মাধ্যমিকের আর দশ দিনও বাকি নেই। বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও কম ভোল্টেজে সমস্যায় পরীক্ষার্থীরা। সমস্যা সামাল দিতে সন্ধ্যায় বোরো চাষে পাম্পসেট বন্ধ রাখতে প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিদ্যুৎ দফতর। নারায়ণগড় ব্লকের বেলদা, খাকুড়দা, ঠাকুরচক, আসন্দা এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, বিদ্যুৎ দফতরে অভিযোগ জানানো হলেও কাজ হয়নি। যদিও বিদ্যুৎ দফতরের দাবি, বোরো চাষের মরসুমে বাড়তি বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে গত শনিবার পদক্ষেপ করা হয়েছে। তবে তাতেও অবস্থার কোনও হেরফের হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। সম্প্রতি স্থানীয় বাসিন্দারা বিদ্যুৎ দফতরের অফিস ঘেরাও করে। তারপরেই টনক নড়ে বিদ্যুৎ দফতরের।
জানুয়ারি মাস থেকেই নারায়ণগড়ে বোরো চাষে পাম্পসেটের ব্যবহার বেড়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদাও। ব্লকের নারায়ণগড় ও বেলদা এলাকায় বিদ্যুতের সাব-স্টেশন রয়েছে। নারায়ণগড়ে সমস্যা নেই। তবে অতিরিক্ত বিদ্যুতের চাহিদা সামাল দিতে না পারায় বেলদা এলাকায় কম ভোল্টেজের সমস্যায় জেরবার স্থানীয় বাসিন্দারা। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে খবর, ডিসেম্বর থেকে চাষের পাম্পসেটের জন্য বেলদা সাব-স্টেশন এলাকায় প্রায় দু’শোটি নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ফলে চাপ বাড়ায় প্রায়ই লোডশেডিং হচ্ছে। মুলকুড়িয়া গ্রামের চাষি বিষ্ণুপদ জানা বলেন, “চাষের জন্য পাম্পসেট ব্যবহার করতেই হবে। কম ভোল্টেজের জন্য সমস্যা হচ্ছে।”
বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলদা সাব-স্টেশনে আগে এগরা থেকে ৩৩ হাজার কিলোভোল্টের বিদ্যুৎ আসত। পরে তা কমে ২৩ হাজার কিলোভোল্ট হওয়ায় সমস্যা বাড়ে। গত শনিবার বেলদা সাব স্টেশনে এগরার সঙ্গে পিংলা থেকেও ৩৩ হাজার কিলোভোল্ট বিদ্যুতের সংস্থান করা হয়। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তার পরেও পরিস্থিতির হেরফের হয়নি। বেলদার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ইন্দ্রনীল বসাক, খাকুড়দার সংলাপ মল্লিকদের কথায়, “সন্ধ্যায় পড়তে বসলে কম ভোল্টেজের জন্য একটা টিউব লাইটও জ্বলতে চাইছে না। মাঝে-মধ্যে লোডশেডিংও হচ্ছে। এ ভাবে পড়াশুনোয় ব্যাঘাত ঘটছে।”
বিদ্যুৎ দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “সন্ধ্যা হলেই প্রতিটি এলাকায় সেচের কাজের জন্য পাম্পসেট চলছে। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ চুরিও অব্যাহত। ফলে সমস্যা রয়েছে।” দফতরের খড়্গপুরের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার কমলকুমার মাইতি বলেন, “কম ভোল্টেজের সমস্যা হচ্ছিল। গত শনিবারে তা কমানো গিয়েছে। তবে সন্ধ্যায় চাষিদের অসচেতনতার দরুন কিছু এলাকায় ব্যাপক হারে পাম্পসেট চলছে।” তিনি জানান, মাধ্যমিক পরীক্ষা পর্যন্ত বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত পাম্পসেট বন্ধ রাখার জন্য আবেদন জানিয়ে পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রচার করা হবে।