চন্দ্রকোনা রোডের ডিগ্রিতে এম আর বাঙুর টিবি হাসপাতালের গাছ চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা অরুণ দাসকে বহিষ্কার করল দল। একই সঙ্গে অরুণের ভাই তথা তৃণমূলের ডিগ্রি বুথ কমিটির সভাপতি বরুণ দাসকে এক বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। অরুণবাবু দলের সিদ্ধান্তের কথা স্বীকার করলেও বহিষ্কার প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
শুক্রবার সকালে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে ব্লক নেতৃত্ব দলের ওই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন। তৃণমূলের গড়বেতা ৩ ব্লক-সভাপতি নিমাই বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অরুণের বিরুদ্ধে দল বিরোধী নানা কাজের অভিযোগ ছিল। দলীয় তদন্তে প্রাথমিক ভাবে এর প্রমাণও মিলেছে। তাই অরুণকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” সম্প্রতি চন্দ্রকোনা রোডের ডিগ্রিতে সরকারি ওই হাসপাতালে গাছ চুরি করে পাচারের ঘটনা সামনে আসে। পাচারের সময়ে চোরাই কাঠ হাতে নাতে ধরেও ফেলেন স্থানীয়রা। ঘটনায় দলেরই একাংশ হাসপাতালের সুপার এবং তৃণমূলের ওই নেতা ও তাঁর ভাইকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। পরে চন্দ্রকোনা রোডের কাঠ মিল এবং ওই এলাকারই একটি ফাঁকা জায়গা থেকে সেগুন, আম, জাম-সহ বহু গাছ উদ্ধার হয়।
বন দফতর অভিযোগ পেয়ে হাসপাতালের সুপার ও অরুণ দাসের বিরুদ্ধে বন আইন অনুযায়ী মামলা করে। গোটা বিষয়টি স্বাস্থ্যভবনেও জানানো হয়। উল্লেখ্য, জেলার ওই টিবি হাসপাতালটি সরাসরি স্বাস্থ্যভবন দেখভাল করে। বন দফতরের ডিএফও (মেদিনীপুর বিভাগ) বিজয় শালিমঠ বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে দফতরের অনুমতি না নিয়ে গাছ কাটা এবং তা পাচারের প্রমাণ মিলেছে। আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
গড়বেতা, গোয়ালতোড়, শালবনি-সহ জঙ্গলমহলের নানা বনাঞ্চলে মূল্যবান গাছ এমনকী আড়াবাড়ি জঙ্গল থেকে চন্দন গাছ কেটে পাচার করার ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু অভিযোগ, বন দফতরের এক শ্রেণির কর্মী এবং শাসক দলের একাংশের মদতে জঙ্গল সাফাই চলছিলই। অন্য দিকে, দুর্নীতির অভিযোগে বহিষ্কৃত হয়েছেন আমশোল পঞ্চায়েতের বলরামপুর বুথের তৃণমূল সদস্য ফরিদ খান ওরফে হেলা এবং মাসুব চৌধুরীও। গড়বেতা ৩ ব্লক-সভাপতি নিমাই বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই দুই নেতার বিরুদ্ধেও তদন্ত হয়। অভিযোগের সত্যতা মেলায় বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত হয়।”