কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, ধৃত কোষাধ্যক্ষ

সরকারি এক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেফতার হলেন ঘাটাল ব্লক অফিসের কোষাধ্যক্ষ। শনিবার রাতে ঘাটাল ব্লকের বিডিও সঞ্জয় বিডিও এই বিষয়ে ঘাটাল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই রবিবার ভোরে চন্দ্রকোনা রোডের সাতবাঁকুড়ার বাড়ি থেকে ভরত দাস অধিকারী নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতকে রবিবার ঘাটাল আদালতে তোলা হলে বিচারক ছ’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:১২
Share:

থানায় ভরত দাস অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।

সরকারি এক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেফতার হলেন ঘাটাল ব্লক অফিসের কোষাধ্যক্ষ। শনিবার রাতে ঘাটাল ব্লকের বিডিও সঞ্জয় বিডিও এই বিষয়ে ঘাটাল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই রবিবার ভোরে চন্দ্রকোনা রোডের সাতবাঁকুড়ার বাড়ি থেকে ভরত দাস অধিকারী নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতকে রবিবার ঘাটাল আদালতে তোলা হলে বিচারক ছ’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

Advertisement

ঘাটাল ব্লক সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পঁয়ত্রিশের ভরতবাবু ২০০৬ সালে ঘাটাল ব্লক অফিসে কোষাধ্যক্ষ পদে যোগ দেন। সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের সেচ ও জলপথ বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন অগভীর নলকূপ ও জলত্তোলন প্রকল্পে(আরএলআই) বহু বছর ধরেই কৃষকদের চাষের জন্য সেচের ব্যবস্থা রয়েছে। ঘাটাল ব্লকে এই ধরনের ২৫টি সরকারি প্রকল্প রয়েছে। ব্লকের ১২টি পঞ্চায়েতে যে চাষিরা এই প্রকল্পে সরকারি ভাবে সেচের সুবিধা নিয়ে চাষ করেন, তাঁদের জল কর দিতে হয়। সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মীরা বিভিন্ন মরসুমে সেচের পর চাষিদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অঙ্কের কর বাবদ টাকা সংগ্রহ করে ব্লকের কোষাধ্যক্ষের কাছে জমা দেন। কোষাধ্যক্ষ নিয়ম মেনে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে জমা দিয়ে দিলে স্বাভাবিক ভাবেই সরকারি ওই টাকা ব্যাঙ্কে জমা পড়লেই তা ঘাটাল ট্রেজারি অফিসে সরাসরি চলে যাওয়ার কথা।

কিন্তু ব্লক সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ আট বছর ঘাটাল ব্লকে কোনও অডিট হয়নি। সম্প্রতি ঘাটাল ব্লকে অডিটে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের হিসাব ঠিকঠাক থাকলেও এই ক্ষেত্রে গরমিল পান অডিট টিমের সদস্যরা। দেখা যায়, ২০০৬ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রাথমিক ভাবে ৯২ লক্ষ ৮২ হাজার টাকার গরমিল রয়েছে। ঘাটাল ব্লকের বিডিও সঞ্জয় পণ্ডিতের অভিযোগ, “প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে ওই টাকা বেশিরভাগ জমা পড়েনি। প্রথমে অডিটে বিষয়টি ধরা পড়ে। তারপরই থানায় এ বিষয়ে মামলা দায়ের করা হয়।” প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, অভিযুক্ত ভরতবাবু নিজেই একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের স্ট্যাম্প তৈরি করেছিলেন। কিন্তু তিন বছর অন্তর যে অডিট রিপোর্ট তৈরির কথা, এ ক্ষেত্রে সেটা হতে আট বছর লাগল কেন? ঘাটালের বিডিও সঞ্জয় পণ্ডিতের কথায়, “এটা ঠিক, তিন বছর অন্তর ব্লকের অডিট রিপোর্ট তৈরির কথা। কিন্তু এখানে কেন সেটা হয়নি তা বলতে পারব না।”

Advertisement

সরকারি এত টাকা আত্মসাতের খবর চাউর হতেই ঘাটাল ব্লক জুড়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশ প্রসাদ মীনা বলেন, “বিডিও-র অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” জেলার পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষও বলেন, “অভিযুক্ত কী ভাবে সরকারের এত লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করলেন তার জন্য জেরা শুরু করা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন