জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুদয়নে উদ্যোগ

ছাত্রদের স্কুলমুখী করতে মিড ডে মিল চালু হয়েছে অনেক আগেই। তাতে যে ছাত্র সংখ্যা বেড়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ বার প্রবল গরমে প্রশাসনের মনে হয়েছে, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সংযোগেরও প্রয়োজন রয়েছে। তারই জেরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ৬ মাসের মধ্যে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুদয়নের ব্যবস্থা করা হবে।

Advertisement

সুমন ঘোষ

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৪ ০১:১৪
Share:

ছাত্রদের স্কুলমুখী করতে মিড ডে মিল চালু হয়েছে অনেক আগেই। তাতে যে ছাত্র সংখ্যা বেড়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ বার প্রবল গরমে প্রশাসনের মনে হয়েছে, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সংযোগেরও প্রয়োজন রয়েছে। তারই জেরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ৬ মাসের মধ্যে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুদয়নের ব্যবস্থা করা হবে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ বলেন, “ভাবতেই অবাক লাগছে জেলার অর্ধেকেরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎহীন। এই কষ্টে ক্লাসে বসে থাকা যায়! তাই প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা করেছি। ৬ মাসের মধ্যে সেই কাজ শেষ করতে চাই।”

Advertisement

প্রতি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দিতে সরকারি প্রকল্প রয়েছে। সেই কাজ শুরু হলেও এখনও শেষ হয়নি। তবে শুধু বাড়িতে বিদ্যুৎ থাকলেই তো হবে না। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা স্কুলে গিয়ে কী ভাবে গরমে ক্লাস করবে। শিক্ষকেরাই বা কী ভা বে পড়াবেন। এমনিতেই এক একটি শ্রেণিকক্ষে অনেক ছাত্রছাত্রী বসে। আর এপ্রিল মাস থেকে যে প্রবল দাবদাহ শুরু হয় তা কহতব্য নয়। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্লি সেন্টিগ্রেডের থেকে নামতেই চায় না। বরং কখনও তা বেড়ে সাড়ে ৪২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডেও পৌঁছায়। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল। অভিভাবকেরাও বিরক্ত। ক্ষোভ প্রশমনে মাঝে স্কুল কর্তৃপক্ষ মর্নিং স্কুলের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু তাতেও সমস্যা মেটেনি। তাপমাত্রা চরম আকার নেওয়ায় ফের রাজ্য সরকার আরও দশ দিন ছুটি ঘোষণা করেছে। কিন্তু তাই বলে স্কুল তো অনির্দিষ্ট কাল ছুটি থাকতে পারে না। তাহলে পাঠক্রম শেষ করা তো কঠিন হবে। এই পরিস্থিতিতে প্রতি স্কুলে বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবস্থা করতে গিয়ে দেখা যায়, জেলার বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই বিদ্যুৎহীন।

জেলা পরিষদ বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে তড়িঘড়ি এ ব্যাপারে বৈঠক ডাকেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যাম পাত্র, বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি। শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষের কাছ থেকে সভাধিপতি বিদ্যুৎহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা চান। তা দেখেই সভাধিপতির চক্ষু চড়কগাছ। পরিসংখ্যান দেখা গিয়েছে, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, শিশু শিক্ষা কেন্দ্র, মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র মিলিয়ে জেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৮৪০২টি। তার মধ্যে ৫৭১৪টি প্রতিষ্ঠানই বিদ্যুৎহীন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, জেলার প্রতিটি স্কুলে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেবে বিদ্যুৎ দফতর। আর যে সব প্রতিষ্ঠানে তিনটি বা তার কম শ্রেণিকক্ষ সেই সব প্রতিষ্ঠানকে ৫ হাজার টাকা ও তিনটির বেশি শ্রেণিকক্ষযুক্ত স্কুলকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে সর্বশিক্ষাঅভিযান প্রকল্প থেকে। তার সঙ্গে স্কুলের কিছু তহবিল যোগ করে ওয়্যারিংয়ের কাজ করবে স্কুল। পরবর্তীকালে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, ব্যাঙ্ক, বিভিন্ন মানুষের কাছেও সাহায্যের আবেদন জানানো হবে যাতে কেউ স্কুলে আলো, বৈদ্যুতিন পাখা দান করেন।

Advertisement

জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহের কথায়, “সরকারিভাবে প্রতিটি স্কুলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু ওয়্যারিং করে আলো, পাখা দেওয়া কঠিন। এক্ষেত্রে সহৃদয় মানুষের সাহায্যও জরুরি। আমরা সেই আবেদন রাখব।” এমন উদ্যোগে খুশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ছাত্রছাত্রীরাও। অপেক্ষা এখন কত তাড়াতাড়ি স্কুলে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement