কাঁসাই থেকে বালি তোলার প্রতিবাদ, অবরোধ

কাঁসাই নদীর খাত থেকে বালি তোলার প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করল স্থানীয় বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার সকালে পাঁশকুড়ার মাইশোরা গ্রামের কাছে ‘জমি বাঁচাও জনসাধারণের কমিটি’র ব্যানারে প্রায় তিনশো স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামসুন্দরপুর পাটনা বাজার থেকে পাঁশকুড়া বাজারগামী কাঁসাই নদী বাঁধের উপর গ্রামীণ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৩৮
Share:

অবরোধে স্থানীয়রা। —নিজস্ব চিত্র।

কাঁসাই নদীর খাত থেকে বালি তোলার প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করল স্থানীয় বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার সকালে পাঁশকুড়ার মাইশোরা গ্রামের কাছে ‘জমি বাঁচাও জনসাধারণের কমিটি’র ব্যানারে প্রায় তিনশো স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামসুন্দরপুর পাটনা বাজার থেকে পাঁশকুড়া বাজারগামী কাঁসাই নদী বাঁধের উপর গ্রামীণ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। এ দিন সকাল ৭টা থেকে অবরোধ শুরু হয়। ঘণ্টা দু’য়েক পর সকাল ৯টা নাগাদ অবরোধ উঠে যায়। অবরোধের জেরে আটকে পড়ে ওই সড়কে যাতায়াতকারী ট্রেকার, মালবাহী ট্রাক। দুর্ভোগে পড়েন নিত্যযাত্রীরাও।

Advertisement

অবরোধ চলাকালীন শ্যামসুন্দরপুর পাটনার দিক থেকে একটি বালি বোঝাই লরি ওই রাস্তা দিয়ে পাঁশকুড়ার দিকে যাওয়ার পথে অবরোধকারীরা ওই লরিটি আটক করে। লরির ভিতরে বসে থাকা অশোক ছাতিক নামে এক বালি সরবরাহকারীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এ দিকে মাইশোরা এলাকায় কাঁসাই নদীর বালি তোলা নিয়ে ওই অবরোধের ঘটনা তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের জের বলেই অভিযোগ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাইশোরা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার শ্যামসুন্দর পাটনা গ্রামে সিদ্ধিনাথ মহাবিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ওই নতুন কলেজ ভবন নির্মাণের জন্য একটি ঠিকাদার সংস্থা প্রয়োজনীয় বালি মাইশোরার কাছে কাঁসাই নদীর খাত থেকে লরি করে তুলে নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু ওই বালি তোলা ও লরি যাতায়াতের ফলে কাঁসাই নদীর ওই এলাকায় নদী বাঁধের রাস্তা ও চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে এ দিন বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। এই অবরোধে মাইশোরা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপ-প্রধান কুরবান শাহের সমর্থন রয়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

উল্লেখ্য, কলেজ ভবন নির্মাণের কাজে যুক্ত ওই ঠিকাদারের কাছে তৃণমূল নেতা কুরবান শাহ ৩০ লক্ষ টাকা চেয়ে হুমকি দিয়েছে বলে সম্প্রতি পাঁশকুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। তারপরে কাঁসাই নদীর খাত থেকে অতিরিক্ত বালি তোলা হচ্ছে ও বালির লরি যাতায়াতের জেরে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে ঠিকাদার সংস্থার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন কুরবান শাহ। এ দিন মাইশোরা এলাকার বাসিন্দাদের অবরোধকে সমর্থন করে কুরবান শাহের অভিযোগ, “কলেজ ভবন নির্মাণের জন্য বালি তোলার কাজের আমরা বিরোধী নই। কিন্তু কলেজ ভবনের নাম করে ওই ঠিকাদার সংস্থা কাঁসাই নদী থেকে অতিরিক্ত বালি তুলে লরিতে করে অন্যত্র বিক্রি করছে। এর ফলে এলাকার চাষের জমি ও নদী বাঁধের ক্ষতি হচ্ছে। এর প্রতিবাদেই এলাকার বাসিন্দারা এ দিন বিক্ষোভ দেখিয়েছে। এলাকার বাসিন্দা হিসেবে এ দিনের কর্মসূচিকে সমর্থন করেছি।”

কুরবানের আরও অভিযোগ, “কাঁসাই নদীর খাত থেকে অতিরিক্ত বালি তোলার কাজে ঠিকাদারকে মদত দিচ্ছে পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সুজিত রায়।” পাঁশকুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা সুজিত রায় কুরবানের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “নদীখাত থেকে বালি তোলার কাজে পঞ্চায়েত সমিতির কোনও ভূমিকা নেই। আর এখন বালি তোলার কাজ বন্ধ। তাই ঠিকাদারকে বালি তোলার কাজে মদত দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন