছে। এক্সাইড তাদের নতুন প্রকল্পের জন্য ৩৭০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। তারা জমি চেয়েছে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের কাছে।
হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে তিনটি প্রধান রাস্তা শিল্প সংস্থার ভারি গাড়ি চলাচলের উপযুক্ত করে নির্মাণ করার জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ। রাস্তা তিনটি হল, বালার মোড় থেকে সিইএসসি পর্যন্ত সাড়ে সাত কিলোমিটার, এইচপিএল লিঙ্ক রোড থেকে পাতিখালি এবং বাঁলুঘাটা থেকে কোস্ট গার্ড পর্যন্ত রাস্তা। প্রথমটি প্রকল্পটিতে ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। পুজোর মধ্যেই কাজ শুরু হবে।
এ দিন ওই সভায় তৃণমূলে যোগ দেন স্থানীয় প্রাক্তন কাউন্সিলার সিপিএমের রবীন মণ্ডল ও তার অনুগামীরা। এই প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “সিপিএমের পচে যাওয়া লোকজন বিজেপির পতাকা ধরছে। আর ভাল লোকেদের আমরা নিয়ে নিচ্ছি। জেলায় সিপিএম এখন দু’ভাগ হয়ে গিয়েছে। একদিকে লক্ষ্মণ অন্য দিকে রবীন দেব।”